ঢাকা , শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই পক্ষের প্রথা মেনেই বিয়ে করলেন মুসলিম অভিনেত্রী নুসরাত

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অবশেষে অপেক্ষার অবসান। তুরস্কের রোমান্টিক বন্দর শহর বোদরুমে বুধবার সাত পাকে বাঁধা পড়লেন অভিনেত্রী ও বসিরহাটের সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান। লাল লেহেঙ্গা, গলায় বরমালা, হাতে চূড়া। চিরাচরিত কনে সাজে বিবাহ বাসরে নুসরাত। পাশে সহাস্য বদনে দীর্ঘদিনের প্রেমিক নিখিল জৈন। হালকা গোলাপি রঙের ডিজাইনার শেরওয়ানি। মাথায় সেহরা। গলায় রত্নখচিত মালা। এক্কেবারে রাজপুত বর বেশে নিখিল জৈন। অগ্নিসাক্ষী করে নিখিলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন নুসরাত।

বিয়ে হয়েছে বর এবং কনে–দুই পক্ষের প্রথা মেনেই। টলিউড থেকে উপস্থিত ছিলেন সতীর্থ তথা প্রিয় বান্ধবী মিমি চক্রবর্তী। কলকাতায় ফিরে আইনি মতে বিয়ে সারবেন দম্পতি। টলিউডের বন্ধুদের জন্য কলকাতার আইটিসি রয়েল বেঙ্গলে ৪ জুলাই রিসেপশন পার্টি হবে। বোদরুমে উপস্থিত ছিলেন নিখিল-নুসরতের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন।

বিয়ের জন্য নিখিলের কোম্পানি থেকে বিশেষভাবে ডিজাইন করা পোশাক গিয়েছিল নুসরাতের জন্য। নুসরাতের জুতার ডিজাইন করেছেন কলকাতার বিশিষ্ট শু ডিজাইনার রোহন অরোরা। তুরস্কের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার আগের দিনই গায়ে হলুদের ছবি শেয়ার করেছিলেন নুসরাত। ‘ফাদারস ডে’ উপলক্ষে বাবার জন্য আবেগঘন বার্তাও ছিল সেই ছবির ক্যাপশনে। নিখিলের সঙ্গে শহর ছাড়ার আগের দিন গায়ে হলুদের আসরে বাবাকে জড়িয়ে ধরে শিশুসুলভ কান্নায় ভেঙে পড়েন নুসরাত।

সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসর বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি এ বিয়ে সম্পন্ন করেন। তার এ বিয়েতে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রশংসার বন্যা বইছে। হিন্দুয়ানী প্রথায় বিয়েতে অংশগ্রহণের সময় তার সাজসজ্জারও ভূয়সী প্রশংসা করছে মিডিয়াগুলো।

ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম বিয়ের পিঁড়িতে বসা নুসরাতের বর্ণনা দিচ্ছে এভাবে, পরনে লাল লেহেঙ্গা, মাথায় ওড়না, গলায় ভারি সোনার গয়না, মাথায় টিকলি, হাতে চূড়া ও কালিরাস-এ সেজে ওঠা নুসরতকে ঠিক তেমনটাই দেখাচ্ছিল। পায়ে হেঁটেই বিয়ের মঞ্চ অবধি পৌঁছলেন কনে নুসরত। চেয়ারে বসে হাত রাখলেন তাঁর স্বপ্নের রাজকুমারের হাতে। বিয়ের মন্ত্র উচ্চারণের জন্য পুরোহিত মশাই ততক্ষণে তৈরি হয়েই বসে রয়েছেন।

১৯ জুন, বুধবার তুরস্কের বোদরুম শহরে ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন হয় নুসরতের। বিয়ের পর ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে নব-দম্পতির প্রথম ছবি।

টলিউডে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং সাধারণত দেখা যায় না। তবে গত বছর থেকে বিরাট-অনুষ্কা, দীপিকা-রণবীরসহ বেশকিছু ডেস্টিনেশন ওয়েডিং দেখেছে বলিউড। আর নুসরত-নিখিলের বিয়েটাও হলো সেই বলিউডি কায়দায় ডেস্টিনেশন ওয়েডিং।

২০১০ সালে ফেয়ার ওয়ান মিস কলকাতা নামক একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হন নুসরাত জাহান। তার সৌন্দর্যের কারণে তিনি মডেলিং-এ সুযোগ পান। এরপর তিনি জিতের বিপরীতে এবং রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় `শত্রু‘ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পশ্চিম বাংলায় সুপরিচিত হন।

এর প্রায় দুই বছর পর মুক্তি পায় দেবের বিপরীতে এবং রাজিব বিশ্বাস পরিচালিত তার দ্বিতীয় ছবি `খোকা ৪২০‘। এই চলচ্চিত্রটির অত্যধিক জনপ্রিয়তা তাকে সাফল্যের অন্যতম শিখরে নিয়ে যায়। এরপর মুক্তি পায় অঙ্কুশ হাজরার বিপরীতে `খিলাড়ি‘ ছবিটি।

তিনটি ছবিতেই এসকে মুভিজ প্রযোজনা করে। নুসরাত জাহান একের পর এক ব্লকবাস্টার দর্শকদের উপহার দিয়ে গেছেন। অবশেষে অভিনয়ের পাশাপাশি ভারতীয় লোকসভাতে অংশগ্রহণ করে রাজনীতির মাঠও কাঁপানো শুরু করেছেন ইতোমধ্যে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

