বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।/মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে রেখেছি ঢেকে তারে/এই-যে আমার সুরের ক্ষেতের প্রথম সোনার ধান।’
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরূপ রূপবতী বর্ষার আবাহনে কদম ফুলকে এভাবেই বেঁধে দিয়েছেন একসূত্রে।
ষড়ঋতুর বাংলায় আষাঢ় ও শ্রাবণ মিলে আসে বর্ষা। আষাঢ় সঙ্গে নিয়ে আসে কদম্বকে।
কেয়া আর কেতকীর নয়নাভিরাম রূপের পসরায় ঠাঁই পায় কদম্বও। এটা বর্ষাকে করে তোলে অর্থবহ। আবহমান বাংলায় তাই কদম আষাঢ়েরই প্রতীক। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের করাল ছোবলে নগরীতে তিন সপ্তাহ আগেই দেখা দিয়েছে সুরভিত কদম্বের। এল নিনোর প্রভাবে দেশে যখন বইছে তাপপ্রবাহ, তীব্র গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত, সেই সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কদম গাছের মগডালে উঁকি মেরে হাস্যোজ্জ্বল কদম ফুল বর্ষার আগমনীই যেন জানিয়ে দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজিসি অধ্যাপক ড. এম মোজাম্মেল হক যুগান্তরকে বলেন, আবহমান বাংলায় আছে আউশ-আমন-বোরো নামের দেশীয় জাতের ধান। প্রত্যেকটি ধান একেকটি ঋতুর সঙ্গে যুক্ত। তেমনি কদম ফুলও বর্ষার প্রতীক বলেই জানে এ দেশের মানুষ।
সুতরাং আগেভাগেই কদমের এ আগমনীকে নিশ্চিতভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেরই প্রতিফলন বলে ধরে নেয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান খন্দকার বলেন, প্রত্যেকটি ফুল ও ফলের আগমনের একটি প্রাকৃতিক সময় আছে। কদম ফুল ফোটারও একটি রেঞ্জ আছে। এ বছর বর্ষা এগিয়ে এসেছে।