ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বন সুন্দরী পাখি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমাদের দেশের বন গুলোতে নানা ধরনের পাখির দেখা মেলে, চোখ জুড়ানো এমন নানা ধরনের পাখির অভয়ারণ্য আমাদের বাংলাদেশ। এমনই একটি চোখ জুড়ানো পাখির নাম বন সুন্দরী। পাখিটিকে নিঃসন্দেহে বনের সৌন্দর্য বলা যায়।

যে কেউ এই পাখিকে বনের অলংকার ও বলতে পারেন। পাখিটির নাম কেন বন সুন্দরী রাখা হলো এক নজরে দেখলে তা বুঝতে পারবেন। ভারতে এর নাম নওরঙ। আমাদের দেশের পাখি বিশারদগণ নাম দিয়েছে বন ও সুন্দরী ও দেশি শুমচা। বন সুন্দরীর ইংরেজি নাম ইন্ডিয়ান পিট্টা (indian pitta)। লম্বায় বন সুন্দরী ২০ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। লেজ একেবারেই খাটো।

প্রথম দেখাতে মনে হবে বুঝি ওদের লেজিই নেই। তবে খুব ভালো করে তাকালে লেজটা ধরা পড়বে। ওদের পালকে রয়েছে লাল, সাদা, কাল, হলু, নীল, সবুজ ও বাদামি রঙের সংমিশ্রণ। মাথার ওপর হলদে পট্টীর মতো। গলার নিচটা সাদা। চোখের দুপাশটা মোটা দাগের কাজল কালির টান দেওয়া। দাগটি একেবারে ঘাড়ে এসে ঠেকেছে। চোখের উপর রয়েছে সরূ সাদা টানা দাগ। পিঠ ও কাধ সবুজ। ঠোঁট কালো। ডানার শুরুটা নীল নিচের অংশটা বাদামি।

বুকের তলার নিচটা লালচে-বাদামি। লেজের পালক টুকটুকে লাল। পা ফিকে বেগুনি। সব সৌন্দর্য যেন ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি নিজ হাতে। পাতা ঝরা জঙ্গলের বাসিন্দা। মাটিতে পড়ে থাকা পাতা উল্টে পাল্টে খাবারের সন্ধান করে। এদের দীর্ঘ শক্তিশালী পা। এই পা দিয়ে মাটিতে লাফিয়ে চলে যখন লাফায় অতি সুন্দর লাগে। বনের মাটিতে এরা বেশি বিচরণ করে বনের ঝরে যাওয়া পাতা যখন পঁচে যায় তখন সেই পাতার নিচে পোকামাকড় ত জন্ম নেয় এরা বনের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে ঠোঁট দিয়ে খাবার খুঁজে বেড়ায়।

এরা একাকী চলতে বেশি পছন্দ করে, জোড়ায় জোড়ায় খুব কম দেখা যায় প্রজননের জন্য জোড়া বাজার পর থেকে এরা ব্যস্ত থাকে বাসা বানানো ও বংশ বৃদ্ধির জন্য। ইতিহাস থেকে জানা যায় আমাদের দেশে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা শালবনে সর্বপ্রথম এই পাখি নথিভূক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা মেলে। বগুড়াতে বন্যপ্রাণী গবেষক ক ফটোগ্রাফার আদনান আসিফ সর্বপ্রথম বনসুন্দরীর ছবি তোলেন। তার পর থেকে খুব কম সংখ্যক ফটোগ্রাফারই পাখিট্র ছবি তুলেছেন। কুষ্টিয়া, বগুড়া, মধুপুর বন, ও ঢাকার গাজীপুররে বেশ কয়েক বছর ধরে বনসুন্দরী দেখা যাচ্ছে তারা এই অঞ্চলগুলোতে প্রজনন করে সফলতার সঙ্গে বাচ্চা ফুটাচ্ছে। দউপরোক্ত ছবিটি তুলেছেন গাজীপুরের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার হাসিব খান।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এ পাখি প্রজনন করে থাকে প্রজননের জন্য মেয়ে পাখিটিকে আকর্ষণ করার জন্য মিষ্টি সুরে ডাকতে থাকে এরা ক্রমাগতভাবে মিষ্টি সুরে তার সঙ্গিনীকে ডেকে যায় এর মধ্যে মেয়ে পাখিটি পুরুষ পাখির ডাকে সাড়া দিয়ে থাকে।

