ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নীতি-আদর্শের পথে থেকেই আওয়ামী লীগ আজ সফল

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নীতি-আদর্শের পথে ছিল বলেই আওয়ামী লীগ আজ সফল। দলের ক্রান্তিকালে তৃণমূলের নেতারা বারবার সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় কেউ দলের ক্ষতি করতে পারেনি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত থাকায় দল সফলতা পেয়েছে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবাই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু যতবার আওয়ামী লীগ ভাঙার চেষ্টা হয়েছে, ততবারই দলটি স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় দলীয় নেতাকর্মীদের ভোগ ভুলে ত্যাগের এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে রাজনীতি করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও অর্থনীতিবিদ ড. অনুপম সেন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। আলোচনা সভা ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা অর্পণসহ নানা কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেন নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে শীর্ষস্থানীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি বলে মন্তব্য করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই দলের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, তবে আওয়ামী লীগের শেকড় এত শক্ত যে ইচ্ছা করলেই উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। এর অবদান তৃণমূল নেতাকর্মীদের। যতবার এই দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হয়েছে ততবার আরও উজ্জ্বল হয়েছে। আঘাত আমাদের বিরুদ্ধে বারবার এসেছে, সব আঘাত সহ্য করে আমরা এগিয়ে গেছি। হয়তো উপরের নেতারা ভুল করেছেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা কখনও ভুল করেননি। সব নির্দেশনা মেনে তারা কাজ করে গেছেন।

আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশে যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল, তাদের জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসান। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে খুনি রশীদ ও হুদাকে সংসদ সদস্য করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের মন্ত্রী করেছিলেন। তার আগে খুনিদের, দেশ বিরোধীদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে আনেন এবং রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। এক্ষেত্রে জেনারেল এরশাদও কম যাননি।

সংগ্রাম করেই আওয়ামী লীগকে যুগে যুগে টিকে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, খালেদা জিয়া সরকারে থাকার সময় বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। তার অপশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। বাঙালির প্রতি অর্জনেই আওয়ামী লীগের অবদান রয়েছে, সংগ্রাম রয়েছে। ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতাসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখন সেই সংগঠনই জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, এই দেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে যাই বলুক না কেন আওয়ামী লীগ সব সময় নীতি আদর্শ নিয়ে চলেছে। সে কারণেই আওয়ামী লীগকে কেউ দমাতে পারেনি, ঠেকাতে পারেনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং দেশ পরিচালনা করছে। ব্যক্তি বা দলের চেয়ে দেশের মানুষ বড় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া দেখলে নিজের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে কিন্তু দেশ ও মানুষকে কিছু দিতে পারবে না। একজন নেতা যদি ত্যাগ স্বীকার করতে না পারে, তার যদি ভোগের দিকে মন চলে যায় তাহলে দেশকে কিছুই দিতে পারবেন না। অতীতেও পারেননি। এটা প্রমাণিত সত্য। এর প্রমাণ বঙ্গবন্ধু নিজেই দিয়ে গেছেন। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। সেদিন ত্যাগ করেছিলেন বলেই তিনি তার উদ্দেশ্যে সফল হয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫’র পর থেকে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের ভোগবিলাসে বেশি ব্যস্ত ছিল বলে দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ পারে। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য ভাবে। তিনি বলেন, আমি বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। আমার আর হারানোর কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। পাওয়ার আকাক্সক্ষা নিয়ে রাজনীতি করি না।

পিতা-মাতা-ভাই হারানোর যে ব্যথা তা শক্তি হিসেবে সঞ্চয় করেছি। যে দেশের জন্য, যে দেশের মানুষের জন্য, আমার বাবা-মা-ভাই জীবন দিয়ে গেছেন সেই দেশের, সেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে বলে আজ বাংলাদেশ আÍমর্যাদাশীল দেশ। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনায় আমাদের একটা লক্ষ্য আছে, নীতিমালা আছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে কী করব সেই পরিকল্পনা আছে। তাই যখনই আমরা ক্ষমতায় এসেছি। নীতিমালা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

নিজের জীবনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি চিন্তা করি আমার দেশের একেকজন মানুষের কথা। ১৯৮১ সালে যখন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়েছি, তখন দেখেছি এ দেশের মানুষ ঠিকমতো তিন বেলা খেতে পায় না, চিকিৎসা পায় না, পরার কাপড় পায় না, শিক্ষা পায় না। তখন থেকেই চিন্তা করেছি। এ দেশের মানুষকে দু’বেলা খাবার দিতে হবে, থাকার ঘর দিতে হবে, শিক্ষা দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে। তাদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার দিতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই যতগুলো পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, তার প্রতিটি এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য।

এদিকে ক্ষমতাসীন দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ও দলের নেতাদের পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন দিয়েই শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। পরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা উন্মুক্তকরণ ও বেলুন উড়ানো হয়।

