ভারত শাসিত কাশ্মিরে ভারতীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বিক্ষোভে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়েছে বলে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করা হলেও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজকরা বলছেন, মঙ্গলবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। তারা লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে অবস্থান নিয়ে কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দেন।
বিক্ষোভের সময় ‘উই ওয়ান্ট ফ্রিডম’, ‘ফ্রিডম ইজ রাইট অব কাশ্মির’, ‘ইন্ডিয়া লিভ কাশ্মির’, ‘টেররিস্ট, টেররিস্ট, মোদি টেররিস্ট’, ‘সেভ কাশ্মির ফ্রম বিজেপি অ্যান্ড আরএসএস’, ‘কাশ্মিরিজ নিড জাস্টিস’ প্রভৃতি স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় হাইকমিশন ভবন লক্ষ্য করে ডিম, টমেটো, জুতা, বোতল, পাথরসহ ধোয়া সৃষ্টিকারী বোমা (স্মোকবোম্ব) নিক্ষেপ করে। এতে ভবনের বেশ কয়েকটি জানালা ভেঙে যায়।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের হামলার শিকার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে কয়েকটি ভাঙা জানালার ছবি প্রকাশ করেছে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশন। টুইটে বলা হয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর লন্ডনে আবারো ভারতীয় হাইকমিশনের বাইরে সহিংস বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভবন চত্বরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও টিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচির নাম দেয়া হয় #কাশ্মির_ফ্রিডম_মার্চ। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ার এলাকায় জড়ো হন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশন সামনে গিয়ে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিটেনের লেবার পার্টির কয়েকজন সংসদ সদস্য। বিক্ষোভকারীরা এসময় ‘কাশ্মিরে গোলাগুলি বন্ধ হোক’, ‘কাশ্মির নিয়ে জাতিসঙ্ঘের ব্যবস্থা নেয়ার সময় এসেছে’, ‘কাশ্মিরে যুদ্ধ বন্ধ হোক’, ‘স্বাধীনতা’-র স্লোগান দেয়ার পাশাপাশি উপত্যকা থেকে কারফিউ তুলে নেয়া এবং সেখানে ভারতীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের দাবিতে স্লোগান দেন তারা। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনী ও সরকারের নির্যাতনে বিপর্যয়ের শিকার মানুষদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের প্রতিবাদে লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশন ঘিরে বিক্ষোভ করেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। কাশ্মির ইস্যুতে দিল্লির সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আগে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তানি ও কাশ্মিরি পতাকা হাতে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে অবস্থান নেয়।