ঢাকা , শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোপের ঢাকা ত্যাগ করলেন রোহিঙ্গা উচ্চারণ না করার ব্যাখ্যা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাংলাদেশে ৩ দিনের সফর শেষে আজ শনিবার রোমের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। বাংলাদেশে আসার আগে মিয়ানমার সফর করেন তিনি। সেখানে তিনি তার ভাষণে একবারের জন্যও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। এর কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আলোচনার পথ বন্ধ না করেই মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক উভয় নেতৃত্বের কাছেই নিজের বার্তাটি তুলে ধরতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ সফর শেষে রোমে ফেরার পথে পোপ ফ্রান্সিস বিমানে সাংবাদিকদের কাছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করা নিয়ে নিজের এই অবস্থান তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
তবে মিয়ানমার সফরের সময় প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে শ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানান পোপ। রোমে ফেরার পথে বিমানে পোপ ফ্রান্সিস সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বার্তাটি ঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া। একবারে একটি বিষয়েই কথা বলা এবং এ বিষয়ে অন্যপক্ষের জবাব শোনা। তিনি বলেন, আমি যদি বক্তৃতায় ওই শব্দটি ব্যবহার করতাম, তারা হয়তো আমাদের মুখের ওপরই আলোচনার পথ বন্ধ করে দিত। কিন্তু (প্রকাশ্যে) আমি পরিস্থিতিটা ও অধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি; বলেছি, কাউকেই নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বাদ দেওয়া উচিত হবে না, একান্ত বৈঠকে আরও কিছু বিষয় তুলে ধরার জন্যই এটা করতে হয়েছে।
এছাড়া মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়টি তিনি দৃঢ়তার সঙ্গেই তুলে ধরেছেন বলেও ইঙ্গিত দেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রসঙ্গত মিয়ানমার সফরের সময় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ না করতে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ইয়াঙ্গুনের আর্চবিশপের দায়িত্ব পালনকারী কার্ডিনাল চার্লস মং বো। গত মঙ্গলবার পোপ নেপিদোতে তার মিয়ানমার সফরের মূল ভাষণ দেন। সেখানে তিনি এ শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
তবে ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে গত শুক্রবার রাখাইন থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা কষ্টক্লিষ্ট মুখগুলো দেখতে দেখতে তাদের মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শোনার একপর্যায়ে পোপ ফ্রান্সিসের একটি বাক্যে প্রথমবারের মতো উচ্চারিত হয় রোহিঙ্গা শব্দটি। স্প্যানিশ ভাষায় বলা পোপের ওই বাক্যের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তার দোভাষী বললেন, দ্য প্রেজেন্স অব গড ইজ অলসো কলড রোহিঙ্গা, বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায়- ঈশ্বরের উপস্থিতির আরেক নাম রোহিঙ্গা। ওই সময় তিনি আরও বলেন, কষ্টে থাকা এই মানুষগুলোর অধিকার যতদিন না প্রতিষ্ঠা হচ্ছে তাদের জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পোপের ঢাকা ত্যাগ করলেন রোহিঙ্গা উচ্চারণ না করার ব্যাখ্যা

আপডেট টাইম : ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাংলাদেশে ৩ দিনের সফর শেষে আজ শনিবার রোমের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। বাংলাদেশে আসার আগে মিয়ানমার সফর করেন তিনি। সেখানে তিনি তার ভাষণে একবারের জন্যও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। এর কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আলোচনার পথ বন্ধ না করেই মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক উভয় নেতৃত্বের কাছেই নিজের বার্তাটি তুলে ধরতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ সফর শেষে রোমে ফেরার পথে পোপ ফ্রান্সিস বিমানে সাংবাদিকদের কাছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করা নিয়ে নিজের এই অবস্থান তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
তবে মিয়ানমার সফরের সময় প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে শ্রদ্ধাপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানান পোপ। রোমে ফেরার পথে বিমানে পোপ ফ্রান্সিস সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বার্তাটি ঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া। একবারে একটি বিষয়েই কথা বলা এবং এ বিষয়ে অন্যপক্ষের জবাব শোনা। তিনি বলেন, আমি যদি বক্তৃতায় ওই শব্দটি ব্যবহার করতাম, তারা হয়তো আমাদের মুখের ওপরই আলোচনার পথ বন্ধ করে দিত। কিন্তু (প্রকাশ্যে) আমি পরিস্থিতিটা ও অধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি; বলেছি, কাউকেই নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বাদ দেওয়া উচিত হবে না, একান্ত বৈঠকে আরও কিছু বিষয় তুলে ধরার জন্যই এটা করতে হয়েছে।
এছাড়া মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়টি তিনি দৃঢ়তার সঙ্গেই তুলে ধরেছেন বলেও ইঙ্গিত দেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রসঙ্গত মিয়ানমার সফরের সময় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ না করতে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ইয়াঙ্গুনের আর্চবিশপের দায়িত্ব পালনকারী কার্ডিনাল চার্লস মং বো। গত মঙ্গলবার পোপ নেপিদোতে তার মিয়ানমার সফরের মূল ভাষণ দেন। সেখানে তিনি এ শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
তবে ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে গত শুক্রবার রাখাইন থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা কষ্টক্লিষ্ট মুখগুলো দেখতে দেখতে তাদের মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শোনার একপর্যায়ে পোপ ফ্রান্সিসের একটি বাক্যে প্রথমবারের মতো উচ্চারিত হয় রোহিঙ্গা শব্দটি। স্প্যানিশ ভাষায় বলা পোপের ওই বাক্যের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তার দোভাষী বললেন, দ্য প্রেজেন্স অব গড ইজ অলসো কলড রোহিঙ্গা, বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায়- ঈশ্বরের উপস্থিতির আরেক নাম রোহিঙ্গা। ওই সময় তিনি আরও বলেন, কষ্টে থাকা এই মানুষগুলোর অধিকার যতদিন না প্রতিষ্ঠা হচ্ছে তাদের জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।