ঢাকা , শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৌফা-তহুরাকে আলাদা করতে অস্ত্রোপচার শুরু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশু তৌফা ও তহুরাকে পৃথক করতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ১০ মাস প্রাথমিক চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণে রাখার পর মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাদের পৃথক করতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়।

শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজলের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজল বলেন, আমরা শিশু দু’টিকে পৃথকীকরণের কাজ করবো। পরে আলাদা দু’টি অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) গিয়ে আবার অপারেশন করা হবে। এ কাজে ১৬-১৭ জনের একটি টিম থাকবে।

অপারেশন কত সময় লাগতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আশরাফুল বলেন, দু’টি অপারেশনে সব মিলিয়ে ৬-৭ ঘণ্টা লাগবে।

তিনি আরো বলেন, প্রথম অপারেশন করবেন সার্জারি বিভাগে। দ্বিতীয়টি করবেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা। পুরো অপারেশন দু’টি জটিল। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। যাতে শিশু দু’টিকে সুস্থ করে তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। যেমনটা আমরা তাদের গতকালও বলেছি। তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম, একই সঙ্গে বলেছিলাম আমরা প্রস্তুত আছি। দোয়া করবেন যাতে সব আশঙ্কা কাটিয়ে আমরা যেন সফল হতে পারি।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই আলাদা। শুধু প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি। গত বছরের ৭ অক্টোবর নয় দিন বয়সে জোড়া শিশু দুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে তাদেরকে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে জোড়া শিশু দুটির প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা হয়। তখন ছোট একটি অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়খানার রাস্তা আলাদা করে দেওয়া হয়।

শিশু দুটির রক্তে সেপটিসেমিয়া ও ওজন ছিল সাড়ে ৪ কেজি, যা অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত ছিল না। এখন জোড়া শিশু ২টির ওজন ১০ কেজি। তাদেরকে অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয় বলে চিকিৎসকরা জানান।

অস্ত্রোপচারের আগে সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সম্মেলন কক্ষে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে তৌফা ও তহুরার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

তৌফা-তহুরাকে আলাদা করতে অস্ত্রোপচার শুরু

আপডেট টাইম : ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশু তৌফা ও তহুরাকে পৃথক করতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ১০ মাস প্রাথমিক চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণে রাখার পর মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাদের পৃথক করতে অস্ত্রোপচার শুরু হয়।

শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজলের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড অস্ত্রোপচারে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজল বলেন, আমরা শিশু দু’টিকে পৃথকীকরণের কাজ করবো। পরে আলাদা দু’টি অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) গিয়ে আবার অপারেশন করা হবে। এ কাজে ১৬-১৭ জনের একটি টিম থাকবে।

অপারেশন কত সময় লাগতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আশরাফুল বলেন, দু’টি অপারেশনে সব মিলিয়ে ৬-৭ ঘণ্টা লাগবে।

তিনি আরো বলেন, প্রথম অপারেশন করবেন সার্জারি বিভাগে। দ্বিতীয়টি করবেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা। পুরো অপারেশন দু’টি জটিল। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। যাতে শিশু দু’টিকে সুস্থ করে তাদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারি। যেমনটা আমরা তাদের গতকালও বলেছি। তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম, একই সঙ্গে বলেছিলাম আমরা প্রস্তুত আছি। দোয়া করবেন যাতে সব আশঙ্কা কাটিয়ে আমরা যেন সফল হতে পারি।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই আলাদা। শুধু প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি। গত বছরের ৭ অক্টোবর নয় দিন বয়সে জোড়া শিশু দুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে তাদেরকে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে জোড়া শিশু দুটির প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা হয়। তখন ছোট একটি অপারেশনের মাধ্যমে তাদের পায়খানার রাস্তা আলাদা করে দেওয়া হয়।

শিশু দুটির রক্তে সেপটিসেমিয়া ও ওজন ছিল সাড়ে ৪ কেজি, যা অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত ছিল না। এখন জোড়া শিশু ২টির ওজন ১০ কেজি। তাদেরকে অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয় বলে চিকিৎসকরা জানান।

অস্ত্রোপচারের আগে সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সম্মেলন কক্ষে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে তৌফা ও তহুরার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।