বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন হলেও এর প্রকৃত স্বাদ পায়নি ভৈরববাসী। তখনও পাকিস্তানী হানাদারদের দখলে ভৈরব বাজার।
অবশেষ ২ দিন পর পাকসেনাদের হাইকমান্ড ১৮ ডিসেম্বর রাতেই বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠানো পাকবাহিনী আত্মসমর্পনের বিষয়টি জানতে পারে ভৈরবে অবস্থান নেয়া পাকসেনারা। ফলে ১৯ ডিসেম্বর ভৈরব বাজার শত্রু মুক্ত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরই ১৯ ডিসেম্বর ভৈরব মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
জানা গেছে, ১৯ ডিসেম্বর ভৈরব মুক্ত হওয়ার প্রাক্কালে পাকিস্তানী আর্মির বিগ্রেডিয়ার মো: আনোয়ার উচ্ছ্বসিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জয় বাংলা মাত বলো, দু’দিনকো চান্দিরা, ফের আন্ধিরা, ইস্ট পাকিস্তানকে হামলোক ফের আয়েগা”।
এই কথাগুলো বলতে বলতে শেষ বারের মতো ভৈরবের মাটি ত্যাগ করে রামনগর ব্রিজ পেরিয়ে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে স্ব-দলে রওনা হন।
চারদিকে ভৈরবের দামাল মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তোলে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯ ডিসেম্বর ভৈরবের সাধারণ মানুষজন শহরে প্রবেশ করে।
ভৈরবের পাকবাহিনী সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকবার সম্মুখ যুদ্ধে ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। এসব যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন শত্রুসেনাও মারা যায়।
সে সময় ভৈরব থেকে প্রায় ৪৫০ জন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। বুকের অদম্য সাহস দিয়ে ছিনিয়ে আনেন বিজয়ের পতাকা। সেদিন আনন্দে আত্মহারা হয় শহর ও গ্রামবাসী। তাদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হয়েছিল তারা আনন্দিত হলেও তাদের মুখে ছিল বিষন্নতার ছাপ। তবুও তারা আনন্দে মেতে উঠেছিল।
১৯ ডিসেম্বর সকালেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা ভৈরব শহরে প্রবেশ করে।