বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিমান চালনার জগৎটি মূলত পুরুষশাসিত। কিন্তু এই পুরুষশাসিত পেশাতেও বর্তমানে নারীরা তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতায় নিজস্ব স্থান করে নিচ্ছেন। এমনি একজন নারী অ্যানি দিব্যা। ভারতের ৩০ বছর বয়সী অ্যানি দিব্যা বিশ্বের কনিষ্ঠতম নারী পাইলট হয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। তিনি বাণিজ্যিক এয়ারলাইনস ক্যাপ্টেন হয়েছেন। তিনি বোয়িং ৭৭৭-এর কনিষ্ঠতম নারী পাইলট।
অন্ধ্র প্রদেশের মেয়ে দিব্যার বিমান চালনার স্বপ্ন সেই ছোটবেলা থেকেই। তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিমান চালনার প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। মা-বাবার সমর্থন ও নিজের অক্লান্ত পরিশ্রমে দিব্যার স্বপ্ন পূরণ হয়। ছোটবেলায় দিব্যা তার বাবা মেজর মুরাহারি ও মা পদ্মিনীর সঙ্গে আকাশপথে প্রচুর ভ্রমণ করেন। বাবার বদলির চাকরির সুবাদে তাকে মুম্বাই, রাজস্থানসহ বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তখন থেকেই আকাশে ওড়ার স্বপ্ন তার।
স্কুলে পড়ার সময় কিশোরী দিব্যা যখন সহপাঠীদের কাছে তার পাইলট হওয়ার স্বপ্নের কথা বলত, তখন তারা হেসে উড়িয়ে দিত। কারণ রক্ষণশীল ভারতীয় সমাজে একজন নারী গতানুগতিক কিছু পেশা বেছে নিতেই অভ্যস্ত। আত্মীয়রাও তার এই ‘পুরুষালি পেশায়’ অংশগ্রহণকে ভালো চোখে দেখেনি। তবে দিব্যার মা-বাবা ছিলেন প্রগতিশীল। আর তাকে উত্তর প্রদেশের ফ্লাইট স্কুল ইন্দিরা গান্ধী উড্ডয়ন একাডেমিতে ভর্তি করে দেন। তার ইংরেজিতে দুর্বলতা ছিল। দিব্যার ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে ঠাট্টা-তামাশাও ছিল। তাই দিব্যার উচ্চতর ইংরেজি শিক্ষারও ব্যবস্থা তার মা-বাবাকে করতে হয়। দিব্যার শিক্ষায় অর্থ জোগাড় করতে তাদের টাকা ধার করতে হয়েছিল। গ্র্যাজুয়েশনের পর দিব্যা ভারতের সরকারি বেসামরিক বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ায় চাকরি পান। তিনি স্পেনে বিমান চালনার উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। লন্ডনে আরও প্রশিক্ষণ নিয়ে কোম্পানির ফ্ল্যাগশিপ বোয়িং ৭৭৭ এয়ারক্রাফট চালানো শুরু করেন। দিব্যার কৃতিত্ব কতটা তা বুঝতে হলে একটি পরিসংখ্যানের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সারা বিশ্বে এয়ারলাইনস পাইলটের সংখ্যা ১ লাখ ৪০ হাজার। তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ নারী পাইলট আছেন। তার মানে বিশ্বে পাইলটদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ হলেন নারী। এদের মধ্যে মাত্র ৪৫০ জন ক্যাপ্টেন। দিব্যার আদর্শ অনুসরণ করে আরও অনেক নারী আকাশ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে আসবেন এটাই প্রত্যাশা।