বার্লিনের অদূরে জার্মানির জাক্সেন আনহাল্ট অঙ্গরাজ্যের মাগদেবুর্গে খ্রীস্ট সম্প্রদায়ের বড়দিনের মার্কেটে গাড়ি হামলার ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত ও কমপক্ষে ৭০জন পথচারী আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।
শহরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্যস্ত ক্রিসমাস মার্কেটের পথচারীদের ওপর সজোরে গাড়ি তুলে দেয় এক হামলাকারী। ক্রিসমাস মার্কেটের কমপক্ষে ৪০০ মিটার জুড়ে গাড়ি হামলা চালানো হয় বলেও জানায় পুলিশের এই কর্মকর্তা।
হামলার পরপরই ঘটনাস্থল থেকেই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানা গেছে, হামলাকারী ৫০ বছর বয়সি সৌদি আরবের নাগরিক বলেও জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। হামলাকারী ২০০৬ সালে জার্মানিতে আসার পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ বলেছে, এই হামলাকারী জঙ্গিবাদী কি না, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে তদন্ত চলছে।
হামলার ঘটনার পর ম্যাগডেবুর্গ পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। এছাড়াও হামলায় ব্যবহৃত বিএমডব্লিউ ব্রান্ডের কালো গাড়িটিকে জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ, পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই গাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়ছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ছুটে আসেন স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা। হতাহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মাগদেবুর্গের ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকসহ আশেপাশের হাসপাতালগুলোতে। আহতদের অনেকের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই হামলার ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর, দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ অঙ্গরাজ্যটির মিনিস্টার প্রেসিডেন্ট রাইনার হাজেলফ ও দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
ম্যাগডেবুর্গ শহরের মেয়র সিমোন বোরিস বলেছেন, ‘আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি যে ম্যাগডেবুর্গ শহরে এমন একটি ঘটনা ঘটবে।’
ম্যাগডেবুর্গ শহরের ক্যাথলিক বিশপ গেরহার্ড ফেইজ হতাশা জানিয়েছেন। এই হামলা ভীতিকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জার্মান চ্যান্সেলর আগামীকাল রবিবার ম্যাগডেবুর্গ শহরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পরপরই সন্ত্রাসী হামলার আশংকায় জাক্সেন আনহাল্ট এর প্রতিবেশী থুইরিঙ্গেন অঙ্গরাজ্যের এয়ারফুর্টের বড়দিনের মার্কেট বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রদেশটির মার্কেট কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২০১৬ সালে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি ক্রিসমাসের মার্কেটে জনতার ভিড়ের মধ্যে লরী হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১২ জনকে হত্যা করে তিউনিসিয়ার বংশোদ্ভূত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী আনিস আমরি। তার সঙ্গে উগ্রবাদী ইসলামিক স্টেট-এর যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
অবিলম্বে হামলাকারীর বিস্তারিত পরিচয় ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি হতাহতের স্বজনদের।
এদিকে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন সেখানে বসবাসরত কয়েকজর স্বজনদের।