বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র মৃত। এখানে মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, মানুষের ভোটের অধিকার নেই এবং এখানে মানুষের গণতন্ত্রের অধিকার নেই।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ মন্তব্য করেন তিনি।
এরআগে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
মঈন খান বলেন, জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। আজকে এটা উপলব্ধি করতে হবে যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো গণতন্ত্রের জন্য। বাংলাদেশে আজকে সেই গণতন্ত্র মৃত। এটা শুধু আমাদের এবং বাংলাদেশের মানুষের কথা নয়, সারাবিশ্বে যারা গণতন্ত্রকামী মানুষ রয়েছেন- গণতন্ত্রকামী যেসব দেশগুলো রয়েছে এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, তারা সবাই এক বাক্যে একটি কথা বলেছেন- বাংলাদেশ আজকে একদলীয় শাসনে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আওয়ামী লীগের মতো লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আর আমাদের যে কর্মসূচি তা চলমান রয়েছে। এ চলমান কর্মসূচি আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে অব্যাহত রাখবো। এ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।
নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. মঈন খান বলেন, শুধু টিআইবি কেন, কে বলেনি সেটা বলেন? কে বিএনপির কথা রিপোর্ট করে প্রমাণ করেনি যে, বিএনপি এ স্বৈরাচারের একদলীয় শাসক সম্পর্কে যে কথাগুলো বলেছে, সেটা দেশি-বিদেশি সব প্রতিষ্ঠান বলেছে, বিএনপি সত্য কথা বলেছে।
নির্বাচন পরবর্তী পরিকল্পনা কিংবা আন্দোলন কেমন হবে- এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, মূল কথা জিয়াউর রহমানের যে আর্দশ, তিনি দেশকে পুনর্গঠন করেছেন, দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সূচনা করেছেন- আজকে সেটা ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে দেশকে রক্ষা, তিনি যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে আবার মেরে ফেলা হয়েছে। সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করার যে লড়াই, সেই লড়াই চলছে। আর সেই লড়াইয়ের যে বিভিন্ন কর্মসূচি তা আপনাদেরকে (সাংবাদিক) জানানো হয়। পরবর্তী কর্মসূচি যেটা হবে তা আানাদেরকে জানানো হবে।
তিনি বলেন, আমরা এই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারবো। জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার জন্মবার্ষিকীতে আমাদের আজকে প্রতিশ্রুতি হলো, যতদ্রুত সম্ভব লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে দিয়ে এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের সহায়তায় আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো, ইনশাআল্লাহ।
টিআইবি প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, টিআইবি যা বলেছে, সেটা জনমতের প্রতিফলন। আমরা যা বলেছি, সেটাও জনমতের প্রতিফলন। ফলে আমাদের কথা যদি মিলে সেটা একজন আরেকজনকে পছন্দ করার জন্য না। সত্য বলার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র আবারও বলেছে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি- এ বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণমানুষের পক্ষে কথা যে বলবে, আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু আমরা যা বলি, সেটা তো গুরুত্বপূর্ণ। আর জনগণ সরকারের স্বৈরশাসন পছন্দ করে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য সেলিম রেজা হাবিব, খান রবিউল ইসলাম রবি, আমিনুল ইসলাম, ওলামা দলের শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ফখরুল ইসলাম রবিন, সরদার নূরুজ্জামান, ফরহাদ হোসেন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম, ছাত্রদলের তানজিল হাসান ও ওলামা দলের সুলতানা আহমেদ।
এছাড়া পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী মাহবুব আলম ও সাঈদ খান উপস্থিত ছিলেন।