ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যার প্রভাবে অস্থির কাঁচাবাজার

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ উত্তর অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও দেশব্যাপী টানা বৃষ্টির ফলে রাজধানীর কাঁচাবাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কিছু কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও তা আগের বাড়তি দামেই বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে নিত্যপণ্যের দাম আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তা সাধারণ। ফলে উদ্বিগ্ন হয়েছে পড়েছেন ক্রেতারা। এ ছাড়া বাজারে তুলনামূলক ক্রেতা কম। যারা আসেন তারা তাদের দরকারি জিনিসপত্র আগের তুলনায় কম কম কিনে বাসায় ফিরছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দামের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে দেশি ও আমদানিকৃত পিয়াজের দাম গত সপ্তাহেই বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দিগুণ হয়েছে। বর্তমানে দেশি পিয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা এবং আমদানিকৃত ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। দোকান ভেদে এ পণ্য দু’টির ২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য দেখা যায়। গতকাল কৃষি মার্কেটে ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকা, দেশি রসুন ১২০-১৩০ টাকা, আমদানিকৃত চিনা আদা ১২০ টাকা, করলা আদা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে অধিকাংশ সবজির দাম বেড়ে প্রায় দিগুণ হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঝিঁঙে ৬০ টাকা, টমেটো ১৩০-১৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ থেকে এসব পণ্যের দাম কেজিতে প্রায় ১০-২০ টাকা বেড়েছে।
বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। পাইকারি বাজার থেকেই আমাদের বেশি দামে কিনতে হয় তাই আমরা এখানে একটু বেশি দামে বিক্রি করি। কৃষি মার্কেটে চালের বাজার অনেকটা আগের মতোই রয়েছে। গতকাল এ বাজারে নাজির শাইল চাল ৫৯-৬১ টাকা, মিনিকেট ৫৭-৫৮, আটাশ ৫০-৫১ টাকা, মোটা চাল ৪৫-৪৭ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চালের দোকানদার মো. মোমিন বলেন, চালের দাম তিন সপ্তাহ আগে যে একবার বাড়ছে তারপর আর বাড়েনি। আমরা পাইকারি যে দামে কিনি তার থেকে দুই টাকা বেশিতে বিক্রি করি। মোহাম্মদপুরের এ বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও গোশতের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছ কেজি প্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা, ইলিশ মাছ বিভিন্ন সাইজের ৭০০-১০০০ টাকা, সিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, চাষের কইমাছ ১২০-১৩০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৫৫০-৭০০ টাকা। এ ছাড়া সাগরের মাছ ভিন্ন ভিন্ন দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৭৫-৫০০ টাকা, খাসির গোশত ৬৭৫-৭০০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা। মাছ ব্যবসায়ী সঞ্জয় বলেন, শুক্রবার ছাড়া অন্যদিন মাছের দাম প্রায় একই রকম থাকে। শুক্রবার বাজারে ক্রেতা বেশি আসে বিধায় এ দিন আড়তদাররা আমাদের কাছে দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই খুচরা বাজারে ওই দিন আমরাও একটু বেশি দামে বিক্রি করি। কৃষি মার্কেট থেকে নিয়মিত বাজার করেন জাপান গার্ডেনের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিন বাড়তে থাকায় এখন অনেক জিনিস কম কম কিনি। আগে এক সাথে পাঁচ কেজি পিয়াজ নিতাম আজ মাত্র দুই কেজি নিলাম। কি করব এ শহরে খেয়ে-পড়ে থাকাই যে এখন চ্যালেঞ্জ। রাজধানীর অন্যতম বড় এ বাজারে ভেতরের দোকানের চিত্র একরকম থাকলেও বাজারের বাইরের দোকানগুলোয় যার যে রকম খুশি তেমন বিক্রি করে যাচ্ছেন। বাজারের ভেতরে যে পিয়াজের দাম ৬০-৬৫ টাকা তা বাইরের দোকানগুলোয় বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা পর্যন্ত। অধিক মুনাফার লাভে বাজারের বাইরের অনেক খুচরা বিক্রেতাই এমনটি করে যাচ্ছেন অহরহ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার প্রভাবে অস্থির কাঁচাবাজার

