বঙ্গবন্ধু হত্যার দায় জাসদ পরোক্ষভাবে এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম। তিনি বলেন, যুদ্ধ-পরবর্তী জাসদ যে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল তা বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকে ত্বরান্বিত করেছে। অর্থাৎ যুদ্ধকালীন খোন্দকার মোশতাক যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন তা জাসদের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে ঘনীভূত করতে পেরেছেন স্বাধীন বাংলাদেশে।
জাফর ইমাম আরও বলেন, ”৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালীন যারা মুজিব বাহিনীতে ছিলেন তাদেরই একটা বড় অংশ জাসদ সৃষ্টি করেছেন। এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি প্রথম আঘাত। মূলত আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ ও নেতা-কর্মী জাসদে যোগ দেয় যা পরবর্তীতে গণবাহিনীতে রূপ নেয়। এর ফলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। আর এ ধারাবাহিকতায় ষড়যন্ত্র বেগবান করে মোশতাক গং। ৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে প্রত্যাবর্তনের পর মোশতাককে মন্ত্রিসভায় রাখেন। এতে করে অনেকটাই বিস্মিত হই। হয়তো মুক্তিযুদ্ধকালীন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে মোশতাকের ষড়যন্ত্রের কথা জানানো হয়নি তাকে। পরবর্তীতে সর্বহারা পার্টির মতো জাসদ রূপ নেয় গণবাহিনীতে। ব্যাংক ডাকাতি থেকে শুরু করে ঈদের নামাজে এমপি হত্যার মতো কার্যকলাপ চালায় তারা। দেশব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করে এই গণবাহিনী। রাজনৈতিক এই বিশৃঙ্খলার সুযোগ বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকে ত্বরান্বিত করেছে। ফলে মোশতাকের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জাসদ জড়িত না থাকলেও পরোক্ষভাবে এ হত্যার দায় এড়াতে পারে না তারা। তবে এটাও সত্য, সেই দিনের সাংগঠনিকভাবে মজবুত জাসদ এখন আর নেই।”
উল্লেখ্য, জাফর ইমামের ‘দাম দিয়ে কিনেছি এ বাংলা’— বইটিতে মোশতাকের ষড়যন্ত্র ও জাসদের হঠকারী ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন