ঢাকা , শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ

ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহারের সময় হরহামেশাই চোখে পড়ে নানা ধরনের লোভনীয় বিজ্ঞাপন। যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘরে বসেই টাকা আয়ের চাকরি ও বিনিয়োগ ছাড়াই থাকে ‘ঋণের অফার’। কেউ যদি এই প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়েন তবে সব হারিয়ে হয়ে যান নিঃস্ব।

গ্রাহককে দেওয়া প্রতারকদের নির্ধারিত অ্যাপ ডাউনলোডও অ্যাপের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণের পর ঋণ হিসেবে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেয় প্রতারক চক্র। এরপরই শুরু হয় প্রতারণা। বিভিন্ন ফিশিং লিংকের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণকারীর ফোনের যাবতীয় এক্সেস নিয়ে নেয় প্রতারকরা। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। চাওয়া হয় দুই থেকে তিন গুণ বেশি টাকা।

সম্প্রতি বিবিসির একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক এই প্রতারক চক্রের ফাঁদে ফেলে মানুষকে নিঃস্ব করার ভয়ানক চিত্র। জানা গেছে, প্রায় ৬০ জন ভারতীয় নাগরিক এ ঘটনায় আত্মহত্যাও করেছেন।

বাংলাদেশেও সক্রিয় রয়েছে চক্রটি। যার ভুক্তভোগী প্রায় ১৫০০ জন। সম্প্রতি এক চীনা নাগরিকসহ চক্রটির ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে সক্রিয় এই চক্রটি শেষ ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

তিনি জানান, গ্রেপ্তার চক্রের প্রধান ঝ্যাং জি ঝাহ্যাং (৬০), তিনি একজন চীনা নাগরিক। অভিযানের সময়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সিমে ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য উদ্ধার করেছে ডিবি। গত ছয় মাসে এসব মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পাচার করা হয়েছে। সে হিসেবে গত দুই বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

হারুন অর রশিদ জানান, বাংলাদেশ ছাড়াও এই প্রতারক চক্রের কল সেন্টার আছে পাকিস্তানে। মূল সার্ভার সিংগাপুরের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ঋণ দেয়ার এই অ্যাপের প্রচারণা চলে। সুনির্দিষ্ট অ্যাপ ইন্সটল করতে বলা হয়। পরে ফোন থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য।

এই সব অসাধু চক্রের হাত থেকে বাঁচতে অনলাইনে এইসব বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলা এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ডিবি হারুন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ

আপডেট টাইম : ০৪:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহারের সময় হরহামেশাই চোখে পড়ে নানা ধরনের লোভনীয় বিজ্ঞাপন। যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘরে বসেই টাকা আয়ের চাকরি ও বিনিয়োগ ছাড়াই থাকে ‘ঋণের অফার’। কেউ যদি এই প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়েন তবে সব হারিয়ে হয়ে যান নিঃস্ব।

গ্রাহককে দেওয়া প্রতারকদের নির্ধারিত অ্যাপ ডাউনলোডও অ্যাপের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণের পর ঋণ হিসেবে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেয় প্রতারক চক্র। এরপরই শুরু হয় প্রতারণা। বিভিন্ন ফিশিং লিংকের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণকারীর ফোনের যাবতীয় এক্সেস নিয়ে নেয় প্রতারকরা। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। চাওয়া হয় দুই থেকে তিন গুণ বেশি টাকা।

সম্প্রতি বিবিসির একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক এই প্রতারক চক্রের ফাঁদে ফেলে মানুষকে নিঃস্ব করার ভয়ানক চিত্র। জানা গেছে, প্রায় ৬০ জন ভারতীয় নাগরিক এ ঘটনায় আত্মহত্যাও করেছেন।

বাংলাদেশেও সক্রিয় রয়েছে চক্রটি। যার ভুক্তভোগী প্রায় ১৫০০ জন। সম্প্রতি এক চীনা নাগরিকসহ চক্রটির ১৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে সক্রিয় এই চক্রটি শেষ ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

তিনি জানান, গ্রেপ্তার চক্রের প্রধান ঝ্যাং জি ঝাহ্যাং (৬০), তিনি একজন চীনা নাগরিক। অভিযানের সময়ে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সিমে ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য উদ্ধার করেছে ডিবি। গত ছয় মাসে এসব মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকারও বেশি পাচার করা হয়েছে। সে হিসেবে গত দুই বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

হারুন অর রশিদ জানান, বাংলাদেশ ছাড়াও এই প্রতারক চক্রের কল সেন্টার আছে পাকিস্তানে। মূল সার্ভার সিংগাপুরের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে ঋণ দেয়ার এই অ্যাপের প্রচারণা চলে। সুনির্দিষ্ট অ্যাপ ইন্সটল করতে বলা হয়। পরে ফোন থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য।

এই সব অসাধু চক্রের হাত থেকে বাঁচতে অনলাইনে এইসব বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলা এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ডিবি হারুন।