সংসদে আলোচনা : সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ঠেকাতে সবার সহযোগিতা চাই- প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার জানান, জঙ্গিবাদ ঠেকাতে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে দাবি করে তিনি বলেছেন, সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে, সুরক্ষিত করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় আমরা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে পেরেছি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে পেরেছি। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে এগোতে হয়েছে। বারবার আঘাত এসেছে। শহীদের তালিকাও যদি দেখি, তাহলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ প্রতিটি আন্দোলনে জীবন দিয়ে গেছে। সব ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সব সময় আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে রেখেছে। সরকারের গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল এই বাংলাদেশ নিয়ে- ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে, আমি বিশ্বাস করি, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে পারব। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটা উন্নত দেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের মানুষ বাইরে গেলে শুনত বাংলাদেশ মানেই দরিদ্র দেশ, ভিক্ষুকের দেশ, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস-দুর্বিপাকের দেশ। বাংলাদেশকে হাত পেতে চলতে হতো। আজ বাংলাদেশকে ইনশাআল্লাহ কারও কাছে হাত পেতে চলতে হয় না। সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। এক একটা দলের এক একটা নীতি থাকে। আওয়ামী লীগের নীতি হল জাতির পিতা যে পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই পথ। যে পথে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত করে একটা উন্নত জীবন দেবে। এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। তাই আমরা সরকারে কিংবা বিরোধী দলে যেখানেই থাকি না কেন, সব সময় জনগণের কল্যাণের জন্যই কাজ করি। আর এটা করেছি বলেই ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের ইতিহাস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। আবার একটি দেশ স্বাধীন করা এবং স্বাধীন দেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা সব সময় আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে। সমর্থন দিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের নৌর্কা মার্কায় ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে বলেই আমরা আজ দেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম হচ্ছি।

ভারতের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হল একমাত্র ব্যতিক্রম দেশ। বঙ্গবন্ধুর মতো স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন বলেই মিত্র শক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ফিরিয়ে নিতে হয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। ইন্দিরা গান্ধীও একজন স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন এবং তার মিত্র বাহিনী ফেরত নিয়ে গেলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা আর কোথাও হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এই বাংলাদেশকে নিয়ে। কাজেই আমি বিশ্বাস করি, সেদিন বেশিদূরে নয়, আমরা ২০২১ সালের মধ্যেই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে পারব। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উন্নত দেশ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে এই অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দল কোনো দেশে চার-চারটি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেনি। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল এই দেশে চারটি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি সামরিক সরকাররা করেছে, অন্য কেউ তা করেনি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নীতি-আদর্শের পথে থেকেই আওয়ামী লীগ আজ সফল

আপডেট টাইম : ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুন ২০১৬

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নীতি-আদর্শের পথে ছিল বলেই আওয়ামী লীগ আজ সফল। দলের ক্রান্তিকালে তৃণমূলের নেতারা বারবার সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় কেউ দলের ক্ষতি করতে পারেনি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত থাকায় দল সফলতা পেয়েছে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সবাই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু যতবার আওয়ামী লীগ ভাঙার চেষ্টা হয়েছে, ততবারই দলটি স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় দলীয় নেতাকর্মীদের ভোগ ভুলে ত্যাগের এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে রাজনীতি করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও অর্থনীতিবিদ ড. অনুপম সেন। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। আলোচনা সভা ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা অর্পণসহ নানা কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেন নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে শীর্ষস্থানীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি বলে মন্তব্য করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই দলের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, তবে আওয়ামী লীগের শেকড় এত শক্ত যে ইচ্ছা করলেই উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। এর অবদান তৃণমূল নেতাকর্মীদের। যতবার এই দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হয়েছে ততবার আরও উজ্জ্বল হয়েছে। আঘাত আমাদের বিরুদ্ধে বারবার এসেছে, সব আঘাত সহ্য করে আমরা এগিয়ে গেছি। হয়তো উপরের নেতারা ভুল করেছেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা কখনও ভুল করেননি। সব নির্দেশনা মেনে তারা কাজ করে গেছেন।

আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশে যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল, তাদের জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসান। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে খুনি রশীদ ও হুদাকে সংসদ সদস্য করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের মন্ত্রী করেছিলেন। তার আগে খুনিদের, দেশ বিরোধীদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে আনেন এবং রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। এক্ষেত্রে জেনারেল এরশাদও কম যাননি।

