ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চা বিক্রি করেই ২৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এক দম্পতি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চা বিক্রি করে যেখানে অনেকের দু’বেলা অন্নের যোগাড় হয় না সেখানে দেশ-বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখতেও চান না চা বিক্রেতারা। তবে দুই পয়সার এই উপার্জনকেই সঞ্চয়ের মাধ্যমে ২৩ দেশ ভ্রমণ করেছেন এক দম্পতি। ভারতের কোচি শহরের সত্তরোর্ধ্ব দম্পতি বিজয়ান ও মোহনা৷ ওই শহরেই ‘শ্রী বালাজি কফি হাউজ’নামে তাদের একটি চায়ের দোকান রয়েছে।

শুনতে অবাক হলেও এই গল্প বাস্তব। আর ওই দম্পতির কথা তুলে এনেছেন ড্রু বিনস্কি নামের এক পর্যটক৷ জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা ভার্সন এক প্রতিবেদনে বলেছে, ড্রু বেড়াতে ভালোবাসেন এবং বেড়াতে গিয়ে নানা মজার ও ভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন করেন৷ সে রকমই কোচিতে গিয়ে ওই দম্পতির কথা তুলে ধরেন। প্রতিবেদনটি বলছে, ড্রু ভারতীয় চায়ের ভক্ত৷ কোচিতে ঘুরতে গিয়েই জানতে পারেন বিজায়ান ও মোহনার জীবনকাহিনী।

ভারতের কোচিতে ৫০ বছর ধরে বসবাস বিজায়নের। বয়স সত্তরে ঠেকলেও হিসাবটা ভালোই জানেন। দিনে দিনে জমান টাকা লাখ ছুঁলেই দেন ছুট। সঙ্গী তার স্ত্রী। একে একে ঘুরে এসেছেন সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পেরুসহ প্রায় ২৩টি দেশ। ৫৫ বছর আগে বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন বিজায়ান৷ তখন পুঁজি ছিল ভীষণ কম৷ তাই রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করতেন৷ এর ১০ বছর পর বিয়ে করেন মোহনাকে৷ বিজায়ানের স্বপ্নের সঙ্গে মোহনার স্বপ্নও যুক্ত হয়৷ ফলে এই দম্পতির পথচলাটা সহজ হয়েছে।

গত কয়েক দশক ধরে প্রতিদিন তিনশ’ টাকা করে সঞ্চয় করেছেন ওই দম্পতি৷ উদ্দেশ্য একটাই, বিদেশ ভ্রমণ৷ ব্যাংক থেকে ঋণ এবং জমানো অর্থ দিয়ে এ পর্যন্ত ২৩টি দেশ ঘুরেছেন তারা৷ প্রতিবার ঘুরতে যাওয়ার পরের তিন বছর তারা ব্যাংকের ঋণ শোধ করেন৷ ইউরোপ থেকে ল্যাটিন আমেরিকা, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, কিন্তু এখনো ভ্রমণের স্বপ্ন শেষ হয়নি তাদের৷

এখন টাকা জমাচ্ছেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, গ্রিনল্যান্ড, নরওয়ে যাবেন বলে। চা বিক্রির আয় দিয়ে এতগুলো দেশ ঘুরে এসেছেন বলে অনেকেই নাকি বিশ্বাস করতে চান না। বিজায়ন অবশ্য তাদের অবিশ্বাস ভাঙাতে ভারতীয় মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। বিজয়ন জানান, আমার দোকানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাহক আসেন। বিজায়ন ও তার স্ত্রী মোহনা শুধুমাত্র বিদেশ ভ্রমণ খাতে দৈনিক ৩০০ টাকা করে জমিয়ে বছরে ১ লাখ টাকা সঞ্চয় হয়। সেই টাকা দিয়ে বিদেশ ঘুরে আসেন এই দম্পতি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

চা বিক্রি করেই ২৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এক দম্পতি

আপডেট টাইম : ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চা বিক্রি করে যেখানে অনেকের দু’বেলা অন্নের যোগাড় হয় না সেখানে দেশ-বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখতেও চান না চা বিক্রেতারা। তবে দুই পয়সার এই উপার্জনকেই সঞ্চয়ের মাধ্যমে ২৩ দেশ ভ্রমণ করেছেন এক দম্পতি। ভারতের কোচি শহরের সত্তরোর্ধ্ব দম্পতি বিজয়ান ও মোহনা৷ ওই শহরেই ‘শ্রী বালাজি কফি হাউজ’নামে তাদের একটি চায়ের দোকান রয়েছে।

শুনতে অবাক হলেও এই গল্প বাস্তব। আর ওই দম্পতির কথা তুলে এনেছেন ড্রু বিনস্কি নামের এক পর্যটক৷ জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা ভার্সন এক প্রতিবেদনে বলেছে, ড্রু বেড়াতে ভালোবাসেন এবং বেড়াতে গিয়ে নানা মজার ও ভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন করেন৷ সে রকমই কোচিতে গিয়ে ওই দম্পতির কথা তুলে ধরেন। প্রতিবেদনটি বলছে, ড্রু ভারতীয় চায়ের ভক্ত৷ কোচিতে ঘুরতে গিয়েই জানতে পারেন বিজায়ান ও মোহনার জীবনকাহিনী।

ভারতের কোচিতে ৫০ বছর ধরে বসবাস বিজায়নের। বয়স সত্তরে ঠেকলেও হিসাবটা ভালোই জানেন। দিনে দিনে জমান টাকা লাখ ছুঁলেই দেন ছুট। সঙ্গী তার স্ত্রী। একে একে ঘুরে এসেছেন সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পেরুসহ প্রায় ২৩টি দেশ। ৫৫ বছর আগে বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন বিজায়ান৷ তখন পুঁজি ছিল ভীষণ কম৷ তাই রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করতেন৷ এর ১০ বছর পর বিয়ে করেন মোহনাকে৷ বিজায়ানের স্বপ্নের সঙ্গে মোহনার স্বপ্নও যুক্ত হয়৷ ফলে এই দম্পতির পথচলাটা সহজ হয়েছে।

গত কয়েক দশক ধরে প্রতিদিন তিনশ’ টাকা করে সঞ্চয় করেছেন ওই দম্পতি৷ উদ্দেশ্য একটাই, বিদেশ ভ্রমণ৷ ব্যাংক থেকে ঋণ এবং জমানো অর্থ দিয়ে এ পর্যন্ত ২৩টি দেশ ঘুরেছেন তারা৷ প্রতিবার ঘুরতে যাওয়ার পরের তিন বছর তারা ব্যাংকের ঋণ শোধ করেন৷ ইউরোপ থেকে ল্যাটিন আমেরিকা, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, কিন্তু এখনো ভ্রমণের স্বপ্ন শেষ হয়নি তাদের৷

এখন টাকা জমাচ্ছেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, গ্রিনল্যান্ড, নরওয়ে যাবেন বলে। চা বিক্রির আয় দিয়ে এতগুলো দেশ ঘুরে এসেছেন বলে অনেকেই নাকি বিশ্বাস করতে চান না। বিজায়ন অবশ্য তাদের অবিশ্বাস ভাঙাতে ভারতীয় মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। বিজয়ন জানান, আমার দোকানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাহক আসেন। বিজায়ন ও তার স্ত্রী মোহনা শুধুমাত্র বিদেশ ভ্রমণ খাতে দৈনিক ৩০০ টাকা করে জমিয়ে বছরে ১ লাখ টাকা সঞ্চয় হয়। সেই টাকা দিয়ে বিদেশ ঘুরে আসেন এই দম্পতি।