সরকারি চাকরি করা সত্ত্বেও তথ্য গোপন করে বেসরকারি চাকরি দেখিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সাধারণ পাসপোর্ট তৈরি এবং অপরাধমূলক অসদাচরণ ও প্রতারণার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম এ মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর-১০। বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
আক্তার হোসেন বলেছেন, বেনজীর আহমেদ সরকারি পাসপোর্ট থাকার পরেও তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে আরেকটি পাসপোর্ট তৈরি করে প্রতারণা করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক আইজিপিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি জানান, অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে আসামিরা সাধারণ ই-পাসপোর্ট নিয়ে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অর্ডার, ১৯৭৩ এর ১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
বেনজীর আহমেদ ছাড়াও মামলার এজাহারে যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন: বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আগারগাঁওয়ের সাবেক পরিচালক মো. ফজলুল হক, সাবেক পরিচালক মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, টেকনিক্যাল ম্যানেজার মোছা. সাহেনা হক ও পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঢাকার সাবেক ডিআইজি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার, র্যাবের সাবেক ডিজি ও সাবেক আইজিপি হিসেবে বেনজীর আহমেদ কর্মরত থাকাবস্থায় পাসপোর্টের আবেদনপত্রের ‘profession’ ক্রমিকে সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও জালিয়াতি-প্রতারণা, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ‘private service’ উল্লেখ করে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় অনাপত্তিপত্র (NOC) ব্যতীত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি)/ই-পাসপোর্টের (ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট) জন্য আবেদন করেন।
অন্যান্য আসামি (২) মো. ফজলুল হক, সাবেক পরিচালক, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭; (৩) মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, সাবেক পরিচালক, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭; (৪) মোছা. সাহেনা হক, টেকনিক্যাল ম্যানেজার, (ভেরিডোস জিএম বিএইচ), জার্মান কোম্পানি, ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭ এবং (৫) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিচালক, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭ কর্তৃক আসামি বেনজীর আহমেদের দাপ্তরিক পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞাত থেকেও বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ (NOC) সংগ্রহ না করে/যাচাই না করে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে আসামিরা সাধারণ ই-পাসপোর্ট ইস্যু করে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অর্ডার, ১৯৭৩ এর ১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।