ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যে গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্রের বরাতে এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। সেই সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ইসরাইলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে।
এদিকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি জানান, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের জন্য একটি চুক্তি হয়েছে। তাদের (জিম্মিদের) শিগগিরই মুক্তি দেওয়া হবে। ধন্যবাদ!
এছাড়া আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একজন জ্যেষ্ঠ আরব কূটনীতিক টাইমস অব ইসরাইলকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর শিগগিরই একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে চুক্তির ঘোষণা দেবে।’
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানী দোহায় একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন এবং চুক্তির বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবেন।
এছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাপন্থি সশস্ত্র সংগঠন হামাসও গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের কথা জানিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার তথ্য মতে, হামাস নিশ্চিত করেছে, তারা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
এই সংগঠনটি আলজাজিরা আরবিকে জানিয়েছে, খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি চুক্তির বিষয়ে হামাসের অনুমোদনপত্র হস্তান্তর করেছে। যদিও এখনো ইসরাইলের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি।
তবে সূত্রের বরাতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, চুক্তিতে মোট ছয়টি ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।
প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। তখন বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। তখন থেকে গাজায় স্থানীয় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে এবং সামরিক বাহিনীকে উপত্যকাটি থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে থাকা নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরাইলের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং মিশরের তত্ত্বাবধানে গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।
এর আগে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতার আশা প্রকাশ করেছে, খুব শিগগিরই একটি চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। আলোচনায় সংশ্লিষ্ট মার্কিন ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারাও একই কথা বলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মার্কিন ও ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জানায়, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসরাইল।