ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যৌন নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মাঝে যৌন অপরাধ নির্মূলে জাতিসংঘের মহাসচিবের যথাযথ পদক্ষেপের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ভিকটিম সাপোর্ট ফান্ডে ১ লাখ ডলার প্রতীকী চাঁদার ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা সদস্য ও পুলিশ সদস্য নিয়োগকারী হিসেবে আমরা যৌন নির্যাতন ও অপরাধ বন্ধের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করি। এ অভিযোগে আমাদের অবস্থান হচ্ছে জিরো টলারেন্স।’

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে যৌন নির্যাতন ও অপরাধ দমন শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তিনি যৌন অপরাধ প্রতিরোধে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের তাদের নিজ খরচে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের ভাতা বন্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিয়োগপূর্ব প্রশিক্ষণে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে সুরক্ষাকে একটি অবিচ্ছেদ্য বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যৌন অপরাধের অভিযোগে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের দেয়া হয়েছে। তারা মিশন এলাকায় যেকোন অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করতে পারবে। বাংলাদেশী কোনও শান্তিরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা মিশন এলাকার সর্বোচ্চ সিনিয়র কর্মকর্তার রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের ২ লাখ নারীর ওপর নির্যাতনের জঘন্য অপরাধের উল্লেখ করেন।

তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত এই নারীদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় পদক্ষেপের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ওই নারীদের বীরাঙ্গণা খেতাব দিয়েছেন। আমরা এই হিংস্র অপরাধের সঙ্গে জড়িত দালালদের বিচার করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এটি আমাদের দৃঢ় নৈতিক মূল্যবোধ, উৎসাহব্যঞ্জক অনুপ্রেরণা ও উচ্চমানের শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি যে, যৌননির্যাতনের শিকার সবাই ন্যায় বিচার লাভ ও পুনর্বাসনের দাবিদার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং জনগণের ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় শান্তিরক্ষা সহায়ক কার্যক্রমে অনুসরণীয় (টেন্ডসেটার) হয়ে উঠেছে। ১৩২ জন বীর সন্তানের আত্মত্যাগের মাধ্যমে শান্তিরক্ষার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সভাপতি মিরসলভ লাজকাক বক্তৃতা করেন।

এ ছাড়া ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নানিস্টো, উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট তাবরে ভাজকুয়েজ, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাইলেমারিয়াম ডেসালেগন বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে নারী নির্যাতন এ সম্পর্কিত অপরাধ দমনের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রদর্শিত হয়।

সূত্র : বাসস

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যৌন নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ

আপডেট টাইম : ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মাঝে যৌন অপরাধ নির্মূলে জাতিসংঘের মহাসচিবের যথাযথ পদক্ষেপের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ভিকটিম সাপোর্ট ফান্ডে ১ লাখ ডলার প্রতীকী চাঁদার ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা সদস্য ও পুলিশ সদস্য নিয়োগকারী হিসেবে আমরা যৌন নির্যাতন ও অপরাধ বন্ধের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করি। এ অভিযোগে আমাদের অবস্থান হচ্ছে জিরো টলারেন্স।’

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে যৌন নির্যাতন ও অপরাধ দমন শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তিনি যৌন অপরাধ প্রতিরোধে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের তাদের নিজ খরচে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের ভাতা বন্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিয়োগপূর্ব প্রশিক্ষণে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে সুরক্ষাকে একটি অবিচ্ছেদ্য বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যৌন অপরাধের অভিযোগে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের দেয়া হয়েছে। তারা মিশন এলাকায় যেকোন অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করতে পারবে। বাংলাদেশী কোনও শান্তিরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা মিশন এলাকার সর্বোচ্চ সিনিয়র কর্মকর্তার রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের ২ লাখ নারীর ওপর নির্যাতনের জঘন্য অপরাধের উল্লেখ করেন।

তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত এই নারীদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় পদক্ষেপের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ওই নারীদের বীরাঙ্গণা খেতাব দিয়েছেন। আমরা এই হিংস্র অপরাধের সঙ্গে জড়িত দালালদের বিচার করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এটি আমাদের দৃঢ় নৈতিক মূল্যবোধ, উৎসাহব্যঞ্জক অনুপ্রেরণা ও উচ্চমানের শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি যে, যৌননির্যাতনের শিকার সবাই ন্যায় বিচার লাভ ও পুনর্বাসনের দাবিদার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং জনগণের ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় শান্তিরক্ষা সহায়ক কার্যক্রমে অনুসরণীয় (টেন্ডসেটার) হয়ে উঠেছে। ১৩২ জন বীর সন্তানের আত্মত্যাগের মাধ্যমে শান্তিরক্ষার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সভাপতি মিরসলভ লাজকাক বক্তৃতা করেন।

এ ছাড়া ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নানিস্টো, উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট তাবরে ভাজকুয়েজ, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাইলেমারিয়াম ডেসালেগন বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে নারী নির্যাতন এ সম্পর্কিত অপরাধ দমনের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রদর্শিত হয়।

সূত্র : বাসস