বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সবুজে আচ্ছাদিত পাহাড়, দূর থেকে বোঝার উপায় নেই এটা যে চা বাগান। যত সামনে এগোনো যায়, চোখে পড়ে ছোট-বড় নানা ধরনের গাছপালা। চা বাগানের মাঝে গাছগুলো সারি সারি সাজানো। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। কী সুন্দর লোভাছড়া! অনেকেই জাাফলং-এর চেয়েও সুন্দর বলে থাকেন জায়গাটিকে। এই সময়ে ঘুরে দেখার এটি সেরা জায়গা বটে!
অনিন্দ্য সুন্দর জায়গাটি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত। খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে স্বচ্ছ পানির নদীটিই মূলত লোভাছড়া। সবুজ পাহাড় আর লোভাছড়ার স্বচ্ছ পানি এখানকার পরিবেশকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। সঙ্গে রয়েছে ব্রিটিশ আমলে চালু হওয়া লোভাছড়া চা বাগান, ১৯২৫ সালে নির্মিত পুরনো ঝুলন্ত সেতু ও খাসিয়া গ্রাম। পাহাড়, নদী ও নীল আকাশের অপূর্ব মায়াজালে প্রাকৃতিকে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপহার দিয়েছে ‘রূপবতী’ লোভাছড়া।
আয়তনের দিক দিয়ে ছোট হলেও লেকগুলোর স্বচ্ছ পানি দেখে মন জুড়িয়ে যায়। এখানকার ঝরনার পানির ছল ছল শব্দ শুনে পর্যটকদের মন আনন্দে নেচে ওঠে। মহান মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে এই জায়গাটি। এই বাগানের নিজস্ব ফ্যাক্টরিটি পাকবাহিনীর তাণ্ডবে ধ্বংস হয়ে যায়। তাই এখানে গেলে কোনো চা প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি দেখা যাবে না বটে, তবে ধ্বংসাবশেষ চা ফ্যাক্টরি আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে সমৃদ্ধ করবে। লোভাছড়া সীমান্তে মোগল সাম্রাজ্যের রাজা-রানিদের অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। চোখাটিলা নামক একটি পাহাড়ের পাদদেশে একটি ঝরনার পাশে রয়েছে প্রাচীনকালের দুটি পাথর। এগুলোতে বসে রাজা-রানিরা লোভাছড়ার সৌন্দর্য নিবিড়ভাবে অবলোকন করতেন।
নির্দেশনা
ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেনে সিলেট যেতে পারবেন। লোভাছড়া যেতে হলে আপনাকে সিলেট জেলা সদর হয়ে কানাইঘাট উপজেলায় যেতে হবে। কানাইঘাট থেকে নদী বা সড়ক পথে যেতে হয় লোভাছড়া। জায়গাটিতে থাকার ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। সিলেট শহরে এসেই থাকতে হবে। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায় বলে পর্যটকরা সিলেট শহরে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সিলেট শহরে প্রয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের হোটেল পাওয়া যায়।