ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌন উত্তেজক ইনজেকশন নিয়ে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  রাজধানীর পরীবাগ এলাকার একটি বহুতল আবাসিক ভবনের সাততলা থেকে গৃহকর্মীকে ফেলে দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সালেহ আহমেদ (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া ওই গৃহকর্মী বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, শুক্রবার রাতে পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারের সাততলার বারান্দা দিয়ে ওই গৃহকর্মীকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গৃহকর্তা মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওসি হাসান বলেন, ওই রাতে শুধু গৃহকর্মীই নয়, একই সময়ে মদ্যপ অবস্থায় সালেহ আহমেদ তার স্ত্রীকেও মারধর করেছেন। তিনিও ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গৃহকর্মীর মা বাদী হয়ে ওই ঘটনায় মামলা করেছেন। মামলা হওয়ার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত সালেহ আহমেদ অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে বাবার ব্যবসার হাল ধরেন। তার বাবার নাম শহীদ হাওলাদার। তাদের বাড়ি পুরান ঢাকার মাতুয়াইলে। তবে বাবা-ছেলে পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারে পাশাপাশি দুটি অ্যাপার্টমেন্টে বাস করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত ছিলেন সালেহ আহমেদ। মাদকাসক্তও ছিলেন। দালালদের মাধ্যমে সালেহ আহমেদ সুন্দরী নারীদের কাজের বুয়া হিসেবে নিয়োগ দিতেন। কথিত স্ত্রীর চোখের সামনেই কাজের মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন।

ওই গৃহকর্মীর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার আধাখোলা গ্রামে। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহকর্মী সাংবাদিকদের জানান, বাসায় কাজে যোগদানের পর থেকেই সালেহ আহমেদ তাকে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করেন। তিনি সব সময় মদ এবং ইয়াবার নেশায় টালমাটাল থাকতেন। তার স্ত্রীও ইয়াবায় আসক্ত ছিলেন।

তিনি আরো জানান, সালেহ আহমেদ কথিত স্ত্রীর চোখের সামনেই তার সঙ্গে যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। শুক্রবার রাতে সালেহ আহমেদ নিজের শরীরে একাধিক বিদেশি যৌন উত্তেজক ইনজেকশন পুশ করেন। এতে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় আমার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। বাধা দেয়ায় মারধর করে সাততলার বারান্দা দিয়ে তাকে নিচে ফেলে দেন। তার সঙ্গে তার কথিত স্ত্রীকেও মারধর করেন।

ভুক্তভোগীর ছোটভাই জানান, পরীবাগের ১৬তলা দিগন্ত অ্যাপার্টমেন্টের সাততলায় সালেহ আহমদের বাসায় তার বোন গত ১৫/১৬ দিন ধরে কাজ করছিলেন। তার বোনের দুটি সন্তান রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, বাড়ির গৃহকর্তা সালেহ আহমেদ তার বোনকে মারধর করে সাততলার পেছনের বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। হত্যার উদ্দেশ্যেই তাকে ফেলে দেয়া হয়। সালেহ আহমদের বাসায় কাজ নেয়ার পর থেকেই বোনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। গৃহকর্তা চাইতেন না তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করুক। যে দিন তার বোন কাজে যোগ দেয় সেদিন থেকেই তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

যৌন উত্তেজক ইনজেকশন নিয়ে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা

আপডেট টাইম : ০১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  রাজধানীর পরীবাগ এলাকার একটি বহুতল আবাসিক ভবনের সাততলা থেকে গৃহকর্মীকে ফেলে দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সালেহ আহমেদ (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া ওই গৃহকর্মী বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, শুক্রবার রাতে পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারের সাততলার বারান্দা দিয়ে ওই গৃহকর্মীকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গৃহকর্তা মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওসি হাসান বলেন, ওই রাতে শুধু গৃহকর্মীই নয়, একই সময়ে মদ্যপ অবস্থায় সালেহ আহমেদ তার স্ত্রীকেও মারধর করেছেন। তিনিও ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গৃহকর্মীর মা বাদী হয়ে ওই ঘটনায় মামলা করেছেন। মামলা হওয়ার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত সালেহ আহমেদ অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে বাবার ব্যবসার হাল ধরেন। তার বাবার নাম শহীদ হাওলাদার। তাদের বাড়ি পুরান ঢাকার মাতুয়াইলে। তবে বাবা-ছেলে পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারে পাশাপাশি দুটি অ্যাপার্টমেন্টে বাস করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত ছিলেন সালেহ আহমেদ। মাদকাসক্তও ছিলেন। দালালদের মাধ্যমে সালেহ আহমেদ সুন্দরী নারীদের কাজের বুয়া হিসেবে নিয়োগ দিতেন। কথিত স্ত্রীর চোখের সামনেই কাজের মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন।

ওই গৃহকর্মীর বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার আধাখোলা গ্রামে। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহকর্মী সাংবাদিকদের জানান, বাসায় কাজে যোগদানের পর থেকেই সালেহ আহমেদ তাকে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করেন। তিনি সব সময় মদ এবং ইয়াবার নেশায় টালমাটাল থাকতেন। তার স্ত্রীও ইয়াবায় আসক্ত ছিলেন।

তিনি আরো জানান, সালেহ আহমেদ কথিত স্ত্রীর চোখের সামনেই তার সঙ্গে যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। শুক্রবার রাতে সালেহ আহমেদ নিজের শরীরে একাধিক বিদেশি যৌন উত্তেজক ইনজেকশন পুশ করেন। এতে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এ সময় আমার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। বাধা দেয়ায় মারধর করে সাততলার বারান্দা দিয়ে তাকে নিচে ফেলে দেন। তার সঙ্গে তার কথিত স্ত্রীকেও মারধর করেন।

ভুক্তভোগীর ছোটভাই জানান, পরীবাগের ১৬তলা দিগন্ত অ্যাপার্টমেন্টের সাততলায় সালেহ আহমদের বাসায় তার বোন গত ১৫/১৬ দিন ধরে কাজ করছিলেন। তার বোনের দুটি সন্তান রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, বাড়ির গৃহকর্তা সালেহ আহমেদ তার বোনকে মারধর করে সাততলার পেছনের বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। হত্যার উদ্দেশ্যেই তাকে ফেলে দেয়া হয়। সালেহ আহমদের বাসায় কাজ নেয়ার পর থেকেই বোনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। গৃহকর্তা চাইতেন না তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করুক। যে দিন তার বোন কাজে যোগ দেয় সেদিন থেকেই তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল।