ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচিৎ শিক্ষা দিতে নাদিমের ওপর হামলার পরিকল্পনা চেয়ারম্যান বাবুর: র‌্যাব

সাম্প্রতিক সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে নাদিম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন বাবু। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুসহ জড়িত চারজনকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ দুইজন সীমান্ত পাড়ি দিতে অবস্থান নেন পঞ্চগড়ে দেবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকায়। শুক্রবার রাতের ১০টার দিকে চিলাহাটি ইউনিয়নের চর তিস্তাপাড়ায় কথিত চাচা বৃদ্ধ মুনতাজুলের বাড়িতে অবস্থান নেন তারা। পরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে সেই বাড়ি থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব। পরে তাকে ঢাকায় র‌্যাব সদর দপ্তরে আনা হয়। সরেজমিনে সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িটি সীমান্তের কাছে। সীমান্ত থেকে বাড়িটির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। তাকে সেই মুনতাজুলের বাড়ি থেকেই ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বাবুর কথিত চাচা মুনতাজুল  বলেন, তারা শনিবার রাত ১০টার থেকে আমার সঙ্গে ছিলেন। আমি গতরাতে নামাজ পড়ে এসে দেখি তারা আমার বাড়ি। চেয়ারম্যান বাবুর  সঙ্গে আমার পূর্বের পরিচয় ছিল। তিনি আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। চেয়ারম্যানের সঙ্গে আরও দুইজন ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা জামালপুর থেকে ১৯৬২ সালে এখানে আসি। আমরা জানি না তারা জামালপুরে কি করেছে। চেয়ারম্যান এসেছেন তিনি যে এ ঘটনা ঘটাবেন তা তো জানি না। এদিকে সাংবাদিক নাদিম হত্যায় এজহারনামীয় আসামি রেজাউলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাবের একটি টিম। শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রেজাউল সাংবাদিক নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল। মামলায় চার নম্বর আসামি সে। এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ বিষয়ে সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র‌্যাবের মুখপাত্র। গত বুধবার রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল পৌনে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। আজ বকশীগঞ্জ এন এম উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে প্রথম ও গোমেরচর গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

উচিৎ শিক্ষা দিতে নাদিমের ওপর হামলার পরিকল্পনা চেয়ারম্যান বাবুর: র‌্যাব

আপডেট টাইম : ০৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩

সাম্প্রতিক সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে নাদিম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন বাবু। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম ওরফে বাবুসহ জড়িত চারজনকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ দুইজন সীমান্ত পাড়ি দিতে অবস্থান নেন পঞ্চগড়ে দেবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকায়। শুক্রবার রাতের ১০টার দিকে চিলাহাটি ইউনিয়নের চর তিস্তাপাড়ায় কথিত চাচা বৃদ্ধ মুনতাজুলের বাড়িতে অবস্থান নেন তারা। পরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে সেই বাড়ি থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব। পরে তাকে ঢাকায় র‌্যাব সদর দপ্তরে আনা হয়। সরেজমিনে সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িটি সীমান্তের কাছে। সীমান্ত থেকে বাড়িটির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। তাকে সেই মুনতাজুলের বাড়ি থেকেই ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বাবুর কথিত চাচা মুনতাজুল  বলেন, তারা শনিবার রাত ১০টার থেকে আমার সঙ্গে ছিলেন। আমি গতরাতে নামাজ পড়ে এসে দেখি তারা আমার বাড়ি। চেয়ারম্যান বাবুর  সঙ্গে আমার পূর্বের পরিচয় ছিল। তিনি আমার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। চেয়ারম্যানের সঙ্গে আরও দুইজন ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা জামালপুর থেকে ১৯৬২ সালে এখানে আসি। আমরা জানি না তারা জামালপুরে কি করেছে। চেয়ারম্যান এসেছেন তিনি যে এ ঘটনা ঘটাবেন তা তো জানি না। এদিকে সাংবাদিক নাদিম হত্যায় এজহারনামীয় আসামি রেজাউলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাবের একটি টিম। শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রেজাউল সাংবাদিক নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল। মামলায় চার নম্বর আসামি সে। এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ বিষয়ে সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান র‌্যাবের মুখপাত্র। গত বুধবার রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল পৌনে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। আজ বকশীগঞ্জ এন এম উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে প্রথম ও গোমেরচর গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।