ঢাকা , শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা ৪২২ উপজেলায় মিলবে ওএমএসের চাল

পৃথিবীতে আল্লাহর নিদর্শন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মহাবিশ্ব একটি উন্মুক্ত গ্রন্থ। আল্লাহ এ গ্রন্থ পাঠ এবং একে নিয়ে গভীর চিন্তা করতে আহ্বান করেছেন। একে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং ধ্যান করে তাঁর ইবাদত করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আকাশম-লে, ভূম-লে, দিন-রাতের আবর্তনে, সমুদ্রে চলমান মানুষের উপকারকারী জলযানে, আকাশ থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টির পানি অবতীর্ণ করে মৃতপায় ভূমিকে সঞ্জীবিত করেন সে পানিতে, ভূমিতে তিনি যেসব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে, আকাশ ও ভূমিতে ক্রিয়াশীল বাতাস ও মেঘমালার পরিচালনায় বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্য নিহিত আছে প্রভূত নিদর্শন।’ (সূরা বাকারা : ১৬৪)।

যখন প্রকৃতি গরমের তীব্র উত্তাপে ও গ্রীষ্মের প্রচ- খরায় আক্রান্ত হয়, ফলে ভূমি অনুর্বর হয়ে পড়ে, জীবজন্তু কাহিল হয়ে যায়, কূপগুলো পানিশূন্য হয়, গাছপালা শুকিয়ে কাঠ হয়, ফুল ঝরে পড়ে, ফলফলাদি হ্রাস পায়, ফসল মরে যায় এবং স্তন্য দুধশূন্য হয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ পরিস্থিতির পরিবর্তন করেন। তাঁর রহমতকে সামনে রেখে সৌভাগ্যের বাতাস প্রেরণ করেন। মানুষের নৈরাশ্যের পরে বৃষ্টিধারা অবতীর্ণ করেন। তাঁর অনুগ্রহ বিস্তার করেন। তিনিই তো অভিভাবক, প্রশংসিত। তাঁর দয়ায় ভূমি প্রাণ ফিরে পায়। তা নিজের শোভা ধারণ করে। সুসজ্জিত হয়ে ওঠে। জীবনে আসে হাসি। প্রকৃতি পাল্টে গিয়ে হয় রঙিন। ‘বরং তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশম-লী ও পৃথিবী। আকাশ থেকে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেছেন বৃষ্টি; অতঃপর আমি তা দিয়ে মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি, তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে?’ (সূরা নামল : ৬০)।
রহমতের বারিধারা নেমে আসার পর জীবনের রূপ পাল্টে যায়। আশার আলো স্পন্দিত হয়, প্রত্যাশার ফল্গুধারা বয়ে যায়। খুশি, আনন্দ ও সচ্ছলতায় চারপাশ ভরে ওঠে। ‘আল্লাহর অনুগ্রহের ফল সম্বন্ধে চিন্তা করো, কীভাবে তিনি ভূমিকে জীবিত করেন তার মৃত্যুর পর। এভাবেই আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন, কারণ তিনি সর্বশক্তিমান।’ (সূরা রুম : ৫০)।

আল্লাহর অনুগ্রহরাজি অসংখ্য। তাঁর দান অপার অসীম। আল্লাহর এসব দান তাঁর আনুগত্য ও সন্তুষ্টি ছাড়া লাভ করা যায় না, তাঁর নেয়ামত ও দানের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন না করলে তা অর্জন করা যায় না। ‘যদি জনপদের অধিবাসীরা ঈমান গ্রহণ করত ও তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান ও জমিনের সমৃদ্ধি ও বরকতের দ্বার খুলে দিতাম।’ (সূরা আরাফ : ৯৬)। বান্দার ক্ষেত্রে আল্লাহর নীতি ও বিধান হলো, ‘তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো তবে আমি তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব আর যদি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো তবে জেনে রাখ আমার শাস্তি ভয়াবহ।’ (সূরা ইবরাহিম : ৭)।

নেয়ামত ও অনুগ্রহের অকৃতজ্ঞতা দুর্গতি ও দুর্যোগের একটি কারণ। আল্লাহ আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ একটি জনপদের দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, সেটি নিরাপদ ও শান্তিময় ছিল, সব স্থান থেকে সেখানে জীবিকা প্রচুর পরিমাণে আসত, অতঃপর তারা আল্লাহর নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল, ফলে আল্লাহ সে জনপদকে তাদের কৃতকর্মের দরুন ক্ষুধা ও ভয়ের পোশাক পরিয়ে শাস্তি প্রদান করেন।’ (সূরা নাহল : ১১২)।

অতএব, তাঁর নেয়ামত ও অনুগ্রহের শোকর আদায় করুন। তিনি আপনাদের নেয়ামত বৃদ্ধি করবেন। তাঁর দয়া, দান ও করুণার প্রশংসা করুন। তিনি আপনাদের দয়া করবেন। ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তারপর তাঁর কাছে তওবা কর, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বারি বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের আরও শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন।’ (সূরা হুদ : ৫২)।

২১ রবিউস সানি ১৪৪০ হিজরি মসজিদে নববির জুমার খুতবার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর
মাহমুদুল হাসান জুনাইদ