দুই পক্ষের প্রথা মেনেই বিয়ে করলেন মুসলিম অভিনেত্রী নুসরাত

আপডেট টাইম : ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অবশেষে অপেক্ষার অবসান। তুরস্কের রোমান্টিক বন্দর শহর বোদরুমে বুধবার সাত পাকে বাঁধা পড়লেন অভিনেত্রী ও বসিরহাটের সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান। লাল লেহেঙ্গা, গলায় বরমালা, হাতে চূড়া। চিরাচরিত কনে সাজে বিবাহ বাসরে নুসরাত। পাশে সহাস্য বদনে দীর্ঘদিনের প্রেমিক নিখিল জৈন। হালকা গোলাপি রঙের ডিজাইনার শেরওয়ানি। মাথায় সেহরা। গলায় রত্নখচিত মালা। এক্কেবারে রাজপুত বর বেশে নিখিল জৈন। অগ্নিসাক্ষী করে নিখিলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন নুসরাত।

বিয়ে হয়েছে বর এবং কনে–দুই পক্ষের প্রথা মেনেই। টলিউড থেকে উপস্থিত ছিলেন সতীর্থ তথা প্রিয় বান্ধবী মিমি চক্রবর্তী। কলকাতায় ফিরে আইনি মতে বিয়ে সারবেন দম্পতি। টলিউডের বন্ধুদের জন্য কলকাতার আইটিসি রয়েল বেঙ্গলে ৪ জুলাই রিসেপশন পার্টি হবে। বোদরুমে উপস্থিত ছিলেন নিখিল-নুসরতের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন।

বিয়ের জন্য নিখিলের কোম্পানি থেকে বিশেষভাবে ডিজাইন করা পোশাক গিয়েছিল নুসরাতের জন্য। নুসরাতের জুতার ডিজাইন করেছেন কলকাতার বিশিষ্ট শু ডিজাইনার রোহন অরোরা। তুরস্কের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার আগের দিনই গায়ে হলুদের ছবি শেয়ার করেছিলেন নুসরাত। ‘ফাদারস ডে’ উপলক্ষে বাবার জন্য আবেগঘন বার্তাও ছিল সেই ছবির ক্যাপশনে। নিখিলের সঙ্গে শহর ছাড়ার আগের দিন গায়ে হলুদের আসরে বাবাকে জড়িয়ে ধরে শিশুসুলভ কান্নায় ভেঙে পড়েন নুসরাত।

সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনের সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসর বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি এ বিয়ে সম্পন্ন করেন। তার এ বিয়েতে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রশংসার বন্যা বইছে। হিন্দুয়ানী প্রথায় বিয়েতে অংশগ্রহণের সময় তার সাজসজ্জারও ভূয়সী প্রশংসা করছে মিডিয়াগুলো।

ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম বিয়ের পিঁড়িতে বসা নুসরাতের বর্ণনা দিচ্ছে এভাবে, পরনে লাল লেহেঙ্গা, মাথায় ওড়না, গলায় ভারি সোনার গয়না, মাথায় টিকলি, হাতে চূড়া ও কালিরাস-এ সেজে ওঠা নুসরতকে ঠিক তেমনটাই দেখাচ্ছিল। পায়ে হেঁটেই বিয়ের মঞ্চ অবধি পৌঁছলেন কনে নুসরত। চেয়ারে বসে হাত রাখলেন তাঁর স্বপ্নের রাজকুমারের হাতে। বিয়ের মন্ত্র উচ্চারণের জন্য পুরোহিত মশাই ততক্ষণে তৈরি হয়েই বসে রয়েছেন।

১৯ জুন, বুধবার তুরস্কের বোদরুম শহরে ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন হয় নুসরতের। বিয়ের পর ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে নব-দম্পতির প্রথম ছবি।

টলিউডে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং সাধারণত দেখা যায় না। তবে গত বছর থেকে বিরাট-অনুষ্কা, দীপিকা-রণবীরসহ বেশকিছু ডেস্টিনেশন ওয়েডিং দেখেছে বলিউড। আর নুসরত-নিখিলের বিয়েটাও হলো সেই বলিউডি কায়দায় ডেস্টিনেশন ওয়েডিং।

২০১০ সালে ফেয়ার ওয়ান মিস কলকাতা নামক একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হন নুসরাত জাহান। তার সৌন্দর্যের কারণে তিনি মডেলিং-এ সুযোগ পান। এরপর তিনি জিতের বিপরীতে এবং রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় `শত্রু‘ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পশ্চিম বাংলায় সুপরিচিত হন।

এর প্রায় দুই বছর পর মুক্তি পায় দেবের বিপরীতে এবং রাজিব বিশ্বাস পরিচালিত তার দ্বিতীয় ছবি `খোকা ৪২০‘। এই চলচ্চিত্রটির অত্যধিক জনপ্রিয়তা তাকে সাফল্যের অন্যতম শিখরে নিয়ে যায়। এরপর মুক্তি পায় অঙ্কুশ হাজরার বিপরীতে `খিলাড়ি‘ ছবিটি।

তিনটি ছবিতেই এসকে মুভিজ প্রযোজনা করে। নুসরাত জাহান একের পর এক ব্লকবাস্টার দর্শকদের উপহার দিয়ে গেছেন। অবশেষে অভিনয়ের পাশাপাশি ভারতীয় লোকসভাতে অংশগ্রহণ করে রাজনীতির মাঠও কাঁপানো শুরু করেছেন ইতোমধ্যে।