ঢাকা , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওষুধ-রেস্তোরাঁ-মোবাইল সেবায় বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার

ওষুধ, রেস্তোরাঁ, ওয়ার্কশপ ও মোবাইল সেবায় বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার করে পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে এসব সেবায় আগের ভ্যাটই কার্যকর থাকবে।

আজ বুধবার এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল-আমিন শেখ বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে ৯ জানুয়ারি সরকার ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এবং ‘দ্য এক্সসাইজ অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট (এমেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫’ জারি করে। একই উদ্দেশ্যে কতিপয় পণ্য ও সেবার ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্কের হার পুনঃনির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতিপয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ এবং অংশীজনের অনুরোধ বিবেচনা করে বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতিপয় পণ্য ও সেবায় বিদ্যমান ভ্যাটের হার, উৎসে ভ্যাট কর্তনের হার এবং সম্পূরক শুল্কের হার হ্রাস করে চারটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এনবিআরের এ কর্মকর্তা বলেন, সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে ওষুধশিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে পূর্বের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে।

দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেস্তোরাঁয় খাবার গ্রহণের সুবিধার্থে থ্রি-স্টার, ফোর-স্টার এবং ফাইভ স্টার হোটেল ব্যতীত অন্য সব রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান আল-আমিন শেখ। তিনি বলেন, অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে সাধারণ জনগণ পূর্বের মূল্যেই এসব রেস্টুরেন্টের খাবার গ্রহণ করতে পারবেন। জনস্বার্থে মোটরগাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ সেবার ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, নিজস্ব ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক ব্যতীত অন্যান্য পোশাক বিপণনের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া, নন-এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার, ও নিজস্ব ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে সেবার ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ায় সরকার। ওয়ার্কশপ সেবার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাটের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল। রেস্তোরাঁ সেবায় ভ্যাট ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিফোন সেবায় (টকটাইম, ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি) সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করেছিল এনবিআর।

মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিফোন সেবায় (টকটাইম, ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি) সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছিল। একইভাবে ইন্টারনেট সংস্থার (আইএসপি) সেবার ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এনবিআর।

সমালোচনার মুখে গত ২০ জানুয়ারি এসব পণ্য ও সেবায় বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের কথা জানায় এনবিআর। অবশ্য তারও আগে রেস্তোরাঁ সেবা থেকে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এনবিআর। এ খাতের মালিকদের আন্দোলনের মুখে পুনরায় আগের হার নির্ধারণ করে এনবিআর। পাশাপাশি ই-বুকেও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ওষুধ-রেস্তোরাঁ-মোবাইল সেবায় বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার

আপডেট টাইম : ৩ ঘন্টা আগে

ওষুধ, রেস্তোরাঁ, ওয়ার্কশপ ও মোবাইল সেবায় বাড়ানো ভ্যাট প্রত্যাহার করে পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে এসব সেবায় আগের ভ্যাটই কার্যকর থাকবে।

আজ বুধবার এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল-আমিন শেখ বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব আর্থিক ভিত মজবুত করার লক্ষ্যে ৯ জানুয়ারি সরকার ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এবং ‘দ্য এক্সসাইজ অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট (এমেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫’ জারি করে। একই উদ্দেশ্যে কতিপয় পণ্য ও সেবার ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্কের হার পুনঃনির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতিপয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ এবং অংশীজনের অনুরোধ বিবেচনা করে বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কতিপয় পণ্য ও সেবায় বিদ্যমান ভ্যাটের হার, উৎসে ভ্যাট কর্তনের হার এবং সম্পূরক শুল্কের হার হ্রাস করে চারটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এনবিআরের এ কর্মকর্তা বলেন, সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে ওষুধশিল্পের ওপর ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে পূর্বের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে।

দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেস্তোরাঁয় খাবার গ্রহণের সুবিধার্থে থ্রি-স্টার, ফোর-স্টার এবং ফাইভ স্টার হোটেল ব্যতীত অন্য সব রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান আল-আমিন শেখ। তিনি বলেন, অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের ফলে সাধারণ জনগণ পূর্বের মূল্যেই এসব রেস্টুরেন্টের খাবার গ্রহণ করতে পারবেন। জনস্বার্থে মোটরগাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ সেবার ক্ষেত্রে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, নিজস্ব ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক ব্যতীত অন্যান্য পোশাক বিপণনের ওপর অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া, নন-এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভান্ডার, ও নিজস্ব ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে সেবার ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ায় সরকার। ওয়ার্কশপ সেবার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাটের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল। রেস্তোরাঁ সেবায় ভ্যাট ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিফোন সেবায় (টকটাইম, ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি) সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করেছিল এনবিআর।

মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে টেলিফোন সেবায় (টকটাইম, ইন্টারনেট ব্যবহার ইত্যাদি) সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছিল। একইভাবে ইন্টারনেট সংস্থার (আইএসপি) সেবার ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এনবিআর।

সমালোচনার মুখে গত ২০ জানুয়ারি এসব পণ্য ও সেবায় বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের কথা জানায় এনবিআর। অবশ্য তারও আগে রেস্তোরাঁ সেবা থেকে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এনবিআর। এ খাতের মালিকদের আন্দোলনের মুখে পুনরায় আগের হার নির্ধারণ করে এনবিআর। পাশাপাশি ই-বুকেও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়।