ঢাকা , রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিমের সভা-‘জমি যার-বাঁধ তার’ নীতি কার্যকর চাই

বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অনেক বাঁধের কাজ না করার অভিযোগ এনে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারী প্রথা বাতিল ও পিআইসি’র কমিটি গঠনে নতুন নীতিমালা প্রণয়ণ করে, ‘জমি যার- বাঁধ তার’ এই নীতি প্রণয়ন করার দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেছেন,‘ঠিকাদার দিয়ে কাজ করতে হলে বাঁধের কাজ চলার সময় মনিটরিংয়ে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করতে হবে এবং পিআইসি’র ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। হাওরে যার জমি আছে, প্রকৃত কৃষক যারা, তাদের দিয়েই পিআইসি গঠন করতে হবে।’ ‘হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজে অনিয়ম -দুর্নীতি ও ধীরগতি এবং ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, ‘কৃষকদেরকে বাঁধ রক্ষার দায়িত্ব দিলে তারা নিজের ফসল রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। বাঁধের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে হবে না। বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বার বার দুর্নীতি হলেও কারো বিচার হয় না।’
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই ও ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণে  পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দলের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি, যুগ্মসচিব খলিলুর রহমান, যুগ্ম প্রধান মন্টু কুমার বিশ্বাস এবং পাউবো’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী তোফায়েল আহমদ।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. জাহেদুল হক, জেলা ও দায়রা জজ আদালদের পিপি ড. মো. খায়রুল কবির রুমেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল হক, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাংবাদিক পঙ্কজ কান্তি দে, বেসরকারি সংগঠন জনকল্যাণ’র নির্বাহী পরিচালক জামিল চৌধুরী, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব বিন্দু তালুকদার, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা, পিযুষ রঞ্জন পুরকায়স্থ টিটু, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন দিলীপ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শামীম চৌধুরী সামু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি’র নেতৃত্বে ৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল রোববার বিকালে সুনামগঞ্জে এসে      তদন্ত কাজ শুরু করছেন।
মতবিনিময় সভা শেষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি বলেন, ‘‘কৃষক সবচেয়ে বড় পরামর্শদাতা, তার প্রমাণ এই মতবিনিময় সভার মাধ্যমে পেলাম। অনেক পরামর্শ এসেছে। সুধীবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা সবাই মিলে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। আবেদন রেখেছি লিখিতভাবে আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য। সভার বক্তব্য আমরা নোট করেছি। অনেকগুলো সুপারিশ এসেছে, দুর্নীতির কথা এসেছে, এসেছে সমাধানের কথাও। এটা ঠিক যে এবারের বন্যা স্মরণকালের সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয়েছে। এই অবস্থা আমাদের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ যারা, তারাও দেখেননি। আমাদের তদন্ত দলের তিনটি মূল কাজ। একটা হলো কিভাবে এই ক্ষতি হয়েছে, কি কারণে হয়েছে, সেটা বের করা এবং এর জন্য  দায়ীদের চিহ্নিত করা, পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের দুর্যোগ বা মহাদুর্যোগ না হয় তার উপায় বের করা। কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। এটি বিশ্বাস করতে চাই আমরা।’
তিনি আরও বলেন, আজ সভায় যে কথাটা আলোচিত হয়েছে- ‘জমি যার- বাঁধ তার।’ এটা একটা স্লোগানের মতো, একটা নতুন আইডিয়া। বারবার বলা হয়েছে পিআইসি যেন সুবিধাভোগীদের নিয়ে করা হয়। টেন্ডার কমিটির স্বচ্ছতা এবং কিভাবে এটা সুষ্ঠুভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে মতামত এসেছে। খনন এবং রাবার ড্যামের কথা এসেছে। সর্বোপরি সহনশীল একটা ফসলের জাত উদ্ভাবনের ব্যাপারে মতামত এসেছে। সব কিছু মিলিয়ে সমাধান একবারেই হবে না, তবে আমরা যদি আন্তরিকভাবে সঠিক টার্গেটে থাকতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে একটা ভালো ফলাফল পাব। এই ফলাফল সুনামগঞ্জবাসী একটা মডেল হিসাবে সমগ্র হাওরবাসীর জন্য তৈরী করতে পারেন, উপহার দিতে পারেন সেই আশা করছি।’
তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সুনির্দিষ্ট মতামতসহ তদন্ত রিপোর্ট দেব। তবে সর্বক্ষেত্রেই আপনাদের সকলের সহযোগিতা দরকার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সকল কর্মকর্তা দোষী নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেক পুরনো প্রতিষ্ঠান। তারা ঐতিহ্যপূর্ণ ও গৌরবময় অনেক কাজ করেছেন। আবার সুনামেরও কিছু ঘাটতি আছে। এগুলো থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জে যেহেতু আমি একসময় জেলা প্রশাসক হিসাবে কাজ করেছি সেহেতু একটা নষ্টালজিয়া বা ভালোবাসার দিক কাজ করছে। অনেক বছর এখানে কাজ করেছি। দুটি বন্যা দেখেছি। প্রতি বছরই ঢল নামলে বাঁধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। যদি ঢল না নামে তাহলে বাঁধ কে করল, না করল, কেউ তাকায় না। এটি অনেকটা জুয়া খেলার মতো। কিন্তু আমরা প্রকৃতির হার জিতের মধ্যে না থেকে, একটা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে চাই, যাতে এ ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা পেতে পারি।’
এর আগে রোববার রাত ৮ টায় শহরের জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে শহরের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এই তদন্ত দলের সদস্যরা।
জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সালেহ আহমদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, অ্যাড. হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী, শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, জেলা সিপিবি’র সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন দিলীপ, কবি ইকবাল কাগজী, তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, সাইফুর রহমান সমসু, ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন, সুনামগঞ্জের খবরের বার্তা সম্পাদক বিন্দু তালুকদার, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মাসুম আল হেলাল, মাছরাঙা টিভি’র জেলা প্রতিনিধি এমরানুল হক চৌধুরী, আলোকিত বাংলাদেশ’র জেলা প্রতিনিধি আল হেলাল, সময় টিভি’র জেলা প্রতিনিধি হিমাদ্রি শেখর ভদ্র মিঠু প্রমুখ।
আগামীকাল মঙ্গলবার এই তদন্তদলের সদস্যগণ বিশ্বম্ভরপুরের করচার হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন এবং স্থানীয় কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিমের সভা-‘জমি যার-বাঁধ তার’ নীতি কার্যকর চাই

আপডেট টাইম : ০১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০১৭

বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অনেক বাঁধের কাজ না করার অভিযোগ এনে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারী প্রথা বাতিল ও পিআইসি’র কমিটি গঠনে নতুন নীতিমালা প্রণয়ণ করে, ‘জমি যার- বাঁধ তার’ এই নীতি প্রণয়ন করার দাবি জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেছেন,‘ঠিকাদার দিয়ে কাজ করতে হলে বাঁধের কাজ চলার সময় মনিটরিংয়ে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করতে হবে এবং পিআইসি’র ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। হাওরে যার জমি আছে, প্রকৃত কৃষক যারা, তাদের দিয়েই পিআইসি গঠন করতে হবে।’ ‘হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজে অনিয়ম -দুর্নীতি ও ধীরগতি এবং ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, ‘কৃষকদেরকে বাঁধ রক্ষার দায়িত্ব দিলে তারা নিজের ফসল রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। বাঁধের কাজ অন্য কাউকে দিয়ে হবে না। বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বার বার দুর্নীতি হলেও কারো বিচার হয় না।’
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই ও ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণে  পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দলের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি, যুগ্মসচিব খলিলুর রহমান, যুগ্ম প্রধান মন্টু কুমার বিশ্বাস এবং পাউবো’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী তোফায়েল আহমদ।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. জাহেদুল হক, জেলা ও দায়রা জজ আদালদের পিপি ড. মো. খায়রুল কবির রুমেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল হক, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাংবাদিক পঙ্কজ কান্তি দে, বেসরকারি সংগঠন জনকল্যাণ’র নির্বাহী পরিচালক জামিল চৌধুরী, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব বিন্দু তালুকদার, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা, পিযুষ রঞ্জন পুরকায়স্থ টিটু, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন দিলীপ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শামীম চৌধুরী সামু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি’র নেতৃত্বে ৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল রোববার বিকালে সুনামগঞ্জে এসে      তদন্ত কাজ শুরু করছেন।
