বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথোরিটির (বিএফএসএ) এর যৌথভাবে অনুসন্ধান ও গবেষণায়ে দেখা গেছে, শাকসবজি ও ফলমূলে ফরমালিন মেশানো হয় না। এমনটি দাবি করলেন বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে অনুসন্ধান ও গবেষণা করে দেখা গেছে, শাকসবজি ও ফলমূলে ফরমালিন মেশানোর কোনো সুযোগ নেই। আম ও আপেলের মতো ফলে প্রাকৃতিকভাবে ফরমালিন থাকে।’
মাহফুজুল হক এও বলেন, ‘বাজারে নকল বা কৃত্রিম ডিম নেই। আর তরমুজে রং মেশানোর অভিযোগও সঠিক নয়। নিরাপদ খাদ্য নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। ফরমালিন মেশানো আছে মনে করে অনেকে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ এগুলো পুষ্টির বড় উৎস।’
আগামী ২৩ ও ২৪ আগস্ট ঢাকায় খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে শনিবার (১৯ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। রাজধানীর এমসিসিআই কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
খাদ্য নিরপাত্তা বিষয়ক সম্মেলনের আয়োজক যৌথভাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী সংগঠন এমসিসিআই, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন এফআইসিসিআই এবং খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই।
আপেলে ফরমালিন মেশানো হয় না দাবি করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, আপেল যে পঁচে না তার কারণ এতে প্যারফিন ওয়াক্স নামে মৌমাছি থেকে উৎপাদিত এক ধরণের উপাদানের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। আপেলের জলীয় বাষ্প যাতে শুকিয়ে না যায় তার জন্য এ প্রলেপ দেওয়া হয়, যা খাওয়ার উপযোগী। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে যে যন্ত্র ব্যবহার করে আমসহ বিভিন্ন ফলে ফরমালিন পরীক্ষা করা হয়েছিল তা ভুল ছিল। আপেলে ২৩ পিপিএম প্রাকৃতিক ফরমালিন থাকে। আমেও প্রাকৃতিক ফরমালিন থাকে। অনেক সুপারস্টোরে আপলের গায়ে লেখা থাকে ‘আমি ফরমালিনমুক্ত’, যা ভুল।’
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে অন্যরা বলেন, ‘শুধু আইন করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। এর জন্য সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে, যা দূর করতে হবে।’
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ : সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব।’ এর আয়োজনে সহায়তা করছে কোকাকোলা, জিএসকে, পেপসিকো, প্রাণ, ইউলিভার, স্কয়ার গ্রুপ, এসিআই গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, আড়ং ডেইরি, ইফাদ, পোলার, নিউজিল্যান্ড ডেইরি, লালমাইগ্রুপসহ খাদ্য প্রস্তুত, প্রক্রিয়াজাত ও বিপণনকারী বিভিন্ন কোম্পানি। সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এফআইসিসিঅিাই সভাপতি রূপালী চৌধুরী বলেন, ‘শুধু আইন দিয়ে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হবে না। এর জন্য সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। বিএসটিআইর পরিচালক এ এন এম আসাদুজ্জামান বলেন, শুধু রেগুলেটররা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারবে না। বিএসটিআই জরিমানা করে। কিন্তু দু’দিন পরে আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এ জন্য সব পর্যায়ে সচেতনতা দরকার।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে সম্মেলনের নামে খোলা ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয়। এ ওয়েবসাইটে সম্মেলনের সব তথ্য পাওয়া যাবে। কোকাকোলার জনসংযোগ প্রধান শামীমা আকতারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এমসিসিআই সচিব ফারুক আহমেদ, নেসলে বাংলাদেশের করপোরেট পরিচালক নকিব খান প্রমুখ।