ঢাকা , সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের ছুটিতে ২৬০০ টাকায় সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রকৃতির নির্মল রসায়নের এক অপরূপ আনন্দধারার দেখা পাবেন এই বর্ষায় আপনি যদি হাওরে ভ্রমণ করতে যান। কখনো খানিক রোদ, আবার মুষলধারায় বর্ষণ এ যেন চলতে থাকে কাব্যিক ছন্দে। আর বর্ষার এই অনবদ্য রূপ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিলেটের সুনামগঞ্জে। তাই এবার ঈদের ছুটিতে আপনি চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে।

যা দেখবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। অথৈ পানি, জলাবন, নীল আকাশ, পাহাড় ও চোখ জুড়ানো সবুজ এই হাওরকে অপরূপ সাজে সাজিয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ছয় হাজার ৯১২ একর। তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০ হাজার একর পর্যন্ত হয়ে থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। শীতকালে এই হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে। টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়গুলো দেখা যায়। মেঘালয় থেকে প্রায় ৩০টি ছোট-বড় ঝর্ণা বা ছড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে মিশেছে। এই হাওরে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে, এর আশপাশের পানি খুবই স্বচ্ছ হওয়ায় ওপর থেকে হাওরের তলা দেখা যায়। ১২০টি বিল ও ১৮০টি নিম্নাঞ্চল/ কান্দা মিলে এই হাওরের সৃষ্টি, তাই স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি ‘নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল’ নামে পরিচিত। টাঙ্গুয়ার হাওরে ছোট-বড় প্রায় ৪৬টি দ্বীপের মতো ভাসমান গ্রাম বা দ্বীপ গ্রাম আছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে Ecologically Critical Area (ECA) হিসেবে ঘোষণা করে। আর ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইটের (Ramsar site) তালিকায় স্থান করে নেয়।

টাঙ্গুয়ার হাওর কীভাবে যাবেন

টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে হলে প্রথমে সুনামগঞ্জ আসতে হবে। প্রতিদিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন ও শ্যামলী পরিবহনের বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং মহাখালী থেকে ছেড়ে যায় এনা পরিবহনের বাস। এসব বাসে নন-এসিতে জনপ্রতি টিকেট কাটতে ৫৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। তবে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে যেতে চাইলে প্রথমে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেট শহরে এসে পরে বাস/ মাইক্রো ভাড়া করে যেতে হবে সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/ সিএনজি/ বাইক করে তাহিরপুরে সহজেই যাওয়া যায়। তাহিরপুরে নৌকাঘাট থেকে সাইজ এবং সামর্থ্য অনুযায়ী নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। নৌকার ভাড়া পড়বে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

আর টাঙ্গুয়ার হাওরে রাত যাপন করতে চাইলে বড় নৌকাতে থাকতে হবে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে পারবেন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে।

সূত্রঃ এন টিভি

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ঈদের ছুটিতে ২৬০০ টাকায় সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে

আপডেট টাইম : ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রকৃতির নির্মল রসায়নের এক অপরূপ আনন্দধারার দেখা পাবেন এই বর্ষায় আপনি যদি হাওরে ভ্রমণ করতে যান। কখনো খানিক রোদ, আবার মুষলধারায় বর্ষণ এ যেন চলতে থাকে কাব্যিক ছন্দে। আর বর্ষার এই অনবদ্য রূপ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিলেটের সুনামগঞ্জে। তাই এবার ঈদের ছুটিতে আপনি চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে।

যা দেখবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। অথৈ পানি, জলাবন, নীল আকাশ, পাহাড় ও চোখ জুড়ানো সবুজ এই হাওরকে অপরূপ সাজে সাজিয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ছয় হাজার ৯১২ একর। তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০ হাজার একর পর্যন্ত হয়ে থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। শীতকালে এই হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে। টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়গুলো দেখা যায়। মেঘালয় থেকে প্রায় ৩০টি ছোট-বড় ঝর্ণা বা ছড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে মিশেছে। এই হাওরে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে, এর আশপাশের পানি খুবই স্বচ্ছ হওয়ায় ওপর থেকে হাওরের তলা দেখা যায়। ১২০টি বিল ও ১৮০টি নিম্নাঞ্চল/ কান্দা মিলে এই হাওরের সৃষ্টি, তাই স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি ‘নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল’ নামে পরিচিত। টাঙ্গুয়ার হাওরে ছোট-বড় প্রায় ৪৬টি দ্বীপের মতো ভাসমান গ্রাম বা দ্বীপ গ্রাম আছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে Ecologically Critical Area (ECA) হিসেবে ঘোষণা করে। আর ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইটের (Ramsar site) তালিকায় স্থান করে নেয়।

টাঙ্গুয়ার হাওর কীভাবে যাবেন

টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে হলে প্রথমে সুনামগঞ্জ আসতে হবে। প্রতিদিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন ও শ্যামলী পরিবহনের বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং মহাখালী থেকে ছেড়ে যায় এনা পরিবহনের বাস। এসব বাসে নন-এসিতে জনপ্রতি টিকেট কাটতে ৫৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। তবে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে যেতে চাইলে প্রথমে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেট শহরে এসে পরে বাস/ মাইক্রো ভাড়া করে যেতে হবে সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/ সিএনজি/ বাইক করে তাহিরপুরে সহজেই যাওয়া যায়। তাহিরপুরে নৌকাঘাট থেকে সাইজ এবং সামর্থ্য অনুযায়ী নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। নৌকার ভাড়া পড়বে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

আর টাঙ্গুয়ার হাওরে রাত যাপন করতে চাইলে বড় নৌকাতে থাকতে হবে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে পারবেন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে।

সূত্রঃ এন টিভি