সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ঢাকা উদ্যান, বসিলা, চাঁদ উদ্যান ও জেনেভা ক্যাম্পে ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক ঘটনায় যৌথ অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত দুই দিনে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান চালিয়ে অন্তত ৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে আরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মোহাম্মদপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান। তিনি জানান, মোহাম্মদপুর এলাকার সন্ত্রাসী ও কিশোর অপরাধী এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার নেপথ্যে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি জানান, শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত মোহাম্মদপুর, জেনেভা ক্যাম্প ও বুদ্ধিজীবী কবরস্থানসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডিসি আরও বলেন, মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং একটি অভিশপ্ত কালচার। ৫ আগস্টের আগে থেকে এ কালচার বহুদিন ধরে চলমান ছিল। এটি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনৈতিক মদদ যাদেরই আমরা পাবো, তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেবো।
জেনেভা ক্যাম্পে সম্প্রতি চার জন খুনের ঘটনায় তিনি বলেন, সেটি মূলত মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি। ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, আমরা পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে চেকপোস্ট বসিয়ে কাজ করছি ও অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা অনেকগুলো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি।
তেজগাঁও ডিসি রুহুল কবির খান বলেন, আমরা মোহাম্মদপুরের শেরশাশুড়ি রোড থেকে দুজন অস্ত্র বানানো কারিগরকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা ৪০টি সামুরাই (ছুরি) এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এছাড়া বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আমরা ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম আমরা উদ্ধার করেছি। এছাড়াও সম্প্রতি রোড ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চার জনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছে।
তিনি জানান, মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অপরাধ প্রতিরোধে এবং মোহাম্মদপুরবাসীর মধ্যে শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ বাড়াতে পেট্রলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও স্পেশাল অপারেশন ও ব্লক রেইড দেওয়া হচ্ছে।