আপডেট টাইম : ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ উত্তর অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও দেশব্যাপী টানা বৃষ্টির ফলে রাজধানীর কাঁচাবাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কিছু কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও তা আগের বাড়তি দামেই বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে নিত্যপণ্যের দাম আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ভোক্তা সাধারণ। ফলে উদ্বিগ্ন হয়েছে পড়েছেন ক্রেতারা। এ ছাড়া বাজারে তুলনামূলক ক্রেতা কম। যারা আসেন তারা তাদের দরকারি জিনিসপত্র আগের তুলনায় কম কম কিনে বাসায় ফিরছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দামের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে দেশি ও আমদানিকৃত পিয়াজের দাম গত সপ্তাহেই বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দিগুণ হয়েছে। বর্তমানে দেশি পিয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা এবং আমদানিকৃত ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। দোকান ভেদে এ পণ্য দু’টির ২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য দেখা যায়। গতকাল কৃষি মার্কেটে ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকা, দেশি রসুন ১২০-১৩০ টাকা, আমদানিকৃত চিনা আদা ১২০ টাকা, করলা আদা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে অধিকাংশ সবজির দাম বেড়ে প্রায় দিগুণ হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঝিঁঙে ৬০ টাকা, টমেটো ১৩০-১৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ থেকে এসব পণ্যের দাম কেজিতে প্রায় ১০-২০ টাকা বেড়েছে।
বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। পাইকারি বাজার থেকেই আমাদের বেশি দামে কিনতে হয় তাই আমরা এখানে একটু বেশি দামে বিক্রি করি। কৃষি মার্কেটে চালের বাজার অনেকটা আগের মতোই রয়েছে। গতকাল এ বাজারে নাজির শাইল চাল ৫৯-৬১ টাকা, মিনিকেট ৫৭-৫৮, আটাশ ৫০-৫১ টাকা, মোটা চাল ৪৫-৪৭ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চালের দোকানদার মো. মোমিন বলেন, চালের দাম তিন সপ্তাহ আগে যে একবার বাড়ছে তারপর আর বাড়েনি। আমরা পাইকারি যে দামে কিনি তার থেকে দুই টাকা বেশিতে বিক্রি করি। মোহাম্মদপুরের এ বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও গোশতের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছ কেজি প্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা, ইলিশ মাছ বিভিন্ন সাইজের ৭০০-১০০০ টাকা, সিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, চাষের কইমাছ ১২০-১৩০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৫৫০-৭০০ টাকা। এ ছাড়া সাগরের মাছ ভিন্ন ভিন্ন দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৭৫-৫০০ টাকা, খাসির গোশত ৬৭৫-৭০০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা। মাছ ব্যবসায়ী সঞ্জয় বলেন, শুক্রবার ছাড়া অন্যদিন মাছের দাম প্রায় একই রকম থাকে। শুক্রবার বাজারে ক্রেতা বেশি আসে বিধায় এ দিন আড়তদাররা আমাদের কাছে দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই খুচরা বাজারে ওই দিন আমরাও একটু বেশি দামে বিক্রি করি। কৃষি মার্কেট থেকে নিয়মিত বাজার করেন জাপান গার্ডেনের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিন বাড়তে থাকায় এখন অনেক জিনিস কম কম কিনি। আগে এক সাথে পাঁচ কেজি পিয়াজ নিতাম আজ মাত্র দুই কেজি নিলাম। কি করব এ শহরে খেয়ে-পড়ে থাকাই যে এখন চ্যালেঞ্জ। রাজধানীর অন্যতম বড় এ বাজারে ভেতরের দোকানের চিত্র একরকম থাকলেও বাজারের বাইরের দোকানগুলোয় যার যে রকম খুশি তেমন বিক্রি করে যাচ্ছেন। বাজারের ভেতরে যে পিয়াজের দাম ৬০-৬৫ টাকা তা বাইরের দোকানগুলোয় বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা পর্যন্ত। অধিক মুনাফার লাভে বাজারের বাইরের অনেক খুচরা বিক্রেতাই এমনটি করে যাচ্ছেন অহরহ।