বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ধূমপানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ফুসফুস। তবে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুস ফের সুস্থ হয়ে উঠতে সক্ষম। এ তথ্য জানিয়েছেন অ্যামেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র বিজ্ঞান উপদেষ্টা ড. নরম্যান এডেলম্যান।
ধূমপানের ফলের শ্বাসনালী থেকে কফ ও ধুলোবালি পরিস্কারে ফুসফুসের সক্ষমতা কমে যায়। এজন্যই ধূমপায়ীদের মধ্যে কফের সমস্যা দেখা যায়, যা থেকে দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসকষ্ট এবং ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্তও হন অনেকে।
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কফ কমতে থাকে এবং কয়েকদিন পরেই ধূমপায়ীরা লক্ষ করেন যে শরীরচর্চার সময় এখন আর শ্বাসকষ্টও হয় না। কারণ, ধূমপান ছেড়ে দিলে রক্তে কার্বন মনোক্সাইডের হারও কমে আসে। কার্বন মনোক্সাইড রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সে কারণে অনেক ধূমপায়ী শ্বাসকষ্টের কথা বলেন। এছাড়া ধূমপান ছেড়ে দিলে শ্বাসনালীতে আর প্রদাহ হয় না। সে কারণেও শ্বাসের সমস্যা আর থাকে না।
কিন্তু ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর প্রথমদিকে কফ বেড়ে যেতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, ফুসফুস ধূমপানের কারণে জমা হওয়া অতিরিক্ত কফগুলো গলা ও শ্বাসনালী দিয়ে বের করে দিতে থাকে। আর ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কমে আসে। ড. নরম্যান এডেলম্যান বলেন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ১০ বছর পর ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাং কমে যায়। তবে বহু বছর ধরে ধূমপান করার ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, তা কখনো পুরোপুরি ভালো হয় না। দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে ফুসফুসের টিস্যুগুলো এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, সেসব আর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে না। ফলে, ফুসফুসের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয় এবং পুরোপুরি অক্সিজেন টানতে পারে না ফুসফুস।
দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে আলভেওলি নামে ফুসফুসের একটি অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। এই অংশই অক্সিজেন গ্রহণ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের করে দেয়। এটি একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর কখনো ভালো হয় না।
এটি ধ্বংস হওয়ার ফলে এম্ফাইসেমা নামের একটি রোগ হয়। একে বলা হয় ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি)। এই রোগের ফলে শ্বাস ছোট হয়ে আসা এবং শ্বাসকষ্ট হয়।
সম্প্রতি, এমআরআই ইমেজিং ব্যবহার করে চালানো গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এ বিষয়টি জানতে পেরেছেন। ধূমপান শুরু করার এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই ফুসফুসের ওই অংশটি ধ্বংস হওয়া শুরু হয়। তবে ২০ থেকে ৩০ বছর পর গিয়ে সমস্যা তীব্র আকারে দেখা দেয়। সুতরাং বাঁচতে চাইলে আজই ধূমপান ছেড়ে দিন। সূত্র- লাইভ সায়েন্স