বিক জীবনে ফিরতে চায় নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা নিহত মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা। তিনি বলেন, ‘নব্য জেএমবি মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন। তারা ধোঁকা দিয়ে অনেক নিরীহ মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। স্বামীর প্ররোচনায় এ সংগঠনে জড়িয়েছি। এখন অনুতপ্ত। সুযোগ পেলে নতুনভাবে জীবন শুরু করতে চাই।’ সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। গতকাল আরেক মহানগর হাকিম খুরশীদ আলমের কাছে জবানবন্দি দেন পলাতক জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা মনি ওরফে তৃষা।
গত ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর পর শিলা ও তৃষ্ণা তাদের দুই শিশুসন্তানসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওই অভিযানে জঙ্গি সুমনের স্ত্রী শাকিরা ওরফে সাকিনা ও তানভীর কাদেরীর ছেলে আফিফ কাদেরী ওরফে শহীদ নিহত হয়। এর পর শিলা ও তৃষ্ণাকে আশকোনার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
সূত্র জানায়, শিলা ও তৃষ্ণা বলেছেন, স্বামীর প্ররোচনায় তারা জঙ্গিবাদে জড়ান। নব্য জেএমবির মিথ্যার ফাঁদে পড়ে তাদের সাজানো সংসার তছনছ হয়েছে। এ সংগঠন ভুয়া। তারা জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
শিলা জানান, ২০১৪ সালে কানাডা যান তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম। সেখানে নয়ন নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশির সঙ্গে জাহিদের পরিচয় হয়। নয়ন বৃত্তি নিয়ে কানাডায় উচ্চ শিক্ষার জন্য গিয়েছে।
কানাডায় থাকাকালে নয়নই জাহিদকে উগ্রবাদের দীক্ষা দেয়। কানাডা থেকে ফেরার পর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেয় জাহিদুল। এর পরই ধীরে ধীরে তার সঙ্গে পরিচয় হয় নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম চৌধুরী, সাবেক ব্যাংকার জেএমবি নেতা তানভীর কাদেরী ও মারজানের সঙ্গে। পরে জাহিদুল পরিবারসহ হিজরত করে উত্তরার বাসা থেকে গোপন জঙ্গি আস্তানায় ওঠে।
তৃষ্ণা জানায়, আস্তানায় অভিযানের পর মুসা বলেছিল আত্মঘাতী হতে। বাসা সুইসাইডাল ভেস্ট, গ্রেনেড ও অনেক অস্ত্র ছিল। তবে ‘আাত্মহত্যা মহাপাপ’ হওয়ায় মুসার নির্দেশ মানেনি। সন্তান নিয়ে বাঁচতে চায় বলেই স্বামীর নির্দেশ অমান্য করে। সেলিম ও ফিরোজ নামে জেএমবির দুই জঙ্গি আশকোনার বাসায় যেত। ফিরোজ বাসার জন্য জিনিসপত্র কিনে দিত। এর আগে তারা আজিমপুর ও পাইকপাড়ার আস্তানায় ছিল।