সদ্য শেষ হওয়া সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্য সব রাজনৈতিক দলকে ছাড়িয়ে গেছে। এরপরও প্রশ্ন উঠছে- এই প্রার্থীরা পরবর্তী কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে পারবে কিনা।
দলের নেতা ব্যারিস্টার গোহর আলী খানের মতে, তার দল জাতীয় পরিষদে ১৭০টি আসন পেয়েছে। তবে নির্বাচনী ফলাফলে কারচুপি করা হয়েছে।
নির্বাচন শেষ হওয়ার দুদিন পর রোববার জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ১০০ আসন, নওয়াজের মুসলিম লীগ ৭৩টি এবং পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন।
ব্যারিস্টার গোহরের এই বিবৃতি পিএমএল (এন) এর সুপ্রিম নেতা নওয়াজ শরিফ নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করার একদিন পরে এসেছে। নওয়াজের দাবি, নির্বাচনে তার দল বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। কৌশলগতভাবে নওয়াজের এই দাবি সঠিক। কারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগেই পিটিআইয়ের প্রতীক কেড়ে নেয় নির্বাচন কমিশন। তাই পিটিআইয়ের প্রার্থীরা বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেয়।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব লেজিসলেটিভ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সির (পিআইএলডিএটি) সভাপতি আহমেদ বিলাল মেহবুব বলেন, স্পষ্টতই, পিএমএল-এন বা পিপিপির মতো বড় রাজনৈতিক দলগুলির সাথে জোট না করে পিটিআই সরকার গঠন করতে পারবে না। কারণ জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবি করার জন্য এর প্রয়োজনীয় আসন নেই। দল হিসাবে জোট গঠন করতে চাইয়ে পিটিআইয়ের সমর্থিত প্রার্থীদের আবার দলে ফিরে আসতে হবে এবং তাদের দলীয় প্রতীক ফিরে পেতে হবে। কারণ নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, দল হিসাবে জোট গঠন করতে হলে সংশ্লিষ্ট দলটির নির্ধারিত প্রতীক থাকা বাধ্যতামূলক।
তিনি জানান, এমডব্লিউএম-এ যোগদানের পর সংরক্ষিত আসন পেতে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দিতে হবে। তাতে উল্লেখ করতে হবে, তারা এমডব্লিউএম বা অন্য কোনো দলে যোগ দিচ্ছে। এমডব্লিউএম বা তারা যে দলে যোগদান করবে তার প্রধান কমিশনকে লিখিতভাবে জানাতে হবে যে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গ্রহণ করেছেন। কমিশন ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এটি হতে পারে।
এমডব্লিউএম সবচেয়ে বেশি আসন পেলে সরকার গঠন করতে পারবে কিনা জানতে চাইলে মেহবুব জানান, সরকার গঠন করতে হলে একটি দলকে জাতীয় পরিষদে কমপক্ষে ১৬৯ আসন পেতে হবে। তবে সমস্যা হচ্ছে, পিটিআই এবং এমডব্লিউম জোট গঠন করলেও আসন সংখ্যা ১৬৯ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনে যারা দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে তারা সরকার গঠনের সুযোগ পাবে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ইমরান খান পিএমল কিংবা পিপির সঙ্গে জোট বাঁধতে চাচ্ছেন না। সেই হিসাবে ইমরানের দলের পক্ষে সরকার গঠন করা মহামুশকিলের বিষয়।