ম্যাচের শুরুতেই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল চোটজর্জর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। তাকে ছাড়াই ফ্রান্সকে ভূপাতিত করে সতীর্থরা সাফল্য এনে দিতে পারবেন। এমন বিশ্বাস ছিল পর্তুগাল অধিনায়কের। রোববার রাতে ফাইনালে বদলি হিসেবে নামা লিলের স্ট্রাইকার এদেরের গোলে ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপসেরার মুকুট জেতে পর্তুগাল। দেশের হয়ে একটি শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ফাইনাল খেলতে নামা রোনাল্ডোকে চোট নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হয় ২৫ মিনিটে। ম্যাচ শেষে রোনাল্ডোর মুখে হাসি, ‘আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থেকেছি। সেই ২০০৪ থেকে। আমি ঈশ্বরের কাছে আরেকটি সুযোগ পাওয়ার প্রার্থনা করেছিলাম। পর্তুগালের মানুষের এটা প্রাপ্য। আমাদের খেলোয়াড়দের প্রাপ্য।’ ইউরো জয়ে পর্তুগালের প্রধান ভরসা ছিলেন রোনাল্ডোই। চোট নিয়ে তাকে মাঠ ছাড়তে হওয়ার পর অনেকেই হয়তো মনে করেছিলেন, পর্তুগাল আর পারবে না। কিন্তু রোনাল্ডো কখনোই বিশ্বাস হারাননি। ‘দুর্ভাগ্যবশত, আমার জন্য ম্যাচটা ভালোভাবে যায়নি। প্রথমদিকেই চোট পাই। কিন্তু সতীর্থদের ওপর আমার আস্থা ছিল। তাদের মান ও সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় ছিল না আমার। একই সঙ্গে জয়ের জন্য আমাদের কোচের কৌশলও কাজে লেগেছে,’ বলেছেন পর্তুগাল অধিনায়ক।
২০০৪ সালে দেশের মাটিতে গ্রিসের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল পর্তুগালের। সেই ম্যাচের শুরুর একাদশে খেলা রোনাল্ডোর বয়স ছিল তখন ১৯ বছর। শেষ পর্যন্ত দেশকে শিরোপা জেতাতে পেরে গর্বিত রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা ফরোয়ার্ড। বলেছেন, ‘আমরা ফ্রান্সকে হারিয়েছি। আমি উচ্ছ্বসিত। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলোর একটি। সব সময় বলে এসেছি, আমি জাতীয় দলের হয়ে একটি শিরোপা জিততে এবং ইতিহাস গড়তে চাই। শেষ পর্যন্ত সেটা পেরেছি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, দিনটা আমাদের জন্য ভালো গেছে।’ এদিকে মাঠের বাইরে থেকে অধিনায়ক সতীর্থদের জুগিয়েছেন আত্মবিশ্বাস। পর্তুগালকে ইউরোর শিরোপা জেতানো গোল এদেরই করতে পারেন বলে নাকি ম্যাচের আগেই বলেছিলেন রোনাল্ডো। ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনাল জিততে রোনাল্ডোর ওপরই ভরসা করেছিল পর্তুগাল। দলের সেরা তারকা ২৫ মিনিটে চোট নিয়ে চোখের জলে মাঠ ছাড়েন। এদের জানান, রোনাল্ডো তাকে বলেছিলেন যে, জয়সূচক গোলটি তিনিই করতে পারেন। ২৮ বছর বয়সী এদের অবশ্য গোলের কৃতিত্ব পুরো দলকে দিয়েছেন। ‘এ গোলের জন্য পুরো দল কঠোর পরিশ্রম করেছে।’ বদলি হিসেবে নেমে ইউরোর ফাইনালে গোল করা ষষ্ঠ খেলোয়াড় এদের। এর আগে এই কীর্তি গড়েন জার্মানির অলিভার বিয়েরহফ, ফ্রান্সের সিলভাঁ উইলটর্ড ও ডেভিড ত্রেজেগুয়ে এবং স্পেনের হুয়ান মাতা ও ফার্নান্দো টরেস। এদের বলেন, ‘অভিনন্দন পাওয়াটা দারুণ। আমি জানতাম যে, আমার সুযোগ আসতে পারে। কোচ আমার মান সম্পর্কে জানতেন। তিনি আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন।’ ওয়েবসাইট।