ঢাকা , শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এই প্রথমবার জন্মদিনে গান লিখবো

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  দেশীয় বাংলা গানের স্বনামধন্য গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জী। অসাধারণ লেখনীর বাইরেও যার কোমল, সহজ, সরল ব্যক্তিত্ব সবাইকে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ করে। এরই মধ্যে অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। তার কথামালায় কিংবদন্তি থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের গান প্রাণ পেয়েছে। এখনো বাংলা গানকে ভালোবেসে লিখে যাচ্ছেন আপন গতিতে। আজ জনপ্রিয় এই গীতিকবির জন্মদিন। জন্মদিন পালন, গানের অবস্থা, নিজের ব্যস্ততাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন শহিদুল্লাহ ফরায়জী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন
জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনাকে। কেমন আছেন?
-অনেক ধন্যবাদ। ভালো আছি। সুন্দরভাবে বেঁচে আছি।
জন্মদিনেতো আপনার ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা প্রতিবারই অন্যরকম আয়োজনে উদযাপন করে আসছেন। আজকে কি পরিকল্পনা রয়েছে?
-গত দুই-এক বছর ধরেই অন্যরকম একটা উপলব্ধি কাজ করছে আমার মধ্যে। জন্মদিনটা আসলে আর তেমনভাবে উদযাপন করার ইচ্ছে জাগে না। এবারও ঠিক একই রকম উপলব্ধি আমার। এ দিনে তেমন কোনো আয়োজন থাকবে না। একেবারেই নীরবে-নিভৃতে এবারের জন্মদিনটি পালন করবো।
কিন্তু সেটা কেনো? বিশেষ কোনো কারণ আছে?
-ঐ যে বললাম উপলব্ধি। এখন মনে হচ্ছে জন্মদিন উদযাপন করার দরকার নেই। বরং, মানুষের ভালোবাসা নিয়ে নীরবে নিভৃতে পালন করাই শ্রেয়। তবে তার মানে এই না যে জন্মদিনের গুরুত্ব নেই। জন্ম হয়েছে বলেইতো মানুষ হিসেবে জন্ম নেবার উপলব্ধি করতে পারি। ভাবতে পারি আমি মানুষ, এ দেশের নাগরিক। জন্ম হয়েছে বলেইতো মানুষ, প্রকৃতি ও সৃষ্টিকর্তাকে বোঝার চেষ্টা করতে পারছি। সুতরাং জন্মদিন তাপর্যপূর্ণ তো বটেই। উদযাপন না করলেও জন্মদিনে এবার গান লিখবো বলে ঠিক করেছি। এ কাজটি আমি আগে কখনও করিনি। তবে এই প্রথমবার জন্মদিনে গান লিখবো।
এ পর্যায়ে এসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যাপারে কিছু বলবেন?
– আমার এই জীবনে গান লিখে মানুষের ব্যাপক ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মাঝে মধ্যেতো মনে হয় আমার এ জীবনই বৃথা। কোনো মানেই খুঁজে পাই না। তবে মানুষের ভালোবাসা পেলে মনে হয় জীবনটা সুন্দর। সান্ত্বনা পাই। গান লেখাটা আমার কিছুটা হলেও কাজে লেগেছে বলে মনে হয়। কারণ মানুষের ভালোবাসা হলো উচ্চতম মর্যাদা। এর চেয়ে বড় কিছু নেই।
আপনার এখনকার ব্যস্ততা কি নিয়ে?
-আমি একটি উপন্যাস লিখছি। এটা এখনও কাউকে বলিনি। এই প্রথম বললাম। জীবনে একটাই আসলে উপন্যাস লিখবো। সেটার কাজ শুরু করে দিয়েছি। আর গানতো নেশা। সেটা তো চলছেই। অডিও এবং সিনেমার গান নিয়মিত লিখছি।
এই সময়ের গানের অবস্থা কেমন মনে হয় আপনার কাছে?
-অনেক ভালো সুরকার ও গীতিকার আমাদের সংগীতাঙ্গনে রয়েছে। তারা ভালো কাজ করছে। শিল্পীও অনেক মেধাবী রয়েছে। তবে ভালোর চেয়ে নিম্নগানের গানগুলোর প্রচারণা বেশি হচ্ছে। এ কারণে মনে হচ্ছে ভালো গান হচ্ছে না। কিন্তু এটা সঠিক নয়। আমার মনে হয় ভালো গানের প্রচারণাটা দরকার। এটা সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই করতে হবে। আর সব কিছুতেই অস্থিরতা বেড়ে গেছে অনেক। গানের ক্ষেত্রে আসলে অস্থিরতা চলে না। অন্যদিকে আমরা বড্ড বেশি তারকানির্ভর হয়ে গেছি। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নতুনদের নিয়ে কাজ করা এখন জরুরি। আমি নিজেও নতুনদের নিয়ে সামনে কাজ করবো। নতুন ও মেধাবীদের মধ্যে অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এর মধ্যে একজন হলেন রাজীব মাহমুদ। ভারত থেকে ক্লাসিক মিউজিকে মাস্টার্স করে এসেছেন তিনি। তার কাজ করছি। এছাড়াও আরো কিছু নতুন প্রতিভা পেয়েছি আমি। আমার মনে হয় চলতি ও আগামী বছর বেশ কিছু সম্ভাবনাময় নতুন শিল্পী নিয়ে আসতে পারবো। তারা সামনে খুব ভালো কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

