ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারাগারে হবে খালেদা জিয়ার মামলার বিচার

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার বিচার এখন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে তিনি অপর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এই কারাগারে বন্দী আছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানির কয়েকটি ধার্য দিনে হাজির না হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারের এই সিদ্ধান্ত এল। মঙ্গলবার বিকেলে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিরাপত্তার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

দুদক আইনজীবী জানান, এর ফলে বিচারকাজে স্থবিরতা কেটে যাবে। আজ বুধবার থেকেই এখানেই মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।

এই মামলায় বুধবার আদালতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তার আগের দিন এজলাস স্থানান্তরের এ প্রজ্ঞাপন এল। এতদিন মামলাটির শুনানি চলছিল কারাগারের কয়েকশ গজের মধ্যে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কারা অধিদফতরের মাঠে। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান ওই মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে মামলাটির শুনানি নিচ্ছিলেন।

এদিকে কারাগারে আদালত বসিয়ে বিচারের এ সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, তারা সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি’ দেবে।

তবে সিদ্ধান্ত সংবিধান সম্মত বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরো বলেন, আইনেই আছে। কোর্ট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ৯ ধারা পড়লেই সবাই বুঝতে পারবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার ৫ বছরের সাজা হওয়ার পর স্থবির হয়ে যায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার কাজ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, বেগম জিয়ার অসুস্থতা ও আদালতে আসতে অনিহার কারণে এ মামলায় তাকে হাজির করা যায় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে থমকে আছে এ মামলার বিচার কার্যক্রম।

এ প্রেক্ষাপটে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অস্থায়ী আদালত বসিয়ে মামলার বিচার কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলো সরকার।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সেজন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হল।

এতে আরো বলা হয়, বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিশেষ মামলা নং ১৮/২০১৭ এর বিচার কার্যক্রম পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নং ৭ এর অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বে-আইনি হিসেবে দেখছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ধারা ৩৫ মতে এই ধরনের মামলা প্রকাশ্যে হতে হবে। কোনো ধরনের ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে হওয়া যাবে না।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

কারাগারে হবে খালেদা জিয়ার মামলার বিচার

আপডেট টাইম : ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার বিচার এখন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে তিনি অপর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এই কারাগারে বন্দী আছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানির কয়েকটি ধার্য দিনে হাজির না হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারের এই সিদ্ধান্ত এল। মঙ্গলবার বিকেলে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিরাপত্তার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

দুদক আইনজীবী জানান, এর ফলে বিচারকাজে স্থবিরতা কেটে যাবে। আজ বুধবার থেকেই এখানেই মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।

এই মামলায় বুধবার আদালতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তার আগের দিন এজলাস স্থানান্তরের এ প্রজ্ঞাপন এল। এতদিন মামলাটির শুনানি চলছিল কারাগারের কয়েকশ গজের মধ্যে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কারা অধিদফতরের মাঠে। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান ওই মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে মামলাটির শুনানি নিচ্ছিলেন।

এদিকে কারাগারে আদালত বসিয়ে বিচারের এ সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, তারা সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি’ দেবে।

তবে সিদ্ধান্ত সংবিধান সম্মত বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরো বলেন, আইনেই আছে। কোর্ট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ৯ ধারা পড়লেই সবাই বুঝতে পারবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার ৫ বছরের সাজা হওয়ার পর স্থবির হয়ে যায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার কাজ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, বেগম জিয়ার অসুস্থতা ও আদালতে আসতে অনিহার কারণে এ মামলায় তাকে হাজির করা যায় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে থমকে আছে এ মামলার বিচার কার্যক্রম।

এ প্রেক্ষাপটে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অস্থায়ী আদালত বসিয়ে মামলার বিচার কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলো সরকার।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সেজন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হল।

এতে আরো বলা হয়, বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিশেষ মামলা নং ১৮/২০১৭ এর বিচার কার্যক্রম পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নং ৭ এর অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বে-আইনি হিসেবে দেখছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ধারা ৩৫ মতে এই ধরনের মামলা প্রকাশ্যে হতে হবে। কোনো ধরনের ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে হওয়া যাবে না।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান।