ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণে চাহিদাপত্র তৈরি করছে সরকার

বাংলাদেশের কর্মীদের অনেকই মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে গিয়ে কাজ পাচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন দেশে সর্বনিম্ন কত বেতনে বাংলাদেশি কর্মীরা যাবে, সেটির একটি চাহিদাপত্র তৈরির বিষয়ে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সে‌মিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর যৌথভাবে আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাক।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘এ বছর আমাদের বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ১১ লাখ হয়ে গেছে। অর্থবছর হিসাব করলে এবং মালয়েশিয়ায় ভালোভাবে যাওয়া শুরু হয়ে গেলে ১৫ থেকে ১৬ লাখ কর্মী হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় থেকে এসেসমেন্ট করা হচ্ছে। কোনও কোনও দেশে কমপক্ষে কত বেতন হলে ডিমান্ড নোট গ্রহণ করবো। আমরা একটা ফিগারে আসবো।’

এ সময় মন্ত্রী সৌদিতে বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্য দেশের কর্মীদের বেতনের যে পার্থক্য তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সৌদিতে আমাদের কর্মীরা পান ৮০০ রিয়াল আর অন্যান্য দেশের কর্মীরা পান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রিয়াল। এখানে একটা বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, এটা বিরাট দায়িত্ব।’

অভিবাসন ব্যয় প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘অভিবাসনটা ওয়ান ওয়ে প্রসেস না। দুই পক্ষ থেকে এটা হয়। কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যে দেশে কর্মী পাঠাচ্ছি সেখানে কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আমার লক্ষ্য মানুষ পাঠানো। অনেক ক্ষেত্রে ন্যায়পরায়ণ না হলেও আমাদের হজম করে নিতে হয়। আমাদের মানুষদের তো যেতে হয়। এটাও কিন্তু আমাদের হিসাব করতে হবে।’

তাহলে কী সরকার বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় মেনে নিচ্ছে– এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘বাধ্য হয়ে না। এটা ওই দেশের যে সিস্টেম আছে, তার সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হচ্ছে। এরমধ্যেই অন্যায় যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।’

মন্ত্রী মালয়েশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় আমাদের এমওইউ মোতাবেক খরচ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি শুনছি মালয়েশিয়ায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা নিচ্ছে।’

মালয়েশিয়ায় যে পরিমাণ কর্মী যাচ্ছে তার চেয়ে প্রায় ২০ গুণ কর্মীকে ভুয়া মেডিক্যাল করানো হচ্ছে– এ বিষয়ে সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে যেসব রিক্রুট এজেন্সি ভুয়া মেডিক্যাল ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব লাইসেন্স বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

যৌথভাবে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সে‌মিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাদক।

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম, বোয়েসেল এমডি ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকায় নিযুক্ত ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন ড. ব্রেন্ড স্পেনিয়ের, আইওএম’র সিনিয়র পলিসি এডভাইজার ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ব্র্যাডকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক সাফি রহমান খান, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান, বাংলাদেশে আইওএম চিফ অব মিশন আব্দুস সাত্তার ইসব প্রমুখ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণে চাহিদাপত্র তৈরি করছে সরকার

আপডেট টাইম : ০৬:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের কর্মীদের অনেকই মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে গিয়ে কাজ পাচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন দেশে সর্বনিম্ন কত বেতনে বাংলাদেশি কর্মীরা যাবে, সেটির একটি চাহিদাপত্র তৈরির বিষয়ে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সে‌মিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর যৌথভাবে আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাক।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘এ বছর আমাদের বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ১১ লাখ হয়ে গেছে। অর্থবছর হিসাব করলে এবং মালয়েশিয়ায় ভালোভাবে যাওয়া শুরু হয়ে গেলে ১৫ থেকে ১৬ লাখ কর্মী হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় থেকে এসেসমেন্ট করা হচ্ছে। কোনও কোনও দেশে কমপক্ষে কত বেতন হলে ডিমান্ড নোট গ্রহণ করবো। আমরা একটা ফিগারে আসবো।’

এ সময় মন্ত্রী সৌদিতে বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্য দেশের কর্মীদের বেতনের যে পার্থক্য তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সৌদিতে আমাদের কর্মীরা পান ৮০০ রিয়াল আর অন্যান্য দেশের কর্মীরা পান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রিয়াল। এখানে একটা বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, এটা বিরাট দায়িত্ব।’

অভিবাসন ব্যয় প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘অভিবাসনটা ওয়ান ওয়ে প্রসেস না। দুই পক্ষ থেকে এটা হয়। কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যে দেশে কর্মী পাঠাচ্ছি সেখানে কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আমার লক্ষ্য মানুষ পাঠানো। অনেক ক্ষেত্রে ন্যায়পরায়ণ না হলেও আমাদের হজম করে নিতে হয়। আমাদের মানুষদের তো যেতে হয়। এটাও কিন্তু আমাদের হিসাব করতে হবে।’

তাহলে কী সরকার বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় মেনে নিচ্ছে– এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, ‘বাধ্য হয়ে না। এটা ওই দেশের যে সিস্টেম আছে, তার সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হচ্ছে। এরমধ্যেই অন্যায় যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।’

মন্ত্রী মালয়েশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় আমাদের এমওইউ মোতাবেক খরচ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি শুনছি মালয়েশিয়ায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা নিচ্ছে।’

মালয়েশিয়ায় যে পরিমাণ কর্মী যাচ্ছে তার চেয়ে প্রায় ২০ গুণ কর্মীকে ভুয়া মেডিক্যাল করানো হচ্ছে– এ বিষয়ে সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে যেসব রিক্রুট এজেন্সি ভুয়া মেডিক্যাল ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব লাইসেন্স বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

যৌথভাবে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সে‌মিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাদক।

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম, বোয়েসেল এমডি ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকায় নিযুক্ত ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন ড. ব্রেন্ড স্পেনিয়ের, আইওএম’র সিনিয়র পলিসি এডভাইজার ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ব্র্যাডকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক সাফি রহমান খান, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান, বাংলাদেশে আইওএম চিফ অব মিশন আব্দুস সাত্তার ইসব প্রমুখ।