আন্দোলন কাকে বলে সেটি দেখিয়ে দিল হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। চীনে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত বিতর্কিত বিলটি অবশেষে বাতিল হতে যাচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম বুধবার বিল বাতিলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
দুই দিন আগে ল্যামের সঙ্গে হংকংয়ের ব্যবসায়ীদের একটি আলাপ ফাঁস করে রয়টার্স। ল্যাম সেখানে বলেন, বিলটি সামনে এনে তিনি অমার্জনীয় সর্বনাশ করে ফেলেছেন। সুযোগ থাকলে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতেন।
ওই বিলটি পাস হলে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত বাসিন্দাদের চীন, ম্যাকাউ এবং তাইওয়ানে বহিঃসমর্পণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ার রাখত হংকংয়ের আদালত।
সমালোচকেরা বলেন, একে কাজে লাগিয়ে চীন হংকংয়ের রাজনৈতিক বিরোধীদের বিপদে ফেলত।
শহরটির চীনপন্থী শাসকেরা আবার বিরোধীদের আশঙ্কাকে শুরুতে অস্বীকার করে। ধর্মীয় বা রাজনৈতিক কারণে কোনো বাসিন্দাকে অন্য কোনো দেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে দাবি তাদের। ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্তদের তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক নীতিমালা মানা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তারা।
ছুটিতে তাইওয়ান গিয়ে গর্ভবতী বান্ধবীকে খুন করে বাড়ি ফিরে আসা এক বাসিন্দাকে তাইপের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্যে হংকংয়ের চীনপন্থী শাসকেরা এ সংশোধনী বিল প্রস্তাব করেন।
বিলের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত গত কয়েক দশকে হংকংয়ের সবচেয়ে বড় আন্দোলনে পরিণত হয়। গণতন্ত্রের ডাকে সাধারণ মানুষ চীনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে।
হংকংয়ের রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুরোপুরি গণতান্ত্রিক নয়। বিক্ষোভকারীদের বিরোধিতার পেছনে সেটা একটা কারণ। তারা গণতান্ত্রিক সংস্কারের আহ্বান জানান।
অন্যদিকে চীন হংকংয়ের রাজনীতিতে বেশ কিছু হস্তক্ষেপ করেছে। বিক্ষোভের সেটিও একটি কারণ।
গোটা বিষয়টি নিয়ে দারুণ চাপে পড়ে চীন। ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে হংকংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর কখনো এত ঝামেলায় পড়েনি দেশটি। বিক্ষোভ দমাতে কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েও সফল হল না তারা।
বিল বিষয়ে চীন পিছু হটলেও হংকংয়ের সাধারণ মানুষ তাদের ‘দাদাগিরির’ বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন কি না, সেটি এখন দেখার বিষয়।