ঢাকা , শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজ জন্মভূমি মিঠামইনের হাওরাঞ্চল ঘুরে এসে

জাকির হোসাইন : এখানে আকাশ নীল- নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল ফুটে থাকে হিম শাদা- রং তার আশ্বিনের আলোর মতন; আকন্দফুলের কালো ভীমরুল এইখানে করে গুঞ্জরণ রৌদ্রের দুপুর ভ’রে;- বারবার রোদ তার সুচিক্বণ চুল কাঁঠাল জামের বুকে নিঙড়ায়ে;- দহে বিলে চঞ্চল আঙুল বুলায়ে বুলায়ে ফেরে এইখানে জাম লিচু কাঁঠালের বন, রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ‘এখানে আকাশ নীল’র প্রতিটি পংক্তি মূর্ত হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওর এলাকায়।
যেখানে অনন্য ঋতু শরতে হাওরের নীল জলরাশি আর সাদা মেঘ ওড়া আকাশনীলের অপূর্ব সম্মিলন তৈরি করে অপূর্ব সৌন্দর্য।
হাওরাঞ্চলে নীল আকাশের সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের সবসময় মুগ্ধ করলেও, শরতের বর্ষায় হাওরের বিস্তীর্ণ নীলাভ জলরাশির সঙ্গে সাদা মেঘ ওড়া আকাশ নীলের মিলিত সৌন্দর্য আরো বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
শরতের এ সময়টায় হাওরে নৌকায় বসে তপ্ত দুপুরে রোদের ঝিলিক আর মাঝে-মধ্যেই নীল আকাশে দলছুট সাদা মেঘের ওড়াওড়ি মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলার মতো। শরতে হাওরের আকাশ আর নীলের এ মিতালি অবলোকন কর‍া যায় হাওরের যেকোনো স্থান থেকে।
সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, মিঠামইন -অষ্টগ্রাম-ইটনা- নিকলী এ চার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। যতোদূর চোখ যায় পানি আর পানি, আর মাথার ওপরে আকাশে নীলের ভিড়ে সাদা মেঘের ভেলা।
বিস্তীর্ণ হাওরে কোথাও কোথাও কিছু বসতি, দূর থেকে দেখলে মনে হয় কোনো দ্বীপ। এসব বসতিতে বসবাসকারী মানুষের বর্ষার পুরোটা সময় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার।
বর্ষায়, বিশেষ করে শরতে হাওরের সৌন্দর্য এখানকার বাসিন্দাদের তেমন আলোড়িত করে না। তবে প্রতিনিয়তই হাওরের রূপ-সুধা পান করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছুটে ‍আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
ভরা বর্ষায় হাওরের ভরদুপুরের সৌন্দর্যও দেখার মতো। মাঝে-মধ্যেই মৃদু বাতাসে হাওরের পানিতে ছোট ছোট ঢেউ খেলা করে। বয়ে যায় হালকা শীতল হাওয়া। এর টানেই ছুটে আসেন পর্যটকরা। ঘুরে বেড়ান হাওরের বুকে, দ্বীপসদৃশ লোকালয়ে।
হাওর নিয়ে হাওর বার্তার সম্পাদক জাকির হোসাইন কিছু লেখা তুলে ধরার চেষ্টা করে ভাটির মানুষকে বুজাতে।
লেখক হাওর বার্তাকে জানান, হাওর বাংলাদেশের নাভিমূল। হাওরের আকাশ-বাতাস, প্রকৃতিই হলো বাংলাদেশ। হাওরকে না দেখলে বাংলাকে চেনা যাবে না। বাংলার প্রকৃত রূপ দেখতে হলে হাওরে আসা উচিত বলে মত তার।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নিজ জন্মভূমি মিঠামইনের হাওরাঞ্চল ঘুরে এসে

আপডেট টাইম : ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জাকির হোসাইন : এখানে আকাশ নীল- নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল ফুটে থাকে হিম শাদা- রং তার আশ্বিনের আলোর মতন; আকন্দফুলের কালো ভীমরুল এইখানে করে গুঞ্জরণ রৌদ্রের দুপুর ভ’রে;- বারবার রোদ তার সুচিক্বণ চুল কাঁঠাল জামের বুকে নিঙড়ায়ে;- দহে বিলে চঞ্চল আঙুল বুলায়ে বুলায়ে ফেরে এইখানে জাম লিচু কাঁঠালের বন, রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ‘এখানে আকাশ নীল’র প্রতিটি পংক্তি মূর্ত হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওর এলাকায়।
যেখানে অনন্য ঋতু শরতে হাওরের নীল জলরাশি আর সাদা মেঘ ওড়া আকাশনীলের অপূর্ব সম্মিলন তৈরি করে অপূর্ব সৌন্দর্য।
হাওরাঞ্চলে নীল আকাশের সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের সবসময় মুগ্ধ করলেও, শরতের বর্ষায় হাওরের বিস্তীর্ণ নীলাভ জলরাশির সঙ্গে সাদা মেঘ ওড়া আকাশ নীলের মিলিত সৌন্দর্য আরো বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
শরতের এ সময়টায় হাওরে নৌকায় বসে তপ্ত দুপুরে রোদের ঝিলিক আর মাঝে-মধ্যেই নীল আকাশে দলছুট সাদা মেঘের ওড়াওড়ি মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলার মতো। শরতে হাওরের আকাশ আর নীলের এ মিতালি অবলোকন কর‍া যায় হাওরের যেকোনো স্থান থেকে।
সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, মিঠামইন -অষ্টগ্রাম-ইটনা- নিকলী এ চার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন বর্ষার পানিতে টইটম্বুর। যতোদূর চোখ যায় পানি আর পানি, আর মাথার ওপরে আকাশে নীলের ভিড়ে সাদা মেঘের ভেলা।
বিস্তীর্ণ হাওরে কোথাও কোথাও কিছু বসতি, দূর থেকে দেখলে মনে হয় কোনো দ্বীপ। এসব বসতিতে বসবাসকারী মানুষের বর্ষার পুরোটা সময় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলার।
বর্ষায়, বিশেষ করে শরতে হাওরের সৌন্দর্য এখানকার বাসিন্দাদের তেমন আলোড়িত করে না। তবে প্রতিনিয়তই হাওরের রূপ-সুধা পান করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছুটে ‍আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
ভরা বর্ষায় হাওরের ভরদুপুরের সৌন্দর্যও দেখার মতো। মাঝে-মধ্যেই মৃদু বাতাসে হাওরের পানিতে ছোট ছোট ঢেউ খেলা করে। বয়ে যায় হালকা শীতল হাওয়া। এর টানেই ছুটে আসেন পর্যটকরা। ঘুরে বেড়ান হাওরের বুকে, দ্বীপসদৃশ লোকালয়ে।
হাওর নিয়ে হাওর বার্তার সম্পাদক জাকির হোসাইন কিছু লেখা তুলে ধরার চেষ্টা করে ভাটির মানুষকে বুজাতে।
লেখক হাওর বার্তাকে জানান, হাওর বাংলাদেশের নাভিমূল। হাওরের আকাশ-বাতাস, প্রকৃতিই হলো বাংলাদেশ। হাওরকে না দেখলে বাংলাকে চেনা যাবে না। বাংলার প্রকৃত রূপ দেখতে হলে হাওরে আসা উচিত বলে মত তার।