বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ হবিগঞ্জের বাহুবলে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চাঞ্চল্যকর ৪ শিশু হত্যার অভিযোগে ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর দুই আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আলোচিত এ মামলার ৮ আসামির মধ্যে ৩ জনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় অভিযুক্ত ৫ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় আলোচিত এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন বিচারক। মঙ্গলবার ৪ শিশু হত্যা মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ বুধবার দিন ঠিক করেন আদালত।
২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় হবিগঞ্জের বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।
মনির সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি, তার দুই চাচাত ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। আর তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র।
১৭ ফেব্রুয়ারি সুন্দ্রাটিকি গ্রামের কাজল মিয়া নদীর পাশে মাটি কাটতে গিয়ে বালুচাপা অবস্থায় ৪ শিশুর মরদেহ দেখতে পান। পরে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে তাদের দাফন করা হয়।
ওই সময়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুল আলী বাঘাল, তার দুই ছেলে জুয়েল ও রুবেল, একই গ্রামের আজিজুর রহমান আরজু, শাহেদ আলী, সালেহ এবং বশিরসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ৫ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোকতাদির হোসেন সিনিয়র বিচারিক হাকিম কাউছার আলমের আদালতে ৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন।
২৮ জুন দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিরণ শংকর হালদার অভিযোগপত্র আমলে নেন।
এর মধ্যে গ্রেফতার পরিকল্পনাকারী আব্দুল আলী বাঘাল, তার দুই ছেলে জুয়েল ও রুবেল, একই গ্রামের আজিজুর রহমান আরজু ও শাহেদ আলী কারাগারে রয়েছেন।
পলাতক ৩ আসামি হলেন আব্দুল আলী বাঘালের ভাতিজা বিল্লাল হোসেন, উস্তার মিয়া ও বাবুল আহমেদ। মামলার অন্যতম আসামি অটোরিকশা চালক বাচ্চু র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আলোচিত ৪ শিশু হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৫ মার্চ মামলাটি সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।