ঢাকা , রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার শতবর্ষ পূর্তি উৎসব শুরু রোববার

রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার একশ বছর পূর্তির উৎসব আগামী রোববার থেকে শুরু হবে।এটি চলবে আট দিনব্যাপী। এ দিন সন্ধ্যায় উৎসবের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

মঙ্গলারতি, প্রভাতি প্রার্থনা, উষা কীর্তণ, মন্দির পরিক্রমা এবং শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বিশেষ পূজা ও হোমের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে শুক্রবার মিশনের গ্রন্থকেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবনিময় করেছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ। রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম চট্টগ্রামের সম্পাদক স্বামী শক্তিনাথানন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের মধ্যে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, মনোজ কান্তি রায়, অজয় দাশ গুপ্ত, শ্যামল সরকার, রাহুল রাহা, সন্তোষ শর্মা, মধুসূদন মন্ডল, অনুপ কুমার খাস্তগির, সেবিকা দেবনাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্বামী ধ্রুবেশানন্দ বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের জেনারেল সেক্রেটারি শ্রীমৎ স্বামী সুহিতানন্দজী মহারাজ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট স্বামী বাগীশানন্দজী মহারাজ, ম্যনেজার স্বামী গিরিশানন্দজী মহারাজ, ট্রাস্টি তত্ত্ববিদানন্দজীসহ বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত থাকবেন।

এ ছাড়া আট দিনব্যাপী এ উৎসবের বিভিন্ন পর্বে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক উপস্থিত থাকবেন। আনুষ্ঠানের শেষ দিন ২৬ মার্চ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভ্যাটিক্যান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের রাষ্ট্রদূত। আলোচনা করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, বিশপ সৌরভ ফলিয়া, ড. জনবোধি ভিক্ষু প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দিন ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করবেন রেজওয়ান চৌধুরী বন্যা, ফাতেমাতুজ জোহরা, রথীন্দ্র নাথ রায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, রফিকুল আলম, সুবির নন্দি, ভারতের শিল্পি ড. শুভদ্রা দেশাই প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার একশ বছর পূর্ণ হয়। ১৯১৬ সালের মার্চ মাসে রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বেলুর মঠের শাখা হিসেবে অনুমোদন লাভ করে এবং বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় কার্যনির্বাহক সমিতিকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন।

এর আগে ১৯১৪ সালে শ্রী রামকৃষ্ণ-শিষ্য স্বামী প্রেমানন্দ ঢাকায় আসেন। তার অনুপ্রেরণায় জমিদার যোগেশ দাস রামকৃষ্ণ মিশনের একটি স্থায়ী ভিত্তি দেয়ার লক্ষ্যে তার সাত হাজার টাকায় কেনা সাত বিঘা জমি দান করেন।

একই বছরে আরও কিছু জমি ক্রয় করা হয়। যেখানে মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের ভবন, সাধু নিবাস, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্মিত হয়। বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ ১৯১৪ সালে রামকৃষ্ণ মঠ, ঢাকাকে অনুমোদন প্রদান করেন এবং আধ্যাত্মিক প্রচারের পাশাপাশি সেবাকাজসমূহ চালিয়ে যাবার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

স্থানীয় ভক্তগণের একান্ত অনুরোধে বর্তমান স্থায়ী ভূমিতে ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে বেলুড় মঠের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শ্রী রামকৃষ্ণ-শিষ্য স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী প্রেমানন্দ ১৯১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় আগমন করেন এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি যথাবিধি পূজা ও হোমের পর স্বামী ব্রহ্মানন্দ ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠের ও স্বামী প্রেমানন্দ রামকৃষ্ণ মিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার শতবর্ষ পূর্তি উৎসব শুরু রোববার

আপডেট টাইম : ০৬:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০১৭

রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার একশ বছর পূর্তির উৎসব আগামী রোববার থেকে শুরু হবে।এটি চলবে আট দিনব্যাপী। এ দিন সন্ধ্যায় উৎসবের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

মঙ্গলারতি, প্রভাতি প্রার্থনা, উষা কীর্তণ, মন্দির পরিক্রমা এবং শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বিশেষ পূজা ও হোমের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে শুক্রবার মিশনের গ্রন্থকেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবনিময় করেছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ। রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম চট্টগ্রামের সম্পাদক স্বামী শক্তিনাথানন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের মধ্যে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, মনোজ কান্তি রায়, অজয় দাশ গুপ্ত, শ্যামল সরকার, রাহুল রাহা, সন্তোষ শর্মা, মধুসূদন মন্ডল, অনুপ কুমার খাস্তগির, সেবিকা দেবনাথ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

স্বামী ধ্রুবেশানন্দ বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের জেনারেল সেক্রেটারি শ্রীমৎ স্বামী সুহিতানন্দজী মহারাজ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট স্বামী বাগীশানন্দজী মহারাজ, ম্যনেজার স্বামী গিরিশানন্দজী মহারাজ, ট্রাস্টি তত্ত্ববিদানন্দজীসহ বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত থাকবেন।

এ ছাড়া আট দিনব্যাপী এ উৎসবের বিভিন্ন পর্বে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক উপস্থিত থাকবেন। আনুষ্ঠানের শেষ দিন ২৬ মার্চ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভ্যাটিক্যান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের রাষ্ট্রদূত। আলোচনা করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, বিশপ সৌরভ ফলিয়া, ড. জনবোধি ভিক্ষু প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দিন ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করবেন রেজওয়ান চৌধুরী বন্যা, ফাতেমাতুজ জোহরা, রথীন্দ্র নাথ রায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, রফিকুল আলম, সুবির নন্দি, ভারতের শিল্পি ড. শুভদ্রা দেশাই প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রামকৃষ্ণ মিশন ঢাকার একশ বছর পূর্ণ হয়। ১৯১৬ সালের মার্চ মাসে রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বেলুর মঠের শাখা হিসেবে অনুমোদন লাভ করে এবং বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় কার্যনির্বাহক সমিতিকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন।

এর আগে ১৯১৪ সালে শ্রী রামকৃষ্ণ-শিষ্য স্বামী প্রেমানন্দ ঢাকায় আসেন। তার অনুপ্রেরণায় জমিদার যোগেশ দাস রামকৃষ্ণ মিশনের একটি স্থায়ী ভিত্তি দেয়ার লক্ষ্যে তার সাত হাজার টাকায় কেনা সাত বিঘা জমি দান করেন।

একই বছরে আরও কিছু জমি ক্রয় করা হয়। যেখানে মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের ভবন, সাধু নিবাস, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্মিত হয়। বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ ১৯১৪ সালে রামকৃষ্ণ মঠ, ঢাকাকে অনুমোদন প্রদান করেন এবং আধ্যাত্মিক প্রচারের পাশাপাশি সেবাকাজসমূহ চালিয়ে যাবার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

স্থানীয় ভক্তগণের একান্ত অনুরোধে বর্তমান স্থায়ী ভূমিতে ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে বেলুড় মঠের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শ্রী রামকৃষ্ণ-শিষ্য স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী প্রেমানন্দ ১৯১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় আগমন করেন এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি যথাবিধি পূজা ও হোমের পর স্বামী ব্রহ্মানন্দ ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠের ও স্বামী প্রেমানন্দ রামকৃষ্ণ মিশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।