সংগ্রাম করেই আওয়ামী লীগকে যুগে যুগে টিকে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, খালেদা জিয়া সরকারে থাকার সময় বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। তার অপশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। বাঙালির প্রতি অর্জনেই আওয়ামী লীগের অবদান রয়েছে, সংগ্রাম রয়েছে। ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতাসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখন সেই সংগঠনই জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, এই দেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে যাই বলুক না কেন আওয়ামী লীগ সব সময় নীতি আদর্শ নিয়ে চলেছে। সে কারণেই আওয়ামী লীগকে কেউ দমাতে পারেনি, ঠেকাতে পারেনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং দেশ পরিচালনা করছে। ব্যক্তি বা দলের চেয়ে দেশের মানুষ বড় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া দেখলে নিজের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে কিন্তু দেশ ও মানুষকে কিছু দিতে পারবে না। একজন নেতা যদি ত্যাগ স্বীকার করতে না পারে, তার যদি ভোগের দিকে মন চলে যায় তাহলে দেশকে কিছুই দিতে পারবেন না। অতীতেও পারেননি। এটা প্রমাণিত সত্য। এর প্রমাণ বঙ্গবন্ধু নিজেই দিয়ে গেছেন। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। সেদিন ত্যাগ করেছিলেন বলেই তিনি তার উদ্দেশ্যে সফল হয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫’র পর থেকে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের ভোগবিলাসে বেশি ব্যস্ত ছিল বলে দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ পারে। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য ভাবে। তিনি বলেন, আমি বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। আমার আর হারানোর কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। পাওয়ার আকাক্সক্ষা নিয়ে রাজনীতি করি না।

পিতা-মাতা-ভাই হারানোর যে ব্যথা তা শক্তি হিসেবে সঞ্চয় করেছি। যে দেশের জন্য, যে দেশের মানুষের জন্য, আমার বাবা-মা-ভাই জীবন দিয়ে গেছেন সেই দেশের, সেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে বলে আজ বাংলাদেশ আÍমর্যাদাশীল দেশ। তিনি বলেন, দেশ পরিচালনায় আমাদের একটা লক্ষ্য আছে, নীতিমালা আছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে কী করব সেই পরিকল্পনা আছে। তাই যখনই আমরা ক্ষমতায় এসেছি। নীতিমালা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

নিজের জীবনে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি চিন্তা করি আমার দেশের একেকজন মানুষের কথা। ১৯৮১ সালে যখন দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়েছি, তখন দেখেছি এ দেশের মানুষ ঠিকমতো তিন বেলা খেতে পায় না, চিকিৎসা পায় না, পরার কাপড় পায় না, শিক্ষা পায় না। তখন থেকেই চিন্তা করেছি। এ দেশের মানুষকে দু’বেলা খাবার দিতে হবে, থাকার ঘর দিতে হবে, শিক্ষা দিতে হবে, চিকিৎসা দিতে হবে। তাদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার দিতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই যতগুলো পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, তার প্রতিটি এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য।

এদিকে ক্ষমতাসীন দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ও দলের নেতাদের পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন দিয়েই শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। পরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা উন্মুক্তকরণ ও বেলুন উড়ানো হয়।

সংসদে আলোচনা : সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ঠেকাতে সবার সহযোগিতা চাই- প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার জানান, জঙ্গিবাদ ঠেকাতে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে দাবি করে তিনি বলেছেন, সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে, সুরক্ষিত করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় আমরা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে পেরেছি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে পেরেছি। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে এগোতে হয়েছে। বারবার আঘাত এসেছে। শহীদের তালিকাও যদি দেখি, তাহলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ প্রতিটি আন্দোলনে জীবন দিয়ে গেছে। সব ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সব সময় আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে রেখেছে। সরকারের গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল এই বাংলাদেশ নিয়ে- ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে, আমি বিশ্বাস করি, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে পারব। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটা উন্নত দেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের মানুষ বাইরে গেলে শুনত বাংলাদেশ মানেই দরিদ্র দেশ, ভিক্ষুকের দেশ, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস-দুর্বিপাকের দেশ। বাংলাদেশকে হাত পেতে চলতে হতো। আজ বাংলাদেশকে ইনশাআল্লাহ কারও কাছে হাত পেতে চলতে হয় না। সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। এক একটা দলের এক একটা নীতি থাকে। আওয়ামী লীগের নীতি হল জাতির পিতা যে পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই পথ। যে পথে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত করে একটা উন্নত জীবন দেবে। এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। তাই আমরা সরকারে কিংবা বিরোধী দলে যেখানেই থাকি না কেন, সব সময় জনগণের কল্যাণের জন্যই কাজ করি। আর এটা করেছি বলেই ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা পুনরায় ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের ইতিহাস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। আবার একটি দেশ স্বাধীন করা এবং স্বাধীন দেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা সব সময় আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে। সমর্থন দিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের নৌর্কা মার্কায় ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে বলেই আমরা আজ দেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম হচ্ছি।

ভারতের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হল একমাত্র ব্যতিক্রম দেশ। বঙ্গবন্ধুর মতো স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন বলেই মিত্র শক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ফিরিয়ে নিতে হয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। ইন্দিরা গান্ধীও একজন স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন এবং তার মিত্র বাহিনী ফেরত নিয়ে গেলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা আর কোথাও হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এই বাংলাদেশকে নিয়ে। কাজেই আমি বিশ্বাস করি, সেদিন বেশিদূরে নয়, আমরা ২০২১ সালের মধ্যেই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে পারব। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উন্নত দেশ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে এই অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দল কোনো দেশে চার-চারটি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেনি। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল এই দেশে চারটি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি সামরিক সরকাররা করেছে, অন্য কেউ তা করেনি।