ঢাকা , শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা নেই: জয়

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সম্প্রতি বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক ইথিরাজন আনবারাসনকে দেওয়া একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসবে এবং দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা এ সংক্রান্ত্র বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে।

এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কে দেবে জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘দল টিকে যাবে। ১৯৭৫ পরে যখন বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা কারাগারে ছিল, তখনো দল টিকে গেছে। এটা হচ্ছে আদর্শের দল, দেশের একমাত্র গণতান্ত্রিক দল- যা স্বাধীনতার পূর্বে গণতান্ত্রিকভাবে তৈরি হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘দল তাদের নেতা বের করে নেবে। কিন্তু এখন তারা আমাদের দল নির্মূল করার চেষ্টা করছে।

নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে, তারা আমাদের মন্ত্রীদের খুঁজছে, অনেকে লুকিয়ে আছে, অনেকে বিদেশে চলে গেছেন। ’

দেশে ফিরে দলের নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছা আছে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, এরকম কোনো ইচ্ছা নেই। এটা আমার পরিবারের জন্য তৃতীয় ধাক্কা। যেমন মানুষ, তেমন নেতাই তাদের পাওয়া উচিত।

এখন বাংলাদেশে মব রুল চলছে। সামনে যে নির্বাচন হবে, হয়তো আওয়ামী লীগকে অংশ নিতে দেয়া হবে না। হয়তো বিএনপি-জামাত নির্বাচনে বিজয়ী হবে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আসলে অন্ধকারাছন্ন। ’

অনেকে অভিযোগ করছেন, আওয়ামী লীগের সময়ে অনেক দমন পীড়ন হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে।

এমনকি দুইজনকে সম্প্রতি আট বছর গুম থাকার পরে মুক্তিও দেয়া হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই কিছু ভুল হয়েছে। সরকারের মধ্যে অনেক ব্যক্তি ছিলেন যারা এসব ভুল করেছেন। কিন্তু আমরা সবসময় সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সরকারেই একজন মন্ত্রীর ছেলে, বিশেষ বাহিনীর সদস্য ছিলেন কিন্তু বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য কারাগারে গেছেন (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন)। এটাও ঘটেছে। আমার মা সবসময় ঠিক কাজটা করার চেষ্টা করেছেন। ’

বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যগুলো যেভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে, এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অসন্তোষ এবং তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এটাই আমার এখনকার অনুভূতি। আমি জানি, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় দল, এখনো আমাদের জনসমর্থন সবচেয়ে বেশি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১০-২০ হাজার খুব ক্ষুদ্র অংশ। আপনি জানেন, গণতান্ত্রিক একটি দেশে কোনো দল শতভাগ সমর্থন লাভ করতে পারে না। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ এখনো জনপ্রিয় একটি দল। কিন্তু আমি যখন এসব (ভাঙচুরের) ছবি দেখি, আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি গভীর অসন্তোষ অনুভব করি। এখন যা বাংলাদেশে ঘটছে, তা পাকিস্তানের মতো। ’

তিনি মন্তব্য করেন, ‘একসময় বাংলাদেশের মানুষ পেছন ফিরে তাকিয়ে শেখ হাসিনার ১৫ বছর সময়কে স্বর্ণযুগ বলে মনে করবে। সেই দিন তারা আফসোস করবে, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক হয়ে গেছে। ’

আওয়ামী লীগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ হবে কিনা, জানতে চাওয়া হলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘তারা আওয়ামী লীগকে কখনোই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ হতে দেবে না। ’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা নেই: জয়

আপডেট টাইম : ০৩:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪

দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সম্প্রতি বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া সম্পাদক ইথিরাজন আনবারাসনকে দেওয়া একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসবে এবং দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা এ সংক্রান্ত্র বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে।

এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কে দেবে জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘দল টিকে যাবে। ১৯৭৫ পরে যখন বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা কারাগারে ছিল, তখনো দল টিকে গেছে। এটা হচ্ছে আদর্শের দল, দেশের একমাত্র গণতান্ত্রিক দল- যা স্বাধীনতার পূর্বে গণতান্ত্রিকভাবে তৈরি হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘দল তাদের নেতা বের করে নেবে। কিন্তু এখন তারা আমাদের দল নির্মূল করার চেষ্টা করছে।

নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে, তারা আমাদের মন্ত্রীদের খুঁজছে, অনেকে লুকিয়ে আছে, অনেকে বিদেশে চলে গেছেন। ’

দেশে ফিরে দলের নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছা আছে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, এরকম কোনো ইচ্ছা নেই। এটা আমার পরিবারের জন্য তৃতীয় ধাক্কা। যেমন মানুষ, তেমন নেতাই তাদের পাওয়া উচিত।

এখন বাংলাদেশে মব রুল চলছে। সামনে যে নির্বাচন হবে, হয়তো আওয়ামী লীগকে অংশ নিতে দেয়া হবে না। হয়তো বিএনপি-জামাত নির্বাচনে বিজয়ী হবে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আসলে অন্ধকারাছন্ন। ’

অনেকে অভিযোগ করছেন, আওয়ামী লীগের সময়ে অনেক দমন পীড়ন হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে।

এমনকি দুইজনকে সম্প্রতি আট বছর গুম থাকার পরে মুক্তিও দেয়া হয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই কিছু ভুল হয়েছে। সরকারের মধ্যে অনেক ব্যক্তি ছিলেন যারা এসব ভুল করেছেন। কিন্তু আমরা সবসময় সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সরকারেই একজন মন্ত্রীর ছেলে, বিশেষ বাহিনীর সদস্য ছিলেন কিন্তু বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য কারাগারে গেছেন (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন)। এটাও ঘটেছে। আমার মা সবসময় ঠিক কাজটা করার চেষ্টা করেছেন। ’

বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যগুলো যেভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে, এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সজীব ওয়াজেদ বলছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অসন্তোষ এবং তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এটাই আমার এখনকার অনুভূতি। আমি জানি, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় দল, এখনো আমাদের জনসমর্থন সবচেয়ে বেশি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১০-২০ হাজার খুব ক্ষুদ্র অংশ। আপনি জানেন, গণতান্ত্রিক একটি দেশে কোনো দল শতভাগ সমর্থন লাভ করতে পারে না। আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ এখনো জনপ্রিয় একটি দল। কিন্তু আমি যখন এসব (ভাঙচুরের) ছবি দেখি, আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি গভীর অসন্তোষ অনুভব করি। এখন যা বাংলাদেশে ঘটছে, তা পাকিস্তানের মতো। ’

তিনি মন্তব্য করেন, ‘একসময় বাংলাদেশের মানুষ পেছন ফিরে তাকিয়ে শেখ হাসিনার ১৫ বছর সময়কে স্বর্ণযুগ বলে মনে করবে। সেই দিন তারা আফসোস করবে, কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক হয়ে গেছে। ’

আওয়ামী লীগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ হবে কিনা, জানতে চাওয়া হলে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘তারা আওয়ামী লীগকে কখনোই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ হতে দেবে না। ’