ঢাকা , বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাকসবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বান্দরবানে এখন পাহাড়ে পাহাড়ে আর সাংগু নদীর চরে উৎপাদিত হচ্ছে নানারকম শাকসবজি, একসময় এই পার্বত্য এলাকায় কৃষকেরা শুধু তামাক চাষ করে জীবনধারণ করতো, আর এখন রবিশস্য ও বিভিন্ন রকম শাকসবজি উৎপাদন আর বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করছে অসংখ্য কৃষক পরিবার। বর্তমানে কৃষকরা সবজির পরিচর্যা ও উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছে। এখন বান্দরবানে শুধুমাত্র সমতল ভূমিতে নয়, পাহাড়ের গায়ে এবং সাঙ্গু, মাতামূহুরী ও বাকখালী নদীর দুপাড়ে চাষ করছে বাঁধাকপি, ফুলকপি, আলু, মূলা, বেগুন, করলা, সিম, লাউ, গাঁজর, টমেটো, সরিষা, চীনাবাদাম, ভুট্টা, ধনেপাতা ও কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন শাকসবজি। এসব শাকসবজি ফলন ও হচ্ছে বেশ ভালো আর বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

বান্দরবানের বালাঘাটার ভরাখালীর সবজি চাষি নুর মোহাম্মদ জানান, একসময় শুধু এক রকম ফসল উৎপাদন করতাম আর এখন বাঁধাকপি, ফুলকপি, আলু, মূলা, বেগুন, করলা, সিম, লাউ, গাঁজর, টমেটো, সরিষা, চীনাবাদাম, ভুট্টা, এবং লাউশাক, মূলাশাক, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা ও কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদন করছি আর পরিবার নিয়ে বেশ ভালো আছি। বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের বাদাম চাষি নু প্রু মং জানান, একসময় তামাক ক্ষেত করতাম অনেক লাভ হত, কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের এখন বাদাম চাষকরি এতে কষ্ট কম লাভ বেশি আর স্বাস্থ্যের ও কোনো ক্ষতি হয় না। রেইচার এলাকার সবজি চাষি মোঃ নুর মোহাম্মদ জানান, আমরা এখন বারো মাসই কিছু না কিছু উৎপাদন করে থাকি।

স্থানীয় জৈব সার দিয়ে ফসল উৎপাদন করি আর ফলগুলো ও পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হয়। বান্দরবান কৃষি বিভাগের তথ্যমতে বান্দরবানে বর্তমানে বান্দরবানে ৭ হাজার ৫শত ৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে বিভিন্ন শাকসবজি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। কৃষকদের সার বীজ কীটনাশকসহ যাবতীয় কৃষিতথ্য পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, একসময় পার্বত্য এলাকায় শুধু তামাক চাষ করে কৃষকেরা জীবিকা নির্বাহ করলে ও বর্তমানে কৃষি অফিসের সহায়তায় অনেক কৃষকই তামাক বাদ দিয়ে নানারকম শাকসবজি উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা অংবাই মারমা বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে শুধু একসময় তামাক চাষই বেশি ছিল কিন্তু বর্তমানে কৃষি বিভাগের সহায়তায় আখ, কমলা ও বিভিন্ন রবি শস্য উৎপাদন হচ্ছে। বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় কৃষকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার বীজ কীটনাশকসহ যাবতীয় কৃষিতথ্য পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সময় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষকদের ফসল উৎপাদন ও রোগ বালাই মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে তথ্যপ্রদান করছি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

শাকসবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মার্চ ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বান্দরবানে এখন পাহাড়ে পাহাড়ে আর সাংগু নদীর চরে উৎপাদিত হচ্ছে নানারকম শাকসবজি, একসময় এই পার্বত্য এলাকায় কৃষকেরা শুধু তামাক চাষ করে জীবনধারণ করতো, আর এখন রবিশস্য ও বিভিন্ন রকম শাকসবজি উৎপাদন আর বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করছে অসংখ্য কৃষক পরিবার। বর্তমানে কৃষকরা সবজির পরিচর্যা ও উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছে। এখন বান্দরবানে শুধুমাত্র সমতল ভূমিতে নয়, পাহাড়ের গায়ে এবং সাঙ্গু, মাতামূহুরী ও বাকখালী নদীর দুপাড়ে চাষ করছে বাঁধাকপি, ফুলকপি, আলু, মূলা, বেগুন, করলা, সিম, লাউ, গাঁজর, টমেটো, সরিষা, চীনাবাদাম, ভুট্টা, ধনেপাতা ও কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন শাকসবজি। এসব শাকসবজি ফলন ও হচ্ছে বেশ ভালো আর বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

বান্দরবানের বালাঘাটার ভরাখালীর সবজি চাষি নুর মোহাম্মদ জানান, একসময় শুধু এক রকম ফসল উৎপাদন করতাম আর এখন বাঁধাকপি, ফুলকপি, আলু, মূলা, বেগুন, করলা, সিম, লাউ, গাঁজর, টমেটো, সরিষা, চীনাবাদাম, ভুট্টা, এবং লাউশাক, মূলাশাক, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা ও কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদন করছি আর পরিবার নিয়ে বেশ ভালো আছি। বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের বাদাম চাষি নু প্রু মং জানান, একসময় তামাক ক্ষেত করতাম অনেক লাভ হত, কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের এখন বাদাম চাষকরি এতে কষ্ট কম লাভ বেশি আর স্বাস্থ্যের ও কোনো ক্ষতি হয় না। রেইচার এলাকার সবজি চাষি মোঃ নুর মোহাম্মদ জানান, আমরা এখন বারো মাসই কিছু না কিছু উৎপাদন করে থাকি।

স্থানীয় জৈব সার দিয়ে ফসল উৎপাদন করি আর ফলগুলো ও পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হয়। বান্দরবান কৃষি বিভাগের তথ্যমতে বান্দরবানে বর্তমানে বান্দরবানে ৭ হাজার ৫শত ৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে বিভিন্ন শাকসবজি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। কৃষকদের সার বীজ কীটনাশকসহ যাবতীয় কৃষিতথ্য পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, একসময় পার্বত্য এলাকায় শুধু তামাক চাষ করে কৃষকেরা জীবিকা নির্বাহ করলে ও বর্তমানে কৃষি অফিসের সহায়তায় অনেক কৃষকই তামাক বাদ দিয়ে নানারকম শাকসবজি উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা অংবাই মারমা বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে শুধু একসময় তামাক চাষই বেশি ছিল কিন্তু বর্তমানে কৃষি বিভাগের সহায়তায় আখ, কমলা ও বিভিন্ন রবি শস্য উৎপাদন হচ্ছে। বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় কৃষকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার বীজ কীটনাশকসহ যাবতীয় কৃষিতথ্য পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি। বিভিন্ন সময় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষকদের ফসল উৎপাদন ও রোগ বালাই মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে তথ্যপ্রদান করছি।