ঢাকা , বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৯ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে সেনা মোতায়েন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। আজ সোমবার রাতে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

এর আগে আসন্ন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠকে করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সন্ধ্যায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওয়াকার-উজ-জামান।আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে বৈঠকে অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য কমিশনাররা। বৈঠকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 তবে সেনাবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) থাকবে কি না, তা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে।ইসি সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাড়ে সাত লাখ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করবেন। এবার আনসার পাঁচ লাখ ১৬ হাজার জন, পুলিশ ও র‌্যাবের এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্ট গার্ডের দুই হাজার ৩৫০ জন এবং বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাইবে, সশস্ত্র বাহিনী আমরা সেভাবে সহযোগিতা করব।

তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার যদি বেশি প্রয়োজন হয়, সেভাবেই মোতায়েন করা হবে। অবশ্যই সব সময় প্রস্তুতি আছে। গতবার তারা ৩৮৮ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেছিল।’

পিএসও বলেন, ‘তারা (ইসি) চাচ্ছে, সেনা মোতায়েন হোক।

কিভাবে মোতায়েন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে রিকমেন্ডেশন করবে। রাষ্ট্রপতি যদি সিদ্ধান্ত দেন, তবে অবশ্যই সেনা মোতায়েন হবে। তারা যেভাবে সহায়তা চাইবে, সেভাবেই আমরা সহায়তা করব।’তিনি আরো বলেন, ‘তারা (ইসি) চাচ্ছে একটি সুন্দর সুষ্ঠু, ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন। এ বিষয়ে আমার সামান্য কোনো সন্দেহ নেই। তারা অত্যন্ত সিরিয়াস। আমরা সশস্ত্র বাহিনী যদি ডেপ্লয় (মোতায়েন) হই, আমরা অবশ্যই সাহায্য-সহায়তা করব। রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলে আমরা অতীতের মতোই আমরা ডেপ্লয় হব।’

সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, জননিরাপত্তা বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করেছে। এ ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনে কী করে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এর আগে বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে ২০০৮ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছে। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) দিয়ে সেনা মোতায়েন চাইলেও সেটি হয়নি। এবারও সশস্ত্র বাহিনী ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে থাকবে বলে জানা গেছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

২৯ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে সেনা মোতায়েন

আপডেট টাইম : ০৬:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। আজ সোমবার রাতে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

এর আগে আসন্ন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে বৈঠকে করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সন্ধ্যায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওয়াকার-উজ-জামান।আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে বৈঠকে অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য কমিশনাররা। বৈঠকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 তবে সেনাবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) থাকবে কি না, তা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে।ইসি সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাড়ে সাত লাখ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করবেন। এবার আনসার পাঁচ লাখ ১৬ হাজার জন, পুলিশ ও র‌্যাবের এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্ট গার্ডের দুই হাজার ৩৫০ জন এবং বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাইবে, সশস্ত্র বাহিনী আমরা সেভাবে সহযোগিতা করব।

তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার যদি বেশি প্রয়োজন হয়, সেভাবেই মোতায়েন করা হবে। অবশ্যই সব সময় প্রস্তুতি আছে। গতবার তারা ৩৮৮ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেছিল।’

পিএসও বলেন, ‘তারা (ইসি) চাচ্ছে, সেনা মোতায়েন হোক।

কিভাবে মোতায়েন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে রিকমেন্ডেশন করবে। রাষ্ট্রপতি যদি সিদ্ধান্ত দেন, তবে অবশ্যই সেনা মোতায়েন হবে। তারা যেভাবে সহায়তা চাইবে, সেভাবেই আমরা সহায়তা করব।’তিনি আরো বলেন, ‘তারা (ইসি) চাচ্ছে একটি সুন্দর সুষ্ঠু, ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন। এ বিষয়ে আমার সামান্য কোনো সন্দেহ নেই। তারা অত্যন্ত সিরিয়াস। আমরা সশস্ত্র বাহিনী যদি ডেপ্লয় (মোতায়েন) হই, আমরা অবশ্যই সাহায্য-সহায়তা করব। রাষ্ট্রপতি অনুমতি দিলে আমরা অতীতের মতোই আমরা ডেপ্লয় হব।’

সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, জননিরাপত্তা বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করেছে। এ ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনে কী করে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এর আগে বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে ২০০৮ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছে। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) দিয়ে সেনা মোতায়েন চাইলেও সেটি হয়নি। এবারও সশস্ত্র বাহিনী ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে থাকবে বলে জানা গেছে।