বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ গণমাধ্যম পর্ব শেষ করেই তড়িঘড়ি বেরিয়ে গেলেন ব্রিটিশ কোচ স্টিভ কুপার; বিবেকানন্দ যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের (সল্টলেক স্টেডিয়াম) পাশেই অনুশীলনে নামতে প্রস্তুত শিষ্যরা। শেষ যুদ্ধে সামর্থ্যরে সবটুকু দেয়ার রণকৌশল রপ্ত করাতে হবে। কেননা সল্টলেক স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ যুবাদের বিপক্ষে জোয়েল, অ্যান্ডারসন, ম্যাকার্ন, গুয়েচি, ব্রুয়েস্টার, হাডসন, গিবসন, ফডেনদের আজ রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হতে যাওয়া যুদ্ধ শুধু অনূর্ধ্ব-১৭ বয়স পর্যায়ে ফুটবল বিশ্বের অধিপতি হওয়ার নয়, প্রতিশোধের আগুন নেভানোরও। গত মে মাস আগে স্পেনের কাছে অনূর্ধ্ব-১৭ ইউরোর ফাইনাল হেরেছিলেন ব্রিটিশ যুবারা; ২-২ গোলে ম্যাচ শেষে টাইব্রেকারে স্প্যানিশদের জয় ৪-১।
শুটআউটে গোল করতে ব্যর্থ ছিলেন জোয়েল ল্যাটিবেউদিয়েরে; তার নেতৃত্বে ভারতে ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলছে ইংল্যান্ড। কাল সল্টলেক স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যম পর্বে জোয়েল টেনে আনলেন ইউরো ফাইনাল, ‘সেদিন শুটআউটে আমি গোল করতে পারিনি। আমরা অতীত ভুলে নতুন শুরু করেছি, আমাদের সামনে বিশ্বসেরা হওয়ার সুযোগ, কেন কাজে লাগাব না।’ শিষ্যদের নৈপুণ্যে খুশি কোচ স্টিভ কুপার, ‘ওরা দারুণ খেলছে, যেভাবে চাচ্ছি সেভাবে হচ্ছে। আমি চাই ছেলেরা ফাইনাল শেষে ট্রফি উঁচিয়ে ধরুক।’ যুব ইউরো ফাইনাল খেলা দলটিই খেলছে বিশ্বকাপ; ফলে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাদের। তারপরও সেমিফাইনালে ২-১ গোলে ব্রাজিলকে হারালেও নিজেদের ফেভারিট বলেননি না কুপার, ‘বিশ্বকাপ ফাইনালের ভিন্ন চাপ থাকবে।’ প্রতিপক্ষ স্পেনের দুই-তিনজন খুব ভালো ফুটবলার থাকলেও তাদের নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা নেই তার, ভাবনা গোটা স্পেনকে নিয়ে। কেননা হাতছানি বিশ্বসেরা হওয়ার।
১৯৬৬ সালের পর বড়রা আর বিশ্বকাপ ফাইনালেও উঠতে পারেনি; যুবারা ইউরোপ সেরা হয়েছে ২০১০ ও ২০১৪ সালে। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে প্রথম ফাইনালে উঠে ট্রফি নিয়েই ফিরতে চান জোয়েলরা। স্প্যানিশরা চায় বড়দের দেখানো পথ ধরে হাঁটতে! ২০০৮ ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জাভি, ইনিয়েস্তারা; ২ বছর পর বিশ্বকাপও জিতেছিলেন তারা। সে লক্ষ্য পরিষ্কার বলে দিলেন স্প্যানিশ কোচ সান্টিয়াগো ড্যানিয়া, ‘বড়রা ইউরো ও বিশ্বকাপ জিতেছিল পরপর; এ দলের সামনেও সুযোগ। আলভারো, ম্যাথিউ জাউমে, বেইতা, আবেল রুইজ, সার্জিও গুইজ, মিরান্ডা, বেইতা, পামপিনদের অনুপ্রেরণা বড়দের সে সাফল্য। শিষ্যদের প্রতি সান্টিয়াগোর নির্দেশনা, ‘ইতিহাস হওয়ার সুযোগ, সেরাটা খেল। আবহাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই। মানিয়ে নিতে পারায় টুর্নামেন্টে ভালো ফুটবল খেলছে। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারাতেও প্রস্তুত।’ তবে যে দলে রিয়ান ব্রুয়েস্টারের মতো প্রতিভাবান ফুটবলার আছেন, তাদের বিপক্ষে যে পরিকল্পিতভাবে খেলতে হয় জানেন স্পেন কোচ, ‘ব্রুয়েস্টার খুব ভালো খেলছে, ও একাই ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে। এরপরও শুধু তাকে ঠেকাতে না, পুরো দলের বিপক্ষে ভালো খেলার রণকৌশল সাজাচ্ছি।’ জেতার জন্য বল নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ভাবছেন না তিনি। সেমিফাইনালে মালির বিপক্ষে বল পজিশন ৫০-৫০ হলেও স্পেন জিতেছে ১-০ গোলে। তবে ফাইনালে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তারা। কেনর ব্যাখ্যা সান্টিয়াগোর, ‘নিজেদের পায়ে বল থাকলে গোলের সুযোগ বাড়বে, আবার গোল হজমের সম্ভাবনা কমবে। বল পায়ে থাকলে যা ইচ্ছা করা যায়।’
কিন্তু চাইলেও কি প্রতিপক্ষ সহজে ছাড় দেবে? ব্রিটিশদের সামনেও যে ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা। দল দুইটি কখনোই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ জিতেনি; স্পেন তিনবার রানার্সআপ হলেও ব্রিটিশরা ফাইনালই খেলছে এবারই প্রথম। স্পেন হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও পরাশক্তি ব্রিটিশ যুবারা বীরদর্পে ফাইনাল মঞ্চে। ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে অল ইউরোপিয়ান ফাইনালও হবে প্রথম। সল্টলেক স্টেডিয়াম বরণ করবে নতুন চ্যাম্পিয়ন; ইংল্যান্ড না স্পেন, সেটি কোন দেশ দেখা যাবে আজ রাতে।