সূত্র: মানবকণ্ঠ

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বন সুন্দরী পাখি

আপডেট টাইম : ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমাদের দেশের বন গুলোতে নানা ধরনের পাখির দেখা মেলে, চোখ জুড়ানো এমন নানা ধরনের পাখির অভয়ারণ্য আমাদের বাংলাদেশ। এমনই একটি চোখ জুড়ানো পাখির নাম বন সুন্দরী। পাখিটিকে নিঃসন্দেহে বনের সৌন্দর্য বলা যায়।

যে কেউ এই পাখিকে বনের অলংকার ও বলতে পারেন। পাখিটির নাম কেন বন সুন্দরী রাখা হলো এক নজরে দেখলে তা বুঝতে পারবেন। ভারতে এর নাম নওরঙ। আমাদের দেশের পাখি বিশারদগণ নাম দিয়েছে বন ও সুন্দরী ও দেশি শুমচা। বন সুন্দরীর ইংরেজি নাম ইন্ডিয়ান পিট্টা (indian pitta)। লম্বায় বন সুন্দরী ২০ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। লেজ একেবারেই খাটো।

প্রথম দেখাতে মনে হবে বুঝি ওদের লেজিই নেই। তবে খুব ভালো করে তাকালে লেজটা ধরা পড়বে। ওদের পালকে রয়েছে লাল, সাদা, কাল, হলু, নীল, সবুজ ও বাদামি রঙের সংমিশ্রণ। মাথার ওপর হলদে পট্টীর মতো। গলার নিচটা সাদা। চোখের দুপাশটা মোটা দাগের কাজল কালির টান দেওয়া। দাগটি একেবারে ঘাড়ে এসে ঠেকেছে। চোখের উপর রয়েছে সরূ সাদা টানা দাগ। পিঠ ও কাধ সবুজ। ঠোঁট কালো। ডানার শুরুটা নীল নিচের অংশটা বাদামি।

বুকের তলার নিচটা লালচে-বাদামি। লেজের পালক টুকটুকে লাল। পা ফিকে বেগুনি। সব সৌন্দর্য যেন ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি নিজ হাতে। পাতা ঝরা জঙ্গলের বাসিন্দা। মাটিতে পড়ে থাকা পাতা উল্টে পাল্টে খাবারের সন্ধান করে। এদের দীর্ঘ শক্তিশালী পা। এই পা দিয়ে মাটিতে লাফিয়ে চলে যখন লাফায় অতি সুন্দর লাগে। বনের মাটিতে এরা বেশি বিচরণ করে বনের ঝরে যাওয়া পাতা যখন পঁচে যায় তখন সেই পাতার নিচে পোকামাকড় ত জন্ম নেয় এরা বনের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে ঠোঁট দিয়ে খাবার খুঁজে বেড়ায়।

এরা একাকী চলতে বেশি পছন্দ করে, জোড়ায় জোড়ায় খুব কম দেখা যায় প্রজননের জন্য জোড়া বাজার পর থেকে এরা ব্যস্ত থাকে বাসা বানানো ও বংশ বৃদ্ধির জন্য। ইতিহাস থেকে জানা যায় আমাদের দেশে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা শালবনে সর্বপ্রথম এই পাখি নথিভূক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা মেলে। বগুড়াতে বন্যপ্রাণী গবেষক ক ফটোগ্রাফার আদনান আসিফ সর্বপ্রথম বনসুন্দরীর ছবি তোলেন। তার পর থেকে খুব কম সংখ্যক ফটোগ্রাফারই পাখিট্র ছবি তুলেছেন। কুষ্টিয়া, বগুড়া, মধুপুর বন, ও ঢাকার গাজীপুররে বেশ কয়েক বছর ধরে বনসুন্দরী দেখা যাচ্ছে তারা এই অঞ্চলগুলোতে প্রজনন করে সফলতার সঙ্গে বাচ্চা ফুটাচ্ছে। দউপরোক্ত ছবিটি তুলেছেন গাজীপুরের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার হাসিব খান।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এ পাখি প্রজনন করে থাকে প্রজননের জন্য মেয়ে পাখিটিকে আকর্ষণ করার জন্য মিষ্টি সুরে ডাকতে থাকে এরা ক্রমাগতভাবে মিষ্টি সুরে তার সঙ্গিনীকে ডেকে যায় এর মধ্যে মেয়ে পাখিটি পুরুষ পাখির ডাকে সাড়া দিয়ে থাকে।

সূত্র: মানবকণ্ঠ