মতবিনিময় সভা শেষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি বলেন, ‘‘কৃষক সবচেয়ে বড় পরামর্শদাতা, তার প্রমাণ এই মতবিনিময় সভার মাধ্যমে পেলাম। অনেক পরামর্শ এসেছে। সুধীবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা সবাই মিলে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। আবেদন রেখেছি লিখিতভাবে আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য। সভার বক্তব্য আমরা নোট করেছি। অনেকগুলো সুপারিশ এসেছে, দুর্নীতির কথা এসেছে, এসেছে সমাধানের কথাও। এটা ঠিক যে এবারের বন্যা স্মরণকালের সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয়েছে। এই অবস্থা আমাদের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ যারা, তারাও দেখেননি। আমাদের তদন্ত দলের তিনটি মূল কাজ। একটা হলো কিভাবে এই ক্ষতি হয়েছে, কি কারণে হয়েছে, সেটা বের করা এবং এর জন্য  দায়ীদের চিহ্নিত করা, পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের দুর্যোগ বা মহাদুর্যোগ না হয় তার উপায় বের করা। কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। এটি বিশ্বাস করতে চাই আমরা।’
তিনি আরও বলেন, আজ সভায় যে কথাটা আলোচিত হয়েছে- ‘জমি যার- বাঁধ তার।’ এটা একটা স্লোগানের মতো, একটা নতুন আইডিয়া। বারবার বলা হয়েছে পিআইসি যেন সুবিধাভোগীদের নিয়ে করা হয়। টেন্ডার কমিটির স্বচ্ছতা এবং কিভাবে এটা সুষ্ঠুভাবে করা যায়, সে ব্যাপারে মতামত এসেছে। খনন এবং রাবার ড্যামের কথা এসেছে। সর্বোপরি সহনশীল একটা ফসলের জাত উদ্ভাবনের ব্যাপারে মতামত এসেছে। সব কিছু মিলিয়ে সমাধান একবারেই হবে না, তবে আমরা যদি আন্তরিকভাবে সঠিক টার্গেটে থাকতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে একটা ভালো ফলাফল পাব। এই ফলাফল সুনামগঞ্জবাসী একটা মডেল হিসাবে সমগ্র হাওরবাসীর জন্য তৈরী করতে পারেন, উপহার দিতে পারেন সেই আশা করছি।’
তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সুনির্দিষ্ট মতামতসহ তদন্ত রিপোর্ট দেব। তবে সর্বক্ষেত্রেই আপনাদের সকলের সহযোগিতা দরকার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সকল কর্মকর্তা দোষী নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেক পুরনো প্রতিষ্ঠান। তারা ঐতিহ্যপূর্ণ ও গৌরবময় অনেক কাজ করেছেন। আবার সুনামেরও কিছু ঘাটতি আছে। এগুলো থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জে যেহেতু আমি একসময় জেলা প্রশাসক হিসাবে কাজ করেছি সেহেতু একটা নষ্টালজিয়া বা ভালোবাসার দিক কাজ করছে। অনেক বছর এখানে কাজ করেছি। দুটি বন্যা দেখেছি। প্রতি বছরই ঢল নামলে বাঁধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। যদি ঢল না নামে তাহলে বাঁধ কে করল, না করল, কেউ তাকায় না। এটি অনেকটা জুয়া খেলার মতো। কিন্তু আমরা প্রকৃতির হার জিতের মধ্যে না থেকে, একটা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে চাই, যাতে এ ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা পেতে পারি।’
এর আগে রোববার রাত ৮ টায় শহরের জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে শহরের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এই তদন্ত দলের সদস্যরা।
জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সালেহ আহমদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, অ্যাড. হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী, শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, জেলা সিপিবি’র সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন দিলীপ, কবি ইকবাল কাগজী, তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, সাইফুর রহমান সমসু, ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন, সুনামগঞ্জের খবরের বার্তা সম্পাদক বিন্দু তালুকদার, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মাসুম আল হেলাল, মাছরাঙা টিভি’র জেলা প্রতিনিধি এমরানুল হক চৌধুরী, আলোকিত বাংলাদেশ’র জেলা প্রতিনিধি আল হেলাল, সময় টিভি’র জেলা প্রতিনিধি হিমাদ্রি শেখর ভদ্র মিঠু প্রমুখ।
আগামীকাল মঙ্গলবার এই তদন্তদলের সদস্যগণ বিশ্বম্ভরপুরের করচার হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন এবং স্থানীয় কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।