বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আজ যদি দেশের এমন রত্নতুল্য দুই সম্পদ তারেক মাসুদ এবং মিশুক মুনীর দুর্ঘটনার পর ও হাসপাতালে নেয়ার পরে মারা যেতেন,এই দেশের স্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন আসত!
কর্তব্যরত চিকিৎসক ভুল চিকিৎসা/অবহেলার দায় এবং তা থেকে খুনী হত!
এতদিনে হয়ত ডাক্তার মৃত্যুদন্ড পেয়ে কবরের উপরে তাল গাছ ও বড় হয়ে যেত!
সারা রাত বাস চালিয়ে সকাল সাতটায় পৌছে আবার সকাল দশটায় বাস চালাতে শুরু করেছিল ঐ ড্রাইভার যেটা সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূত!ঐ বাস মালিকের ও অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।অধিক মুনাফার জন্য দুজন ড্রাইভার না রেখে একজন কে দিয়ে দুই জনের কাজ করানো আইন বিরোধী।
এই দেশে রোগ হলে/দুর্ঘটনা ঘটে গেলে মেধাবী,উচ্চশিক্ষিত,নিরীহ,তুলনামূলকভাবে ওনেষ্ট ডাক্তার সমাজকে আইন কানুনের কঠিন কঠোর বেড়াজালে বাঁধবার যেই আপ্রান চেষ্টা স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রী,সুশীল সমাজ,মিডিয়া,প্রশাসন ক্যাডার করে তার একশত ভাগের এক ভাগ ও যদি ভেজাল নিয়ন্ত্রন,দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রনে সম্মিলিতভাবে করতেন তাহলে দেশের মানুষের রোগ অর্ধেক কমে যেত!দুর্ঘটনা ঘটত না!
হাসপাতালে,ডায়াগনষ্টিক সেন্টার,ডাক্তার চেম্বারে যেতে হতো না আর ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এত কুচক্র ও করা লাগত না।
আমরা যদি সত্যিকারেই জনগনের ভালো চাই তাহলে সামাজিক নিরাপত্তা জরুরী।প্রতিটি মানুষকে একদিকে আইনের আওতায় আনা অপরদিকে ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার থাকতে হবে।বিচার হীনতার সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
শিক্ষা যতটাই জরুরী,শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রন এবং নীতিশিক্ষা ও ততই জরুরী।
কেবল পাঠ্যপুস্তক টুকে প্রশ্ন ফাঁস করে পাস করে বাপের টাকায় উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বাপের আরো টাকা ঢেলে যখন আমি দেশের সর্বোচ্চ সম্মানের চাকুরীটির চেয়ার দখল করতে দি,সেই দেশ কি করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে???
সরকারী চাকুরেগন আবার বেতন বৃদ্ধির চরম অপমান বহুবার সয়েছে।অথচ অনেকে জানেই না জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান এবং সদস্যগন নামমাত্র যোগ্যতা নিয়েও অনেকে যথাক্রমে পঞ্চান্ন হাজার টাকা এবং একচল্লিশ হাজার টাকা কেবল সরকারী ভাতাই পাচ্ছেন!কোন পেশাজীবী সংগঠনে নির্বাচিত ব্যক্তি কোন ভাতা পান না।তাই সংগঠনের স্বার্থ বাদ দিয়ে সে নেতৃত্ব বিক্রি করে স্বার্থ ক্রয় করেন!কজন ডাক্তার কিংবা সরকারী কলেজের শিক্ষক কত বছর চাকরী করার পর সরকার থেকে ঐ চেয়ারম্যানের সমান পরিমান বেতন পান???
আমার বক্তব্য পরিষ্কার!সুযোগ সুবিধা এবং জবাবদিহিতার সমবন্টন।যদি জন প্রশাসন ক্যাডারের সর্বকনিষ্ঠ অফিসার (এসি ল্যান্ড) গাড়ী পায় তবে স্বাস্থ্য ক্যাডারের সর্বকনিষ্ঠ অফিসার সহকারী সার্জন ও গাড়ী পাবে।যদি ঐ অফিসারটি একদিন জনপ্রশাসন সচিব হয় তবে ডাক্তারটি ও স্বাস্থ্য সচিব হবে!
যদি চিকিৎসকের ভুল নিয়ে আইন হয়,ফৌজদারী অপরাধ হয় তবে বিচারকের ভুল ও ফৌজদারী অপরাধ হবে।
নিয়ম না মেনে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার নির্মম খেলা খেলে জনপদকে শশ্মান বানিয়ে ও ড্রাইভাররা ধর্মঘট করছে।মিডিয়া মৃদুস্বরে সেই খবর প্রচার করছে।কারন দেশের যাত্রী ইন্ডিয়া,সিঙ্গাপুরের বাস ট্রেনে চলার নিয়ম নাই।
আর দেশের রোগী ইন্ডিয়া,সিঙ্গাপুর যাওয়ার সুযোগ আছে বলে বিদেশী টাকায় পকেট ভারী করে দেশের মিডিয়া দেশের ডাক্তারদের জীবন অতিষ্ট করে স্বাস্থ্যখাত ধ্বংস করে!!
সব পেশার লোক নিয়েই বাংলাদেশ।একটু সততা একটু দেশপ্রেম থাকলে এত বেশী লোকসান হবে না!এত ছোট জীবনে দেশ দশের ক্ষতি করে কত বড় হতে চাই????
তার থেকে দেশটাকে ভালবেসে একবার না হয় আমরা একটু ছোট ই হই !!!!
ডা.শিরিন সাবিহা তন্বী । দেশের জনপ্রিয় কলামিস্ট। প্রতিভাবান কথাশিল্পী। মেডিকেল অফিসার, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পেশাজীবী নেতা।