ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক দিন আগে গভীর সাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনের জন্য নতুন করে খননে (অফশোর ড্রিল) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর ফলে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুটা চাপে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকছে সমগ্র আটলান্টিক উপকূল এবং মেক্সিকোর পূর্ব-উপসাগর একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল ও আলাকার বেরিং সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার আগমুহূর্তে জলবায়ু নীতিমালার কর্মকাণ্ডের মধ্যে এটি বাইডেনের শেষ পেরেক। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প তার প্রচারে গ্যাসের খরচ কমানোর জন্য দেশীয় জীবাশ্ম জ¦ালানির উৎপাদন ‘মুক্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে জীবাশ্ম জ¦ালানি উত্তোলনে রেকর্ড গড়েছে। বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, উপকূলবাসী, বাণিজ্য এবং সৈকতপ্রেমীরা দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতির মুখে রয়েছে। মূলত তাদের সুরক্ষার লক্ষ্যে আমার এই সিদ্ধান্ত। এমনকি সাগরে যে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, তা রোধে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিবিসি বলছে, ট্রাম্প চলতি মাসের শেষদিকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। জলবায়ু সুরক্ষায় বাইডেন যে নীতি গ্রহণ করেছেন তা বদলের চিন্তা রয়েছে ট্রাম্পের। কিন্তু নতুন এই নিষেধাজ্ঞা সহসাই বাতিল করা রিপাবলিকানদের পক্ষে কঠিন হতে পারে। জো বাইডেন ১৯৫৩ সালের আউটার কন্টিনেন্টাল শেলফ ল্যান্ডস আইনের অধীনে এই পদক্ষেপটি নিয়েছেন। ২০১৯ সালের আদালতের রায় অনুযায়ী আইনটি তাদের পূর্বের নিষেধাজ্ঞাগুলো বাতিল করার আইনি সুরক্ষা দেয় নাই। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সাগরে খননের জন্য ইতোমধ্যে ইজারা দেওয়া কোনো অঞ্চল প্রত্যাহারের অনুমোদন দেয় না।
বাইডেন এই নীতি গ্রহণ করবেন বলে গত সপ্তাহেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। সেই সময় ট্রাম্পের নবনিযুক্ত প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এটিকে ‘অসম্মানজনক সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, এই পদক্ষেপটি আমেরিকান জনগণের ওপর কঠিন রাজনৈতিক প্রতিশোধের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বাইডেনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। সাগর সুরক্ষা সংস্থার জোসেফ গর্ডন বাইডেনের এই সিদ্ধান্তকে বলেছেন, এটি মহাসাগর বিজয়ের মহাকাব্য।