ঢাকা , রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির চাপ বেড়েছে সুরমা’র

বর্ষা ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সুরমা অববাহিকায় পানির চাপ আরো বেড়েছে। সীমান্তবর্তী কানাইঘাটে বুধবার দুপুরে সুরমার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭৭ সে. মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর পানির চাপ কিছুটা হ্রাস পেলেও সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বন্যা কবলিত সিলেটের বিভিন্ন এলাকা পানিতে ভাসছে। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার, দাউদপুর ও জালালপুর ইউনিয়নের ২৪টি গ্রাম ও দেড় লাখ লোক পানি বন্দী। কুশিয়ারা ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সেখানকার দেড়শ’ হেক্টর আউশ ফসল তলিয়ে গেছে। শেওলা, শেরপুর ও অমলসীদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার কিছুটা নিচে নামলেও ভাটির দিকে এখনো গ্রাম, জনপদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাট, বাজার, রাস্তা ঘাট ডুবে আছে। কোন কোন স্থানে ত্রাণের জন্য বন্যা দুর্গতরা হাহাকার করছেন।
এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার পানি স্থায়ী লাভ করায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। সিলেটের কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানী নগর, বিশ্বনাথ, কোম্পানীগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় বন্যার পানি থৈ-থৈ করছে। ওইসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গত কয়েকদিন থেকে। আবার গরু-বাছুর নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন। বিশেষ করে মাঠ-ঘাট ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়াসহ চর্মরোগ দেখা দিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। বানভাসি মানুষরা বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন। তারা বন্যার ময়লা পানি দিয়ে থালা বাসন ও পোশাক পরিষ্কার করছে। অবচেতনভাবে ময়লা পানির ব্যবহারে ব্যাপকহারে ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কয়েকটি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায়।পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরোও জানান, ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় এক লাখ পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো প্রায় দেড় লাখ পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও এক লাখ ওরস্যালাইন মজুদ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব, রোগ বালাই দমন ও পানি বিশুদ্ধিকরণে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পানির চাপ বেড়েছে সুরমা’র

আপডেট টাইম : ০২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭
বর্ষা ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সুরমা অববাহিকায় পানির চাপ আরো বেড়েছে। সীমান্তবর্তী কানাইঘাটে বুধবার দুপুরে সুরমার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭৭ সে. মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর পানির চাপ কিছুটা হ্রাস পেলেও সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বন্যা কবলিত সিলেটের বিভিন্ন এলাকা পানিতে ভাসছে। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার, দাউদপুর ও জালালপুর ইউনিয়নের ২৪টি গ্রাম ও দেড় লাখ লোক পানি বন্দী। কুশিয়ারা ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সেখানকার দেড়শ’ হেক্টর আউশ ফসল তলিয়ে গেছে। শেওলা, শেরপুর ও অমলসীদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার কিছুটা নিচে নামলেও ভাটির দিকে এখনো গ্রাম, জনপদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাট, বাজার, রাস্তা ঘাট ডুবে আছে। কোন কোন স্থানে ত্রাণের জন্য বন্যা দুর্গতরা হাহাকার করছেন।
এদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার পানি স্থায়ী লাভ করায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। সিলেটের কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানী নগর, বিশ্বনাথ, কোম্পানীগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় বন্যার পানি থৈ-থৈ করছে। ওইসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গত কয়েকদিন থেকে। আবার গরু-বাছুর নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন। বিশেষ করে মাঠ-ঘাট ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়াসহ চর্মরোগ দেখা দিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। বানভাসি মানুষরা বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন। তারা বন্যার ময়লা পানি দিয়ে থালা বাসন ও পোশাক পরিষ্কার করছে। অবচেতনভাবে ময়লা পানির ব্যবহারে ব্যাপকহারে ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কয়েকটি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায়।পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরোও জানান, ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় এক লাখ পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো প্রায় দেড় লাখ পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও এক লাখ ওরস্যালাইন মজুদ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব, রোগ বালাই দমন ও পানি বিশুদ্ধিকরণে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।