বাঙালী কন্ঠঃ ভারত থেকে আমদানিতে শুল্ক বাড়লেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ আসছে। প্রায় ১০ দিন আগে নতুন শুল্কহার কার্যকর হলেও ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এই সময়ে দেশীয় বাজারে কয়েক দফা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
এরই মাঝে দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ১০ দিন স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধের আভাস দেয়ায় বাজার আরও অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা মজুদ শুরু করলেও ওই সময় কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করে আরেক দফা বাড়ানো হতে পারে পেঁয়াজের মূল্য।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৩৫০ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৮৫২ ডলার নির্ধারণ করার পর গত সপ্তাহের ৬ কর্মদিবসে এই বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ টন পেঁয়াজ। চলতি সপ্তাহে তা আরও বেড়েছে। প্রথম কার্যদিবস শনিবারই আমদানি হয়েছে ৪৮৯ টন। অথচ গত সপ্তাহের তুলনায় হিলি বন্দরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও রোববার তা বিক্রি হয় ৭০ টাকায়। হিলিতে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ও কারসাজি রুখতে বুধবার বন্দরের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে স্থানীয় প্রশাসন। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-উর-রশীদ, হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি শহিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, পেঁয়াজ আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম, বাবলু রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপরও পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের তৎপরতা কমেনি।
এরই মাঝে ভারতের হিলি এক্সপোর্টারস অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সনজীদ মজুমদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জানিয়েছে, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ২ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এই চিঠির পর আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের মজুদ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বন্দরের নির্ভরযোগ্য সূত্র। তবে হিলি স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশিদ মজুদের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ একটি পচনশীল পণ্য। সাত দিনের বেশি মজুদ করা সম্ভব নয়। তাই মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির বিষয়টি অবাস্তব। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলে সাময়িক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। তবে তা স্থায়ী হবে না।’
এদিকে খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে দেশের চারটি স্থলবন্দর থেকে আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনবে টিসিবি। এরই ধারাবাহিকতায় হিলিতে টিসিবিকে পেঁয়াজ দিতে শিডিউল ড্রপ করেছে ৩টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।