বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বয়স কোথাও যেন তাঁর থমকে দাঁড়িয়ে গেছে । আজ ১ নভেম্বর, ৪৩ বছরে পা রেখেছেন বলিউডের অন্যতম সেরা সুন্দরী তারকা এবং সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। মধ্যগগনে পৌঁছে আজও তাঁর রূপের ছটা চারদিক আলোকিত করে। তাঁর অপার সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। এই রূপ একদিন পাগল করেছিল সালমানকে। রক্ত দিয়ে তিনি লিখেছিলেন তাঁর ভালোবাসার কথা।
বলিউড তারকা সালমান খানের জীবনে অনেক নারী এসেছেন, গেছেন। কিন্তু এই বলিউড তারকার জীবন থেকে ঐশ্বরিয়া চলে যাওয়ার পর তাঁর জীবনটাই ওলট-পালট হয়ে যায়। বলিউডে সবচেয়ে চর্চিত প্রেমকাহিনিগুলোর মধ্যে অ্যাশ-সাল্লুর ভালোবাসা আজও কেউ ভুলতে পারেনি। এই ভালোবাসার কাহিনিতে সালমান নায়ক থেকে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তাঁদের প্রেমকথা অসম্পূর্ণই থেকে যায়।
সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেমকথা
১৯৯৭ সাল থেকে সালমান আর ঐশ্বরিয়ার প্রেমের গল্পগাথা শুরু হয়। তার আগে বলিউডের ভাইজান অভিনেত্রী সোমি আলীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। এমনকি সাল্লু মিয়া তাঁর প্রেমিকা সোমির বিষয়ে খুবই আবেগপ্রবণ ছিলেন। একদিন তাঁর নজরে আসেন অ্যাশ। সালমান তখন রীতিমতো তারকা। আর রাই সুন্দরী তখন তাঁর বলিউড ক্যারিয়ার সবে শুরু করছেন। ঐশ্বরিয়াকে দেখার পর সালমান তাঁর প্রেমিকা সোমির সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দেন। শোনা গেছে, সালমান মনসুর আলীর ‘জোশ’ ছবিটি ফিরিয়ে দেন শুধু অ্যাশের জন্যই। কারণ, এই ছবিতে তাঁকে সাবেক বিশ্বসুন্দরীর ভাইয়ের চরিত্র দেওয়া হয়েছিল। পরে এই চরিত্রটি করেন শাহরুখ খান। আরও শোনা গেছে, সালমান বলিউড সুন্দরীর ক্যারিয়ারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেন। ছবির প্রযোজকদের তিনি অনুরোধ করতেন তাঁদের ছবিতে অ্যাশকে নেওয়ার জন্য। সালমানের হাত ধরেই বড় সুযোগ পান ঐশ্বরিয়া। সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির নায়িকা হন এই বলিউড অভিনেত্রী। সাল্লু ভাই তাঁর বন্ধু বানসালির কাছে অ্যাশের নাম প্রস্তাব করেন। ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমার শুটিং চলার সময় একে অপরকে দিল দিয়ে বসেন। সালমান-অ্যাশ পরস্পরের কাছে আসেন। তাঁদের মধ্যে গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এমনকি সালমানের ব্যক্তিগত জীবনেও অ্যাশের দারুণ প্রভাব ছিল। সাবেক বিশ্বসুন্দরী ধীরে ধীরে খান খানদানের একজন হয়ে ওঠেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সালমানের বন্ধুরা ঐশ্বরিয়াকে ‘ভাবি’ বলে সম্বোধন করতেন। কিন্তু রাই পরিবার কখনোই সালমানের সঙ্গে তাদের মেয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। অ্যাশকে তারা সালমানের থেকে দূরে থাকতে বলে। আর এই কারণে বলিউড সুন্দরী রাগ করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসে একলা থাকা শুরু করেন।
প্রেমের ভাঙন
বলিউডের ভাইজান তাঁদের প্রেমকে বিয়ের রূপ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঐশ্বরিয়া বেঁকে বসেন। তিনি চেয়েছিলেন মন দিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে। তাই বিয়ের প্রস্তাব অ্যাশ ফিরিয়ে দেন। সালমান বলিউড সুন্দরীকে রাজি করানোর জন্য গভীর রাতে তাঁর ফ্ল্যাটে গিয়ে হাজির হন। এমনকি এই বলিউড তারকা রাগে অন্ধ হয়ে গিয়ে ১৯তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন। কিন্তু কিছুতেই অ্যাশ সেদিন তাঁর ফ্ল্যাটের দরজা খোলেননি। সকাল পর্যন্ত সালমান সাবেক বিশ্বসুন্দরীর ফ্ল্যাটের দরজা পেটাতে থাকেন। এর ফলে তাঁর হাত রক্তাক্ত হয়ে যায়। ঐশ্বরিয়ার বাবা সাল্লু মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এই ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যে সালমানের সাবেক প্রেমিকা সোমি তাঁকে ফোন করে যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য অনুরোধ করেন। সোমির বাবার অপারেশনের জন্য বলিউডের ভাইজান যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। ঐশ্বরিয়া বিষয়টি পরে জানতে পেরে ভীষণ কষ্ট পান। তিনি স্থির করেন আর সালমানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। এরপর সাল্লু ভাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে সোজা অ্যাশের ‘কুছ না কহো’ ছবির সেটে হানা দেন। এমনকি সেটের মধ্যে বলিউড সুন্দরীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। ঐশ্বরিয়ার এই ছবির নায়ক ছিলেন অভিষেক বচ্চন। শোনা গেছে, জুনিয়ার বচ্চনের গাড়িও নাকি ভাঙচুর করেন সালমান। এরপর অ্যাশ তাঁর সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দেন।
নতুন প্রেমের গল্প
অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া একসঙ্গে কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন। তবে বচ্চন-রাই জুটির শুরুর দিকের ছবি ‘ঢাই অক্ষর প্রেম কি’ এবং ‘কুছ না কহো’র সময় তাঁদের মধ্যে রোমান্স শুরু হয়নি। তখন জুনিয়ার বচ্চনের সঙ্গে বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের বিয়ে হওয়ার কথা। এমনকি তাঁদের আশীর্বাদ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়নি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ‘বাবলি ওউর বান্টি’ ছবির জনপ্রিয় গান ‘কজরা রে’র শুটিংয়ের সময় থেকে অভিষেক ও অ্যাশ একে অপরকে পছন্দ করতে শুরু করেন। এরপর অন্য এক ছবির সেটে জুনিয়ার বচ্চন ঐশ্বরিয়াকে প্রেম নিবেদন করেন। মণিরত্নমের ‘গুরু’ ছবির প্রিমিয়ারের পর টরন্টোতে অভিষেক অ্যাশের সামনে বিয়ের প্রস্তাব রাখেন। তবে এবার সাবেক বিশ্বসুন্দরী আর ‘না’ করেননি। ২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার ধুমধাম করে বিয়ে হয়।