ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্জনের সিঁড়ি বেয়ে ৬৮ বছরে আওয়ামী লীগ

আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন এবং বাংলাদেশ নামক ভূ-খণ্ডের অভ্যুদয় ঘটে।

১৯৪৯ সালের আজকের এই দিনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল হকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যদিও প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠনের নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে পরিবেশ বিবেচনায় ‘‘আওয়ামী লীগ” নামে সংগঠনটি কার্যক্রম শুরু করে।

১৯৫২ সালের ‘‘মায়ের ভাষা বাংলা” প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেছিল। ’৬২ সালে গণবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬ সালের ৬-দফার আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

’৭০-এর নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করলে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানিদের এদেশ থেকে তাড়িয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উপহার দেয়।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা উত্তর সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই কুচক্রী মহল, স্বাধীনতা বিরোধীচক্র ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। জেলখানায় জাতীয় চারনেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবউদ্যামে সংগঠিত হন। তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

২০০৮ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে ‘রূপকল্প ২০২১’-এর আলোকে মধ্যম আয়ের সুখী-সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখান এবং ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সূর্যোদয়ের ক্ষণে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপি দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

এ দিন সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সকাল পৌনে ৯টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা উন্মুক্ত ও বেলুন উড়িয়ে সকালে কর্মসূচির সমাপ্তি হবে।

বেলা আড়াইটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্জনের সিঁড়ি বেয়ে ৬৮ বছরে আওয়ামী লীগ

আপডেট টাইম : ০৭:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০১৬

আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন এবং বাংলাদেশ নামক ভূ-খণ্ডের অভ্যুদয় ঘটে।

১৯৪৯ সালের আজকের এই দিনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুল হকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যদিও প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠনের নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে পরিবেশ বিবেচনায় ‘‘আওয়ামী লীগ” নামে সংগঠনটি কার্যক্রম শুরু করে।

১৯৫২ সালের ‘‘মায়ের ভাষা বাংলা” প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেছিল। ’৬২ সালে গণবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬ সালের ৬-দফার আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

’৭০-এর নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করলে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানিদের এদেশ থেকে তাড়িয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উপহার দেয়।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা উত্তর সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই কুচক্রী মহল, স্বাধীনতা বিরোধীচক্র ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। জেলখানায় জাতীয় চারনেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবউদ্যামে সংগঠিত হন। তারই ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

২০০৮ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে ‘রূপকল্প ২০২১’-এর আলোকে মধ্যম আয়ের সুখী-সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখান এবং ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সূর্যোদয়ের ক্ষণে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপি দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

এ দিন সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সকাল পৌনে ৯টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা উন্মুক্ত ও বেলুন উড়িয়ে সকালে কর্মসূচির সমাপ্তি হবে।

বেলা আড়াইটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।