বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেনো ভাই, মায়ের চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’ লাইন দুটো যতটা না মধুর তার থেকেও ‘মা’ শব্দটি অধিকতর মধুর। কবি-সাহিত্যিকরা আজ পর্যন্ত ‘মা’ শব্দটির যতটুকু মধু চিত্রায়িত করেছেন তা যথেষ্ট নয় বা প্রকৃত মধু চিত্রায়িত করা সম্ভবও নয়। মাত্র একটি অক্ষরের শব্দ ‘মা’। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দ। অর্থে অনবদ্য। শ্রুতিতেও মধুময়। মা ডাক শুনলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়াবী সুন্দর এক মুখ। যে মুখে লেগে থাকে স্নেহ, মমতা আর ভালোবাসা। মা শব্দের মধ্যেই পৃথিবীর সব ভালোবাসা, আবেগের সম্মিলন। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় তার মা।
পৃথিবীর সব মানুষের মনে রয়েছে মায়ের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। কেননা সম্পর্কের বেড়াজাল ছিন্ন করে সবাই দূরে সরে যেতে পারে। চলে যেতে পারে প্রেমাবেগের বন্ধনের প্রিয়সীও। কিন্তু মা’র স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন কখনই ছিন্ন হওয়ার নয়। মা এমন একজন, যিনি সারাজীবন সন্তানকে বুকের মধ্যে আগলে রাখেন। আজ আমাদের মা দিবস। মা দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেয়া।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মে মাসের দ্বিতীয় রোববার হিসেবে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে যথাযোগ্য মর্যাদায়।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো আলোচনা অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রাসহ মা’কে সম্মান জানানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি পালন করবেন। দিবসটি উপলক্ষে ইতোমধ্যে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান ও নাটক সম্প্রচারিত হচ্ছে। জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়ে মায়ের প্রতি ভালোবাসার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।
অনেকেই বলছেন, মায়ের প্রতি ভালোবাসার জন্য আলাদা কোন দিবসের প্রয়োজন নেই। প্রতিটি মুহুর্ত প্রতিটি সময়ই মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়। মা হচ্ছে এমন একটি শব্দ যে শব্দটি এক স্বর্গীয় পুণ্যতায় হৃদয়-মনকে অমিয় সুধায় প্লাবিত করে। ত্রিভুবনের সবচেয়ে মধুরতম শব্দ মা। মায়ের চেয়ে পৃথিবীতে আপন কেউ নাই। তাই মা কে সম্মান জানানোর জন্য শুধু একটি দিন যথেষ্ট নয়।
বছরের প্রত্যেকটা দিনই হোক মা দিবস। জানা যায়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে যেমন ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার নরওয়েতে, মার্চের চতুর্থ রোববার আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাজ্যে এবং বাংলাদেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বের অনেক দেশে কেক কেটে মা দিবস উদযাপন করা হয়।
তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেওয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা। মা দিবসের ইতিহাসে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা আনা জার্ভিসের মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়।
মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচারণা শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মা দিবস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়।