এই প্রথমবার জন্মদিনে গান লিখবো

আপডেট টাইম : ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  দেশীয় বাংলা গানের স্বনামধন্য গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জী। অসাধারণ লেখনীর বাইরেও যার কোমল, সহজ, সরল ব্যক্তিত্ব সবাইকে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ করে। এরই মধ্যে অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। তার কথামালায় কিংবদন্তি থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের গান প্রাণ পেয়েছে। এখনো বাংলা গানকে ভালোবেসে লিখে যাচ্ছেন আপন গতিতে। আজ জনপ্রিয় এই গীতিকবির জন্মদিন। জন্মদিন পালন, গানের অবস্থা, নিজের ব্যস্ততাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন শহিদুল্লাহ ফরায়জী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন
জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনাকে। কেমন আছেন?
-অনেক ধন্যবাদ। ভালো আছি। সুন্দরভাবে বেঁচে আছি।
জন্মদিনেতো আপনার ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা প্রতিবারই অন্যরকম আয়োজনে উদযাপন করে আসছেন। আজকে কি পরিকল্পনা রয়েছে?
-গত দুই-এক বছর ধরেই অন্যরকম একটা উপলব্ধি কাজ করছে আমার মধ্যে। জন্মদিনটা আসলে আর তেমনভাবে উদযাপন করার ইচ্ছে জাগে না। এবারও ঠিক একই রকম উপলব্ধি আমার। এ দিনে তেমন কোনো আয়োজন থাকবে না। একেবারেই নীরবে-নিভৃতে এবারের জন্মদিনটি পালন করবো।
কিন্তু সেটা কেনো? বিশেষ কোনো কারণ আছে?
-ঐ যে বললাম উপলব্ধি। এখন মনে হচ্ছে জন্মদিন উদযাপন করার দরকার নেই। বরং, মানুষের ভালোবাসা নিয়ে নীরবে নিভৃতে পালন করাই শ্রেয়। তবে তার মানে এই না যে জন্মদিনের গুরুত্ব নেই। জন্ম হয়েছে বলেইতো মানুষ হিসেবে জন্ম নেবার উপলব্ধি করতে পারি। ভাবতে পারি আমি মানুষ, এ দেশের নাগরিক। জন্ম হয়েছে বলেইতো মানুষ, প্রকৃতি ও সৃষ্টিকর্তাকে বোঝার চেষ্টা করতে পারছি। সুতরাং জন্মদিন তাপর্যপূর্ণ তো বটেই। উদযাপন না করলেও জন্মদিনে এবার গান লিখবো বলে ঠিক করেছি। এ কাজটি আমি আগে কখনও করিনি। তবে এই প্রথমবার জন্মদিনে গান লিখবো।
এ পর্যায়ে এসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যাপারে কিছু বলবেন?
– আমার এই জীবনে গান লিখে মানুষের ব্যাপক ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মাঝে মধ্যেতো মনে হয় আমার এ জীবনই বৃথা। কোনো মানেই খুঁজে পাই না। তবে মানুষের ভালোবাসা পেলে মনে হয় জীবনটা সুন্দর। সান্ত্বনা পাই। গান লেখাটা আমার কিছুটা হলেও কাজে লেগেছে বলে মনে হয়। কারণ মানুষের ভালোবাসা হলো উচ্চতম মর্যাদা। এর চেয়ে বড় কিছু নেই।
আপনার এখনকার ব্যস্ততা কি নিয়ে?
-আমি একটি উপন্যাস লিখছি। এটা এখনও কাউকে বলিনি। এই প্রথম বললাম। জীবনে একটাই আসলে উপন্যাস লিখবো। সেটার কাজ শুরু করে দিয়েছি। আর গানতো নেশা। সেটা তো চলছেই। অডিও এবং সিনেমার গান নিয়মিত লিখছি।
এই সময়ের গানের অবস্থা কেমন মনে হয় আপনার কাছে?
-অনেক ভালো সুরকার ও গীতিকার আমাদের সংগীতাঙ্গনে রয়েছে। তারা ভালো কাজ করছে। শিল্পীও অনেক মেধাবী রয়েছে। তবে ভালোর চেয়ে নিম্নগানের গানগুলোর প্রচারণা বেশি হচ্ছে। এ কারণে মনে হচ্ছে ভালো গান হচ্ছে না। কিন্তু এটা সঠিক নয়। আমার মনে হয় ভালো গানের প্রচারণাটা দরকার। এটা সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই করতে হবে। আর সব কিছুতেই অস্থিরতা বেড়ে গেছে অনেক। গানের ক্ষেত্রে আসলে অস্থিরতা চলে না। অন্যদিকে আমরা বড্ড বেশি তারকানির্ভর হয়ে গেছি। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নতুনদের নিয়ে কাজ করা এখন জরুরি। আমি নিজেও নতুনদের নিয়ে সামনে কাজ করবো। নতুন ও মেধাবীদের মধ্যে অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এর মধ্যে একজন হলেন রাজীব মাহমুদ। ভারত থেকে ক্লাসিক মিউজিকে মাস্টার্স করে এসেছেন তিনি। তার কাজ করছি। এছাড়াও আরো কিছু নতুন প্রতিভা পেয়েছি আমি। আমার মনে হয় চলতি ও আগামী বছর বেশ কিছু সম্ভাবনাময় নতুন শিল্পী নিয়ে আসতে পারবো। তারা সামনে খুব ভালো কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।