ঢাকা , বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌদি আরবে বসে ইমেইলে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন কবির ও দীন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ইমেইল দাতা ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কবির হোসেন ও সহযোগী হুমকিদাতা দীন ইসলাম।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ২০২৩ সালের এপ্রিলে বিদেশ সফরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অফিসিয়াল ইমেইলে ইংরেজি ও বাংলায় একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ইমেইল (realmec55ksa@gmail.com) আসে।

ইমেলে হুমকির বার্তায় বলা হয়, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানানো হয়। বিদেশ সফরকালেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

ওই ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত ও সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রদূত ও সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মাধ্যমে সৌদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়। এরপর দুজনকে শনাক্ত করে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠানো হলে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে (dmpmediacell@gmail.com) realmec55ksa@gmail.com ইমেইল থেকে একটি হুমকি বার্তা সম্বলিত মেইল আসে। ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ‘Prime Minister Sheikh Hasina will be shot at 4 am on April 27. Bangladesh police do not have the power to prevent this attack. ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর, মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল’ এবং ইমেইলের বডিতে একই হুমকি বার্তা লেখা ছিল।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি বার্তামূলক ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি চৌকস টিম গোপনীয় অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করে এবং হুমকিদাতার নাম দীন ইসলাম ওরফে বাদল বলে নিশ্চিত হয়। হুমকিদাতার ইন্টারনেট অ্যাকটিভিটি (আইপি) পর্যালোচনা করে তার অবস্থান সৌদি আরবে বলে তদন্তে নিশ্চিত হয় তদন্ত টিম।

একই ঘটনায় ২০ এপ্রিল ডিএমপি মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা করে সিটিটিসি। মামলা নম্বর ১৫।

তিনি আরও বলেন, একই তারিখে মামলার আসামি এবং সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি-ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সঙ্গে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেল ব্যবহার করে কার্যক্রম গ্রহণ করে সিটিটিসি। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর এবং সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত শেষে ২৯ জানুয়ারি সৌদি আরব সরকার প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা দীন ইসলামকে তার সহযোগী কবির হোসেনসহ আটক করে বাংলাদেশে পাঠালে তাদের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১০ বছর ধরে সৌদিতে থাকা কবির হোসেন সৌদি যুবদলের একাংশের সভাপতি। সৌদি যুবদলের নেতা দীন ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদি আরবে বসে ইমেইলে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন কবির ও দীন

আপডেট টাইম : ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ইমেইল দাতা ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কবির হোসেন ও সহযোগী হুমকিদাতা দীন ইসলাম।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ২০২৩ সালের এপ্রিলে বিদেশ সফরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অফিসিয়াল ইমেইলে ইংরেজি ও বাংলায় একটি হুমকিবার্তা সম্বলিত ইমেইল (realmec55ksa@gmail.com) আসে।

ইমেলে হুমকির বার্তায় বলা হয়, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানানো হয়। বিদেশ সফরকালেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

ওই ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত ও সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রদূত ও সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর মাধ্যমে সৌদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়। এরপর দুজনকে শনাক্ত করে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠানো হলে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছরের ১৭ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে (dmpmediacell@gmail.com) realmec55ksa@gmail.com ইমেইল থেকে একটি হুমকি বার্তা সম্বলিত মেইল আসে। ইমেইলের সাবজেক্ট লাইনে ‘Prime Minister Sheikh Hasina will be shot at 4 am on April 27. Bangladesh police do not have the power to prevent this attack. ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর ৪টায় গুলি করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এই হামলা ঠেকানোর, মহারণের সাক্ষী হবে ২৭ এপ্রিল’ এবং ইমেইলের বডিতে একই হুমকি বার্তা লেখা ছিল।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি বার্তামূলক ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি চৌকস টিম গোপনীয় অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করে এবং হুমকিদাতার নাম দীন ইসলাম ওরফে বাদল বলে নিশ্চিত হয়। হুমকিদাতার ইন্টারনেট অ্যাকটিভিটি (আইপি) পর্যালোচনা করে তার অবস্থান সৌদি আরবে বলে তদন্তে নিশ্চিত হয় তদন্ত টিম।

একই ঘটনায় ২০ এপ্রিল ডিএমপি মিডিয়া পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় মামলা করে সিটিটিসি। মামলা নম্বর ১৫।

তিনি আরও বলেন, একই তারিখে মামলার আসামি এবং সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এনসিবি-ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সঙ্গে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেল ব্যবহার করে কার্যক্রম গ্রহণ করে সিটিটিসি। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর এবং সৌদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত শেষে ২৯ জানুয়ারি সৌদি আরব সরকার প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা দীন ইসলামকে তার সহযোগী কবির হোসেনসহ আটক করে বাংলাদেশে পাঠালে তাদের হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১০ বছর ধরে সৌদিতে থাকা কবির হোসেন সৌদি যুবদলের একাংশের সভাপতি। সৌদি যুবদলের নেতা দীন ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।