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

পৃথিবীতে আল্লাহর নিদর্শন

আপডেট টাইম : ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মহাবিশ্ব একটি উন্মুক্ত গ্রন্থ। আল্লাহ এ গ্রন্থ পাঠ এবং একে নিয়ে গভীর চিন্তা করতে আহ্বান করেছেন। একে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং ধ্যান করে তাঁর ইবাদত করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয় আকাশম-লে, ভূম-লে, দিন-রাতের আবর্তনে, সমুদ্রে চলমান মানুষের উপকারকারী জলযানে, আকাশ থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টির পানি অবতীর্ণ করে মৃতপায় ভূমিকে সঞ্জীবিত করেন সে পানিতে, ভূমিতে তিনি যেসব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে, আকাশ ও ভূমিতে ক্রিয়াশীল বাতাস ও মেঘমালার পরিচালনায় বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্য নিহিত আছে প্রভূত নিদর্শন।’ (সূরা বাকারা : ১৬৪)।

যখন প্রকৃতি গরমের তীব্র উত্তাপে ও গ্রীষ্মের প্রচ- খরায় আক্রান্ত হয়, ফলে ভূমি অনুর্বর হয়ে পড়ে, জীবজন্তু কাহিল হয়ে যায়, কূপগুলো পানিশূন্য হয়, গাছপালা শুকিয়ে কাঠ হয়, ফুল ঝরে পড়ে, ফলফলাদি হ্রাস পায়, ফসল মরে যায় এবং স্তন্য দুধশূন্য হয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ পরিস্থিতির পরিবর্তন করেন। তাঁর রহমতকে সামনে রেখে সৌভাগ্যের বাতাস প্রেরণ করেন। মানুষের নৈরাশ্যের পরে বৃষ্টিধারা অবতীর্ণ করেন। তাঁর অনুগ্রহ বিস্তার করেন। তিনিই তো অভিভাবক, প্রশংসিত। তাঁর দয়ায় ভূমি প্রাণ ফিরে পায়। তা নিজের শোভা ধারণ করে। সুসজ্জিত হয়ে ওঠে। জীবনে আসে হাসি। প্রকৃতি পাল্টে গিয়ে হয় রঙিন। ‘বরং তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশম-লী ও পৃথিবী। আকাশ থেকে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেছেন বৃষ্টি; অতঃপর আমি তা দিয়ে মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি, তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে?’ (সূরা নামল : ৬০)।
রহমতের বারিধারা নেমে আসার পর জীবনের রূপ পাল্টে যায়। আশার আলো স্পন্দিত হয়, প্রত্যাশার ফল্গুধারা বয়ে যায়। খুশি, আনন্দ ও সচ্ছলতায় চারপাশ ভরে ওঠে। ‘আল্লাহর অনুগ্রহের ফল সম্বন্ধে চিন্তা করো, কীভাবে তিনি ভূমিকে জীবিত করেন তার মৃত্যুর পর। এভাবেই আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন, কারণ তিনি সর্বশক্তিমান।’ (সূরা রুম : ৫০)।

আল্লাহর অনুগ্রহরাজি অসংখ্য। তাঁর দান অপার অসীম। আল্লাহর এসব দান তাঁর আনুগত্য ও সন্তুষ্টি ছাড়া লাভ করা যায় না, তাঁর নেয়ামত ও দানের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন না করলে তা অর্জন করা যায় না। ‘যদি জনপদের অধিবাসীরা ঈমান গ্রহণ করত ও তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান ও জমিনের সমৃদ্ধি ও বরকতের দ্বার খুলে দিতাম।’ (সূরা আরাফ : ৯৬)। বান্দার ক্ষেত্রে আল্লাহর নীতি ও বিধান হলো, ‘তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো তবে আমি তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব আর যদি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো তবে জেনে রাখ আমার শাস্তি ভয়াবহ।’ (সূরা ইবরাহিম : ৭)।

নেয়ামত ও অনুগ্রহের অকৃতজ্ঞতা দুর্গতি ও দুর্যোগের একটি কারণ। আল্লাহ আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ একটি জনপদের দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, সেটি নিরাপদ ও শান্তিময় ছিল, সব স্থান থেকে সেখানে জীবিকা প্রচুর পরিমাণে আসত, অতঃপর তারা আল্লাহর নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল, ফলে আল্লাহ সে জনপদকে তাদের কৃতকর্মের দরুন ক্ষুধা ও ভয়ের পোশাক পরিয়ে শাস্তি প্রদান করেন।’ (সূরা নাহল : ১১২)।

অতএব, তাঁর নেয়ামত ও অনুগ্রহের শোকর আদায় করুন। তিনি আপনাদের নেয়ামত বৃদ্ধি করবেন। তাঁর দয়া, দান ও করুণার প্রশংসা করুন। তিনি আপনাদের দয়া করবেন। ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তারপর তাঁর কাছে তওবা কর, তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বারি বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের আরও শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন।’ (সূরা হুদ : ৫২)।

২১ রবিউস সানি ১৪৪০ হিজরি মসজিদে নববির জুমার খুতবার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর
মাহমুদুল হাসান জুনাইদ